তিনি আজ রাজধানীতে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলায় জড়িয়ে কথিত রিমান্ডের নামে নাজেহালের প্রতিবাদে এবং রিমান্ড বাতিল অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এক বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশ এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি শাহাজাদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বাড্ডা বাস সার্ভিসের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দিন মোল্লা ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য জিয়াউল হাসান, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, জামাল উদ্দীন, মু. আতাউর রহমান সরকার ও নাসির উদ্দীন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী উত্তর সভাপতি জাকির হোসেন, পশ্চিম সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন ও প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি সভাপতি হুমায়ন কবির প্রমূখ।
ড. রেজাউল করিম বলেন, আওয়ামী গণতন্ত্র এখন রীতিমত সার্কাসে পরিণত হয়েছে। আর আওয়ামী লীগের নেতারা এখন রীতিমত সার্কাসের কৌতুক অভিনেতা। সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য নতুন করে তামাশা ও ভাঁওতাবাজীর নির্বাচন করার জন্য দিবাস্বপ্নে বিভোর। সে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই তারা নতুন করে বিরোধী দলের ওপর দলন-পীড়ন শুরু করেছে। স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ ও রাজপথে সভা-সভাবেশ প্রত্যেকের নাগরিক সাংবিধানিক অধিকার হলেও সরকার পুলিশ বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে জনগণকে সে অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। কিন্তু রাজপথে সরকারের যতই জুলুম-নির্যাতন বাড়ছে, ততই রাজপথ উত্তপ্ত ও অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে। মূলত, সরকার গণঅভ্যুত্থান ঠেকানোর জন্য আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতাদের গ্রেফতার করে নিজেদের নগ্ন চেহারা জাতির সামনে উম্মুক্ত করে দিয়েছে। কিন্তু গ্রেফতার করে, জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে অতীতে কোন স্বৈরাচারি ও ফ্যাসীবাদী শক্তির শেষ রক্ষা হয়নি; আওয়ামী লীগেরও হবে না। তিনি অপরাজনীতি ও অবৈধ ক্ষমতালিপ্সা পরিহার করে অবিলম্বে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার আহবান জানান। অন্যথায় জনগণ দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়ে আমীরে জামায়াতকে বিজয়ীর বেশে মুক্ত করবে-ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, সরকারের পায়ের তলা এখন থেকে মাটি সরে গেছে। ১০ দফার ভিত্তিতে যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার পর তাদের মধ্যে হৃদস্পন্দন বেড়ে গেছে। সে আতঙ্কের অংশ হিসাবে তারা এখন বিদেশী কূটনীতিকদের সাথেও কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণ করতে শুরু করেছে। কয়েক দিন আগে সরকার সমর্থকদের হাতে নাজেহালের শিকার হয়েছে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। ফলে আন্তর্জাতিক মহলে দেশের সম্মানহানী ঘটেছে। তারা নানাবিধ ষড়যন্ত্র করে আসন্ন সরকার বিরোধী আন্দোলনকে বিভ্রান্ত ও বিপথগামী করতে চায়। কিন্তু তাদের সে ষড়যন্ত্র জনগণ কখনোই সফল ও স্বার্থক হতে দেবে না। তিনি ষড়যন্ত্র ও অপরাজনীতি পরিহার করে অবিলম্বে পদত্যাগ করে কেয়ারটেকার সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহবান জানান। অন্যথায় সরকারকে ইতিহাসের নির্মম পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
মহানগরী সেক্রেটারি বলেন, জামায়াত একটি নিয়মতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক ও আদর্শিক রাজনৈতিক দল। জামায়াত সবসময় ইতিবাচক রাজনীতি, আইন ও সাংবিধানিক শাসনে বিশ্বাসী। সর্বপরি আমরা দুর্নীতি, দুঃশাসন, হ/ত্যা, স/ন্ত্রা/স, নৈ/রা/জ্য, জ/ঙ্গী/বাদের বিরুদ্ধে সব সময় সোচ্চার। ২০১৪ ও ২০১৮ তামাশার নির্বাচন ছাড়া স্বাধীনতা পরবর্তী সকল সংসদের জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব ছিল। এমনকি সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জামায়াত অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তিনি গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সরকারকে আগামী দিনের করণীয় নির্ধারণ করার আহবান জানান। অন্যথায় তাদেরকে গণরোষের মুখোমুখি হতে হবে।