আর্ত-মানবতার কল্যাণ ও বিপন্ন মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবই জামায়াতের রাজনীতির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
তিনি আজ রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানা আয়োজিত ৮ নং সেক্টর রেলগেট সংলগ্ন বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ফুড প্যাকেট এবং কম্বল বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন থানা কর্মপরিষদ সদস্য সুলতান আহমেদ, ওমর ফারুক সোহেলসহ থানা এবং ওয়ার্ডের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, গণমানুষের সকল সমস্যার সমাধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। আধুনিক রাষ্ট্রের ধারণাও এসেছে মানুষের কল্যাণকামীতা থেকেই। কিন্তু দেশে কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না থাকায় জনগণ রাষ্ট্রের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত। নাগরিক হিসাবে তারা রাষ্ট্রকে যথারীতি কর পরিশোধ করলেও প্রচলিত রাষ্ট্রব্যবস্থা তাদের অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে পারছে না। ফলে তারা প্রতিনিয়ত অধিকার বঞ্চিত হচ্ছেন। যেকোন ক্রান্তিকাল ও দুর্যোগকালীন মূহুর্তেও সরকার তাদের পাশে দাঁড়াতে ব্যর্থ হচ্ছে। এমতাবস্থায় গণমানুষের মুক্তি ও কল্যাণমুখী সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য দেশেকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার কোন বিকল্প নেই। তিনি সেই স্বপ্নের সমাজ বিনির্মাণে সকলকে জামায়াতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, রাজধানীতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে নগরীর বস্তিগুলোতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে। এতে প্রতি বছরই জান ও মালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। এসব ঘটনা ঘটার পর সরকার ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ সাময়িকভাবে তৎপরতা দেখা গেলেও তা কখনো পরিণতি পায়নি। ফলে বস্তিতে অগিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে নানাবিধ প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। এসব ঘটনা কোন পরিকল্পিত নাশকতা কি না ভেবে দেখার সময় এসেছে। তিনি বস্তিতে প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করে অগ্নিদুর্ঘটনার কারণ নির্ধারণ ও ঘটনার পূনরাবৃত্তি রোধে করণীয় নির্ধারণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান এবং অগ্নিদুর্গতদের কল্যাণে সমাজের বিত্তবানসহ সকল পেশা ও শ্রেণির মানুষকে এগিয়ে আসার আবেদন করেন।
তিনি আরও বলেন, সরকারের বৃত্ত ক্রমেই সঙ্কীর্ণ হয়ে আসতে শুরু করেছে। সে ধারাবাহিকায় রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে তার নির্ধারিত সফর ইতোমধ্যেই বাতিল করেছেন। জাপানী রাষ্ট্রদূত তো ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে ইতোমধ্যেই বোমা ফাটিয়েছেন। সুবিধা হবে না জেনে প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরও বাতিল করা হয়েছে। এসব ঘটনায় প্রমাণ হয়, সরকার এখন রীতিমত লাইফ সাপোর্টে রয়েছে। তাই এই জুলুমবাজ ও ব্যর্থ সরকার যত তাড়াতাড়ি ক্ষমতা থেকে বিদায় নেবে ততই দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ নিশ্চিত হবে। তিনি সময়ক্ষেপন না করে অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করে কেয়ারটেকার সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহবান জানান। অন্যথায় তাদেরকে গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে।