প্যাভিলিয়নের সামনে সাজানো বইয়ের সারি থেকে পছন্দের লেখক আসিফ এন্তাজ রবির একটি বই হাতে তুলে নিলেন সায়েম আহমেদ নামে এক তরুণ। দাম জিজ্ঞেস করতেই প্যাভিলিয়ন সংশ্লিষ্ট একজন জানালেন ৭০০ টাকা। তবে এর উপর থাকছে ডিসকাউন্ট। সেটি শুনে বই হাত থেকে রেখে অন্যদিকে ধীর পায়ে হাঁটা শুরু করলেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সায়েম। একটু এগিয়ে গিয়ে কারণ জানতেই স্মিত হেসে জানালেন, বইটি কেনার ইচ্ছে আছে। তবে ধারণা থেকে দাম একটু বেশি চাইলো। আজ হবে না, অন্য একদিন এসে কিনবো।
বইমেলায় আগত অনেকেই বইয়ের বাড়তি মূল্যে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়ছেন। সে কারণে কেউ বই কেনার ক্ষেত্রে একটু হিসেবিই হচ্ছেন, কেউ অনেক কেনার পরিকল্পনা বাদ দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বইটি কিনছেন। অবশ্য সচ্ছল বইপ্রেমীরা বাড়তি দামেই কিনছেন পছন্দের বই।
কাগজের বাড়তি মূল্যের পাশাপাশি আনুষঙ্গিক খরচ বৃদ্ধি পাওয়া এবার বইয়ের দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি। আয়-ব্যয়ের সমন্বয় করতে বাধ্য হয়েই এবার দাম বাড়াতে হয়েছে লেখক প্রকাশকদের।
গত বছর তুলনায় দাম কেমন বেড়েছে? ঐতিহ্য প্রকাশনীর মালিক পক্ষের আশরাফুল ইসলাম কাজলকে এমন প্রশ্ন করতে জানালেন, প্রতি ফর্মায় কাগজের দাম বেড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা।
বিজ্ঞাপন
সেভাবেই বইয়ের দাম সমন্বয় করতে হয়েছে। ‘বাড়তি দামে কি বিক্রি কমেছে?’-পাঠকেরা দাম বেশি কেন জানতে চান, বিস্তারিত বলার অনেকেই বুঝছেন এবং বেশি দাম দিয়েই কিনছেন।
তার এই মন্তব্যের সত্যতা পাওয়া গেল একটু পরেই। একগাদা বই হাতে আসিফ-জাহরা যুগলকে হেঁটে মূল ফটকের দিকে যেতে দেখা গেল। আসিফ জানালেন, বাতিঘর প্রকাশনী থেকে চারটি বই কিনেছি। সব মিলিয়ে এগারশো টাকার মতো পড়েছে। অন্য সময়ে ৮০০ থেকে ৯০০ তেই এগুলো পাওয়া যেতো। খুব প্রয়োজন ছিল বলে এই দামেই বই কিনতে হলো। গতকাল শনিবারও বইমেলা শুরু হয়েছিল সকাল ১১টা থেকে। অনেকেরই ছুটির দিন ছিল বলে মেলায় ভিড় ছিল বেশ। বাংলা পঞ্জিকায় মাঘ মাস চললেও শীতের প্রভাব ছিল না খুব একটা। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের বেশির ভাগই মেলায় এসেছিলেন সাল-সোয়েটার ছাড়াই।
মেলার চতুর্থ দিনে প্রথম একশোর বই প্রকাশিত হয়েছে। এইদিনে নতুন বই এসেছে ১১৩টি, ৪ দিন মিলিয়ে সর্বমোট নতুন প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৩০-এ। লেখক বলছি মঞ্চে লেখকদের নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা কিংবা মূলমঞ্চে আলোচনা সভা-বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মেলাকেন্দ্রিক নিয়মিত বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমগুলো গতকালও সুন্দরভাবেই সম্পন্ন হয়েছে।
সোর্স : মানবজমিন