স্টাফ রিপোর্টার: একের পর এক জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির মাধ্যমে নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা চলছেই। এক সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে বেড়েছে মোটা চালসহ প্রায় সব ধরনের চালের দাম। মোটা চাল ন্যূনতম কেজিপ্রতি বেড়েছে ২ টাকা। আর মাঝারি ও চিকন চালের দাম বেড়েছে ২-৫ টাকা পর্যন্ত। তেল, চিনি, আটা, ডাল ও অন্যান্য মুদি উপকরণের দাম আগের মতোই রয়েছে। তবে বাজারে কমেছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। কিছুটা কমতি সবজির দামও।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা যায়, মোটা পাইজাম চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬-৬০ টাকা। মাঝারি মানের মিনিকেট ৭০-৭২ টাকা ও সরু নাজির চাল ৭৫-৮৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এরমধ্যে পাইজাম চালের দাম বেড়েছে ২ টাকা, মিনিকেট ২ টাকা ও ভালো মানের নাজিরশাইল চালের দাম বেড়েছে ৫ টাকা। চিকন চালের দাম কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে ৬৮ টাকা, মাঝারি বা পাইজাম চাল ২ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা এবং মোটা চাল কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে বাজারে গত এক মাসে তিন দফা বেড়ে আটার দাম প্রতি কেজি ৭৫ টাকায় ঠেকেছে। বাজারে দুই কেজি ওজনের প্যাকেটজাত আটা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। খোলা আটা নিলে পাওয়া যাচ্ছে ৫-১০ টাকা কমে। গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে কমেছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। কিছুটা কমতি সবজির দামও। সবজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় কমেছে এর দাম। তাতে কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন ক্রেতারা। কয়েকটি ছাড়া বাকি সব সবজির দাম মোটামুটি ক্রেতাদের নাগালে রয়েছে। সামনের দিনগুলোতে সবজির সরবরাহ আরও বাড়বে এবং দাম আরও কমবে বলে বিক্রেতারা জানান।
খুচরা বাজারে পেঁপে ও মুলা ৩০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে। শীতকালীন অন্যান্য সবজির কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কিছু সবজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হচ্ছে, যেগুলো গ্রীষ্মের। এরমধ্যে শিম, পটলের তুলনায় অন্য সবজির দাম বেশি।
বাজার দেখা যায়, প্রতি কেজি পুরোনো আলু ২৮ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, পটল ৫০, শসা ৮০-১০০ টাকা, শিম ৫০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, ধনিয়াপাতা ১২০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, করলা ৫০-৬০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, ব্রকলি ৮০-১০০ টাকা ও পেঁয়াজ পাতা ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস লাউ ৬০ টাকা, ফুলকপি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা করে এবং লালশাক প্রতি আঁটি দাম ১০ টাকা।
সবজি ব্যবসায়ী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহে তিনি ৫০-৬০ টাকায় যেই ফুলকপি বিক্রি করেছেন, এখন সেটির দাম ৩০ টাকা। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর সবজি ঢাকায় আসছে। আগামী দুই -তিন মাস সবজির বাজার স্বাভাবিক থাকবে বলেও মনে করেন তিনি।
এদিকে ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এর প্রভাবে কিছুটা কমেছে সোনালি মুরগির দামও। কেজিপ্রতি সোনালি মুরগির দাম পড়ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা। যা গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় ২০ টাকা কম। ডিম ব্যবসায়ীরা জানান, এখন পাইকারিতে প্রতি ডজন বাদামি রঙের ফার্মের ডিমের দাম ১১০ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা হালিপ্রতি ডিমের দাম রাখছেন এখন ৪০ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে ডিমের দাম ডজনে কমেছে ২০ থেকে ২৫ টাকা।
বাজারে দেখা গেছে, গরুর গোশত ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা এবং খাসির গোশত ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও গরু ও খাসির গোশত একই দামে বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
অন্যদিকে বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে দুই সপ্তাহ আগে বেড়ে যাওয়া তেল ও চিনির দাম। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৯০ টাকা এবং চিনির দাম ১০৭ টাকা নির্ধারিত রয়েছে। তবে চিনি ১১০ থেকে ১১৫ টাকা আর ১৯০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে তেল-চিনি। মাছের বাজরে ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে পুঁটি মাছের কেজি ২৫০ টাকা, বড় রুই মাছ ৪৫০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০ টাকা, শিং মাছ ৫০০ টাকা, টাকি মাছ ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ টাকা, রূপচাঁদা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, বোয়াল ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা। এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ ১১০০ টাকা এবং এক কেজির কম ওজনের ইলিশ ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।