গত ২৪ ডিসেম্বর নোয়াখালীর গণমিছিলে পুলিশের নির্বিচারে গুলীবর্ষণে গুলীবিদ্ধ হয়ে গুরতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন ছাত্রশিবিরের সদস্য দেলাওয়ার হোসাইনকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে দেখতে যান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি আহত দেলাওয়ারের চিকিৎসার অগ্রগতি ও শরীর-স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন। তিনি বেশকিছু সময় তার শয্যাপাশে কাটান এবং চিকিৎসক, স্বজনসহ উপস্থিত দর্শনার্থীদের সাথে কথা বলেন এবং আহত দেলাওয়ার যথাযথ চিকিৎসার জন্য মহানগরীর পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি আহতের আশু আরোগ্য কামনায় মহান আল্লাহ তা’য়ালার দরকার দোয়াও করেন। এ সময় মহানগরী সেক্রেটারি সাথে উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা হোসাইন বিন মাসুদ ও মেহেদী হাসান প্রমূখ।
এসময় তিনি বলেন, সরকার গণআন্দোলনে ভীত হয়ে বিরোধী দলের ওপর দলন-পীড়ন বাড়িয়ে দিয়েছে। বিরোধী দলের যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষিত হওয়ার পরই আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে কথিত রিমান্ডের হেনস্তা করা হয়েছে। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী অতীতে দলন-পীড়ন চালিয়ে কোন ফ্যাসীবাদী ও স্বৈরাচারি শক্তি ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে পারে নি; আওয়ামী লীগও পারবে না। তিনি অপরাজনীতি বন্ধ করে অবিলম্বে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ সকল বিরোধী দলীয় নেতাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় সরকারের জন্য লাঞ্ছনাকর পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে।
তিনি বলেন, সরকারের জুলুম-নির্যাতন যত বাড়ছে বীর জনতা ততই স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসছে। ফলে তারা এখন ক্ষমতা হারানোর ভয়ে প্রমাদ গুণতে শুরু করেছে। সরকার উপলব্ধি করতে পেড়েছে যে, তাদের পায়ের তলায় মাটি নেই। তাই তারা জনতার গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমন করার জন্যই নিরস্ত্র জনতার উপর গুলীবর্ষণ করতে শুরু করেছে। আর তারই ধারাবাহিকতায় দেলাওয়ার গুলীবিদ্ধ হয়েছেন। কিন্তু জুলুম-নির্যাতন করে, গুলী চালিয়ে অতীতে জনতার উত্তাল তরঙ্গ কখনো ঠেকানো যায়নি; আর কখনো যাবেও না। তিনি অবৈধ ও জুলুমবাজ পতনের লক্ষ্যে রাজপথে সকলকে সর্বোচ্চ কোরবানীর মানসিকতা নিয়ে নেমে আসার আহবান জানান। জাতি আপনাদেরকে জাতীয় বীরের মর্যাদা অভিষিক্ত করবে।
তিনি আরো বলেন, সরকার কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবিকে পাশ কাটানোর জন্য নানাবিধ ছলা-কলার আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। তারা নিজেদের অবৈধ ক্ষমতালিপ্সা চরিতার্থ করার জন্যই পরিকল্পিতভাবেই দেশে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। তারা বিদেশী কূটনীতিক ও উন্নয়ন সহযোগিদের কোন কথায় কর্মপাত করছে না। ফলে বহিঃর্বিশ্বে দেশ এখন বন্ধুহীন হতে চলেছে। তিনি সরকারকে টালবাহানা পরিহার করে অবিলম্বে পদত্যাগ করে কেয়ারটেকার সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহবান জানান। অন্যথায় তাদেরকে ইতিহাস ক্ষমা করবে না।