আওয়ামী লীগের নেতারা সাধারণত যা বলেন, তার বেশিরভাগই মিথ্যা কথা। মিথ্যা বলতে বলতে পরিস্থিতিটা এমন দাঁড়িয়েছে যে, কোনো কোনো সময় মনে হয় তারা কাণ্ডজ্ঞানও হারিয়ে ফেলছেন। যেমন, শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের জন্য তারা চিরাচরিত অভ্যাস মতো জিয়াউর রহমানকে গাল দিয়ে থাকেন এবং হত্যাকাণ্ডের জন্য সাধারণত জিয়াকেই দায়ী করেন। আর একই মিথ্যা কথা এতবার বলেন যে, বিএনপিই বা আর কত প্রতিবাদ করবে! তারা, এখন মনে হয় প্রতিবাদ করা ছেড়ে দিয়েছেন। আর জিয়াউর রহমানকে দায়ী করার বক্তৃতায় তাদের এমন জোশ আসে যে, কী ইতিহাস, কী সত্য ঘটনা, সে সব কিছুই তারা উত্তেজনার বশে একেবারেই ভুলে যান।
এই সেদিন ওবায়দুল কাদের টেনে টেনে বলছিলেন যে, শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের নৃশংস হত্যাকা-ের জন্য ‘সেনাপতি’ জিয়াউর রহমান দায়ী। তার এই বক্তব্য থেকে অন্তত একটা জিনিস প্রমাণিত হলো যে, শেখ মুজিবর রহমানের হত্যাকা-ের প্রতিরোধ করার দায় তৎকালীন সেনাপতির ছিল। কিন্তু সেসময় সেনাপতি যে ছিলেন, জেনারেল এ কে এম শফিউল্লা, সে কথাটি ভুলে গেছেন ওবায়দুল কাদের।
বিদ্রোহী সেনা সদস্যরা যখন শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবন ঘেরাও করে, তখন শেখ মুজিবর রহমান সেনাপতি শফিউল্লাহকে বার বার টেলিফোন করেছিলেন। তাকে পেয়ে বলেছিলেন যে, তোমার সৈন্যরা আমার বাসভবন ঘেরাও করেছে। একটা কিছু করো। সেনাপতি শফিউল্লাহ তখন বলেছিলেন যে, সৈন্যরা সমস্ত কমান্ড ভেঙে ক্যান্টনমেন্ট ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছে। এখন তার পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। বরং তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, তিনি যেন দেয়াল টপকে পেছনের গেট দিয়ে পালিয়ে যান। সঙ্গত কারণেই এটা কোনো সদুপদেশ ছিল না। তাই শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকা-ের জন্য যদি কাউকে দায়ী করতে হয় সে তো জেনারেল শফিউল্লাহ। জিয়াউর রহমানের এখানে কোনো দায় ছিল না।
সেনাবাহিনীকে যদি কিছু করার নির্দেশ দিতে হতো, সেটা দেয়ার অধিকার ছিল শফিউল্লাহর’ই, জিয়াউর রহমানের নয়। আওয়ামী লীগও তাদের অবচেতন থেকে জানে যে, এ দায় সেনাপতিরই ছিল। সেনাবাহিনীর উপ-প্রধানের ছিল না। সাভারে ছিল শেখ মুজিবের বহু যতেœ গড়ে তোলা রক্ষীবাহিনীর সদরদপ্তর। তার কমান্ডার ছিলেন জেনারেল নুরুজ্জামান। তিনিও ‘রক্তপাত এড়াতে’ তার ২০ হাজার রক্ষীবাহিনী মুভ করাননি। তাহলে জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীর সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে কীভাবে শেখ মুজিব হত্যাকা-ের জন্য দায়ী হলেন? এ প্রশ্নের উত্তর কখনো মেলে না। অথচ আওয়ামী লীগ নেতারা অবিরাম এই মিথ্যে কথা বলেই যাচ্ছেন।
কত ধরনের মিথ্যে কথা যে তারা বলেন, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। তারা মিথ্যে কথা বলেন, ১৯৭১ বা ৭২ সালের খাদ্য উৎপাদন নিয়ে। মিথ্যে কথা বলেন, সে সময়কার শিল্প উৎপাদন নিয়ে। মিথ্যে কথা বলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের রিজার্ভ নিয়ে। মিথ্যে কথা বলেন এখনকার রিজার্ভ নিয়ে।
রিজার্ভের টাকা গেলো কোথায়-এ প্রশ্নে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে এমন সব জবাব দেন যার কোনো মানে হয় না এবং সে সব জবাবে হিসাব মেলে না। কিন্তু ক্রমে ক্রমে সেসব মিথ্যে আস্তে আস্তে প্রকাশিত হয়ে পড়ছে। এখন এই প্রযুক্তি বিপ্লবের যুগে কোনো কিছুই আড়াল করে রাখা যায় না। এখন গুগল এমন এক সার্চ এনজাইন যা পৃথিবীর ১০০ বছর আগের হিসাবও চাহিবামাত্র গ্রাহককে দিয়ে দেয়। ফলে সত্য তরবারি হাতে সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়ে।
সরকার বার বার চিল্লিয়ে বলছে যে, জনগণ ভোট চোরদের পছন্দ করে না। ভোটও দেয় না। আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসীন আছে। আর বাংলাদেশে চমৎকার গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করছে। রাশিয়া ও ভারত ছাড়া পৃথিবীর কেউ স্বীকার করে না যে বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলাদেশে সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান কবরস্থ হয়েছে। মানুষের মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা – সব কিছুর ইতি ঘটেছে। এই নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপীয় দেশগুলো নানাভাবে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। ভারত এ যাত্রা নীরব সমর্থন দিলেও রাশিয়ার কূটনীতিকরা মনে করেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই-এ কথা বলার মানে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা। সেটি বিতর্কের আর একটি দিক।
কিন্তু আমরা সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জনসমাবেশগুলোর একটা তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরতে চাই। বিএনপি বিভাগীয় শহরগুলোতে প্রথম জনসমাবেশের ডাক দেয়। প্রথম সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল চট্টগ্রামে। সে সভা যাতে সফল না হয়, তার জন্য হেন কোনো পদ্ধতি নাই যা আওয়ামী লীগ অবলম্বন করেনি। আওয়ামী লীগের নেতারা বিভাগের জেলা উপজেলায় মাইক লাগিয়ে ঘোষণা করেছে যে, যারা চট্টগ্রামে বিএনপির জনসভায় যাবে তাদের আর এলাকায় ফিরতে দেয়া হবে না। আমরা তো ভেবেছিলাম, যারা এ ধরনের ঘোষণা দিচ্ছে সরকার গণতন্ত্রের স্বার্থে দ্রুতই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবে। কিন্তু তা তো নেয়ইনি বরং গোটা জেলায় বাস, ট্রাক, লঞ্চের ধর্মঘট ডেকেছে যাতে মানুষ জনসভাস্থলে আসতে না পারে।
কিন্তু জনগণ এতটাই ক্ষুব্ধ ছিল যে, তারা এর কোনো কিছুই পরোয়া করেনি। জনসভার তিনদিন আগে থেকে এই প্রচণ্ড শীতের মধ্যে তারা কাঁথা কম্বল চিড়া-মুড়ি নিয়ে সভাস্থলে হাজির হয়েছে। খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছে। পথে পথে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হয়েছে। বহু জায়গায় আওয়ামী মাস্তানরা আগতদের পথে বাধা সৃষ্টি করেছে। মহাসড়কে অবরোধ করে ট্রাকে করে আসা মানুষদের রাস্তার উপর নামিয়ে দিয়েছে। কিন্তু জনসভায় আসার জন্য ২০-৩০ কিলোমিটার দূর থেকে মানুষ হাঁটতে শুরু করেছে। শেষ পর্যন্ত এসে পৌঁছেছে সভাস্থলে। পথে পথে আওয়ামী লীগার তাদের পথরোধ করেছে। তাদের মোবাইল ফোন চেক করে নিশ্চিত হবার চেষ্টা করেছে তারা কোন দলের লোক। যদি বোঝা গেছে যে তারা বিএনপির লোক, তাহলে দিয়েছে পিটুনি। কিন্তু বিএনপির লোকেরা কোথাও পাল্টা হামলা করেনি। পাল্টা হামলা হলে রক্তপাত হতে পারতো। বিএনপির লোকেরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশস্থলে এসেছে। শত উসকানিতেও তারা পা দেয়নি। ফলে দেখা গেছে, সমাবেশের দিন সমাবেশ মাঠ ছেড়ে চতুর্দিকে লাখ লাখ লোকে ভরে গেছে।
এ ঘটনা ঘটেছে সকল বিভাগে। সব জায়গায় বাস-লঞ্চ-টেম্পু-ট্রাক-স্কুটার ধর্মঘট চলেছে। ধর্মঘট ডাকা হয়েছে সমাবেশের তিনদিন আগে। ধর্মঘটওয়ালাদের বক্তব্য ছিল তারা এই ধর্মঘট করছেন মহাসড়কে টেম্পু-স্কুটার-ভটভটি চলাচলের বিরুদ্ধে। তবে এই ধর্মঘট চলছিল বিএনপির সমাবেশের সময় পর্যন্ত। বিএনপির সমাবেশও শেষ। ধর্মঘটও শেষ। এভাবেই বিএনপি বিভাগীয় সমাবেশগুলো অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছে। একেকটা সমাবেশে ১০-১৫ লাখ লোক সমবেত হয়েছে। তারা মাঠের এক কোণে রান্না করে খেয়েছেন। রান্নার চাল-ডাল নিয়ে এসেছেন কিংবা স্থানীয়রা তাদের সরবরাহ করেছে। স্থানীয় লোকজন তাদের বাড়ির ফাঁকা জায়গায় সমাবেশে আগত লোকদের আশ্রয় দিয়েছে। খাইয়েছে। পানি সরবরাহ করেছে।
চট্টগ্রাম বলি, খুলনা বলি, বরিশাল বলি, রংপুর-ময়মনসিংহ বলি-সর্বত্র আমরা একই চিত্র দেখেছি। এই সমাবেশে শুধু বিএনপি নেতাকর্মীরাই আসেননি। এসেছেন অগণিত সাধারণ মানুষ। তারা কেউ রিকশাওয়ালা। কেউ বাস ট্রাকের হেলপার। কেউ মুদি দোকানদার। এসেছেন সিঙ্গারা বিক্রেতা। জুতা পালিশ ওয়ালা। এমনই সব সাধারণ মানুষ। তারা সরকারের অপশাসন, দুর্নীতি আর সর্বস্তরের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে জনসভায় এসেছেন। তারা মনে করেছেন, তাদের এই অংশগ্রহণে সরকারের পতন হলে তাদের দুর্দিনের অবসান ঘটবে।
জনসভায় আমরা সিঙ্গারা বিক্রেতাকে কাঁদতে দেখেছি। তারা স্বামী-স্ত্রী ও দু’সন্তান। তিনি এখন সিঙ্গারা বিক্রি করে ছোট ছোট সন্তানদের মুখের ভাত জোগাতে পারছেন না। একজন তো কেঁদেই ফেললেন। তার দুটি দুধের শিশু। তারা দুধ খেতে চেয়েছিল। কিন্তু গত এক সপ্তাহে তিনি তাদের জন্য আধা লিটার দুধ কিনতে পারেননি। আওয়ামী লাঠেরাদের তা-বে তারা হারিয়েছেন সর্বস্ব। বসতভিটাও বেদখল হয়ে যাচ্ছে। কোথাও কারো কাছে কোনো প্রতিকার নেই। সুতরাং তারা প্রতিবাদে অংশ নিতে জনসভায় এসেছেন।
রাজশাহীর মেয়র ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা তিনদিন আগে থেকেই রাজশাহীমুখী সকল বাস, ট্রাক, নৌকা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। রাজশাহীমুখী জনস্রোত থামাতে পথে পথে পাহারা চৌকি বসিয়েছিলেন। তাতে ছাত্রলীগাররা সাধারণ মানুষকে অবর্ণনীয় হেনস্তা করেছে। সেখানেও তিনদিন আগে থেকেই লোক আসতে শুরু করে। রাজশাহীর জনবিরোধী আওয়ামী নেতারা তাদের পদে পদে বাধা দেয়। হামলা চালায়। তখন রিকশা বা মোটর সাইকেলে করে জনতা রাজশাহীর জনসভাস্থলে আসতে থাকে। মাঠের এক প্রান্তে রান্নার আয়োজন করা হয়েছিল। আওয়ামী মাস্তানরা এসে রান্নায় চুলায় পানি ঢেলে দেয়। যেন না খেয়ে থাকতে হয় জনসভায় আগত লোকদের। কিন্তু কী আশ্চর্য ঘটনা! সেখানেও সাধারণ মানুষ জনসভায় আগতদের খাদ্য ও পানির ব্যবস্থা করে। তাদের বাড়িতে থাকতে দেয়। ভাগ্যিস, আওয়ামী মাস্তানরা এই খাদ্য, পানি ও থাকতে দেয়ার অপরাধে ঐসব বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়নি। সে জনসভাও মাঠ পেরিয়ে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়েছিলো। যে দিকে চোখ যায়, শুধু মানুষ আর মানুষ। তাদের একটাই দাবী-তারা এই দুঃশাসনের অবসান চান।
সর্বশেষ জনসভাটি ছিল ঢাকায় গত ১০ ডিসেম্বর। সেই জনসভা ঠেকাতে সরকার হেন মাস্তানি নেই-যা করেনি। বিএনপি চেয়েছিল, তারা এই জনসভা করবে নয়াপল্টনে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। সরকার সেখানে অনুমতি দিতে চায়নি। অন্যান্য জায়গায় বিএনপির জনসমাবেশ দেখে সরকারের ধারণা হয়েছিল, নয়াপল্টনে তাদের সমাবেশ করতে দিলে সেখানে ৫০ লক্ষ লোকের সমাগম হবে। এই ৫০ লক্ষ লোক যদি ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে বসে যায়, তাহলে সরকারের পতন অনিবার্য। সে কারণে সরকারের লাশ চাই। তারা ৭ ডিসেম্বর বিএনপি অফিসের সামনে এলোপাথাড়ি গুলী চালিয়ে বিএনপির জনসভায় আগত একজন সাধারণ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে হত্যা করে। তারপর বিএনপি অফিসের ভেতরে ঢুকে ব্যাপক তা-ব চালায়। প্রতিটি কক্ষ ভাঙচুর করে।
টিভি ক্যামেরায় দেখা যায়, একজন পুলিশ কনস্টেবল একটি ব্যাগে করে কী জানি নিয়ে গিয়ে বিএনপি অফিসের দোতলায় রেখে দৌড়ে নেমে এসে বলতে থাকে ‘বোম’ ‘বোম’। তারপর বিএনপি অফিসের ভেতর থেকেই তিন-চারশ’ লোকেকে গ্রেপ্তার করে। টিয়ার শেল রাবার বুলেট ছোড়ে। সারাদেশ থেকে গ্রেপ্তার করে হাজার হাজার লোক। মামলা দায়ের করা হয়, লক্ষ লক্ষ। আসামী ৫০ লক্ষের অধিক। ঐ দিনই মধ্য রাতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হন জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ। সরকার ভেবেছিল এদের গ্রেফতার করলে আন্দোলন থেমে যাবে।
কিন্তু আন্দোলন থেমে যায়নি। অনেক দেন দরবারের পর সরকার ৯ ডিসেম্বর দুপুরে গোলাপবাগ মাঠে বিএনপিকে সভা করার অনুমতি দেয় এবং আশ্চর্য ঘটনা এই যে, এই অনুমতির এক ঘণ্টার মধ্যেই গোলাপবাগ মাঠ মানুষে মানুষে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। এটা যেন ছিল এক জাদুকরি ব্যাপার। পরদিন সকালের মধ্যে জনতা সায়েদাবাদ থেকে কমলাপুর পর্যন্ত সমাবেশস্থলকে প্রসারিত করে নেয়। লাখ লাখ মানুষ সমবেত হয়। সরকারের ভিত কেঁপে ওঠে।
এর একটা বিপরীত চিত্র আমরা দেখলাম রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের জনসভাকে কেন্দ্র করে। সেদিন আর কোনো যানবাহন চলাচলে তো কোনো বাধা থাকলোই না। বরং সরকার আটটি বিশেষ ট্রেন দিলো রাজশাহীতে আওয়ামী লীগারদের সমবেত হওয়ার জন্য। বাস ট্রাক টেম্পু সবই ছিল। সব কিছু ফ্রি। সে জনসভায় লোক হয়নি এমন বলব না। কিন্তু কেউ কেউ দাবী করেছেন, তাদের খাওয়া ও টাকা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা তা পাননি। এখন কেউ আর খবরও নিচ্ছে না। আহ, এত সব সত্ত্বেও রাজশাহীতে বিএনপির সমাবেশে যে জনসমাগম হয়েছিল, ততটা মানুষ জোগাড় করতে পারেনি আওয়ামী লীগ। যারাও বা এসেছিল, তারা যার যার এলাকার বাসে চড়ে বসেছিল।
এই কি তবে আওয়ামী লীগের গণতন্ত্র! বিএনপির জন্য বাস-ট্রাক-টেম্পু সব বন্ধ। আওয়ামী লীগের জন্য সব ফ্রি। বিশেষ ট্রেন। এগুলোই কি আওয়ামী গণতন্ত্রের নমুনা? এই যদি হয় তাহলে সামনে আওয়ামী লীগের জন্য ঘোরতর দুর্দিন।
সোর্স : দৈনিক সংগ্রাম