এ বছর জানুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের ৩৫ ভাগই মোটরসাইকেল আরোহী। ওই মাসে সড়কে ৫৯৩টি দুর্ঘটনায় ৫৮৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮৯৯ জন। এর মধ্যে ২১৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২০৫ জন। আহত হয়েছেন ১১৪ জন। শনিবার বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি সড়ক দুর্ঘটনার এ তথ্য জানিয়েছে।
সংগঠনটি জানায়, জানুয়ারিতে গড়ে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় রেলপথে ৪৪টি দুর্ঘটনায় ৪৬ জন নিহত ও ৭৮ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ১৩টি দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত, ১ জন আহত ও ৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌপথে ৬৫০টি দুর্ঘটনায় ৬৪২ জন নিহত এবং ৯৭৮ জন আহত হয়েছেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর
পর্যালোচনা করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে সংগঠনটি। যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানায়, ২০২২ সালের জানুয়ারির চেয়ে চলতি বছর এ মাসে সড়কে দুর্ঘটনা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ ও আহতের হার ১০ দশমিক ০৪ শতাংশ বেড়েছে। তবে প্রাণহানি ৪ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন চালক। তাদের সংখ্যা ১৫৩। এছাড়া ৮৪ পথচারী, ৮০ নারী, ৪৬ শিশু, ৪৬ শিক্ষার্থী ও ২৬ পরিবহণ শ্রমিক মারা গেছেন। এই এক মাসে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন ১১ জানুয়ারি। সেদিন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান ৩০ জন। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা হয় ১৭ জানুয়ারি, ৩৫টি। সেদিন মৃত্যু হয় ২০ জনের। দুর্ঘটনার আক্রান্ত যানবাহনের দিক থেকে মোটরসাইকেলের পর রয়েছে পণ্যবাহী গাড়ি। ট্রাক, পিকাপ, কভার্ডভ্যান ও লরির মতো পণ্যবাহী যানবাহনের কারণে ২৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ ক্ষেত্রে রিকশা-ইজিবাইক, ১২ দশমিক ৫ শতাংশ বাস, ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ নসিমন-করিমন-মাহিন্দ্র-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ অটোরিকশা এবং ৫ দশমিক ০২ শতাংশ প্রাইভেটকার বা মাইক্রোবাসসংশ্লিষ্ট।
সংগঠনটির মতে, আঞ্চলিক মহাসড়কে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। মোট দুর্ঘটনার ৩৮ দশমিক ৬১ শতাংশই হয়েছে এসব সড়কে। দুর্ঘটনার ২৯ দশমিক ৫১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে এবং ২৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ হয়েছে ফিডার রোডে। ঢাকা মহানগরেও দুর্ঘটনার হার কম নয়। মোট দুর্ঘটনার ৫ দশমিক ২২ শতাংশ সংঘটিত হয়েছে রাজধানীতে। চট্টগ্রাম মহানগরে সেটি ১ দশমিক ১৮ শতাংশ আর ১ দশমিক ০১ শতাংশ দুর্ঘটনা হয়েছে রেলক্রসিংয়ে। যাত্রীকল্যাণ সমিতি জানায়, জানুয়ারিতে ৫১ দশমিক ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে পথচারী গাড়ি চাপা পড়েছেন। ২২ দশমিক ২৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১২ দশমিক ৪৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ১১ দশমিক ৯৭ শতাংশ বিবিধ কারণে, ১ দশমিক ০১ শতাংশ ক্ষেত্রে ট্রেনের সঙ্গে গাড়ির ধাক্কা এবং শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ ক্ষেত্রে দায়ী যানবাহনের চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে যাওয়া। যাত্রীকল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী বেপরোয়া গতি, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, ফিটনেসহীন যানবাহনের অবাধে চলাচল, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, ছোট যানবাহনের পরিমাণ বৃদ্ধি, রাস্তার পাশে হাটবাজার ইত্যাদি দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
সোর্স : যুগান্তর