মোহাম্মদ জাফর ইকবাল : জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় কর্মী হিসাবে নয়, সরকারি কর্মচারী হয়ে পক্ষপাতিত্বহীনভাবে দায়িত্ব পালনে জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপারসহ (এসপি) সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। দায়িত্ব পালনে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রতি সিইসির আদেশ-উপদেশ কতটা ফলপ্রসূ হবে তার প্রমাণ মিলেছে সম্প্রতি গাইবান্ধার উপনির্বাচনে। যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বারবার বলেই আসছেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে পক্ষপাতিত্বহীনভাবে দায়িত্ব পালনে সিইসির আদেশ ও উপদেশ বিদ্যমান ব্যবস্থায় বাস্তবায়নের সম্ভাবনা খুবই কম। সেটিই প্রমাণিত হয়েছে। দেশের বিভিন্নস্থানে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেই প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দলীয় সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। এর মুখ্য কারণগুলো হলো- নির্বাচনে দলীয় সরকারের হস্তক্ষেপ, এরূপ হস্তক্ষেপ রোধে ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশনের (ইসির) দৃঢ়তার অভাব এবং ক্ষমতাসীন দলের প্রতি নির্বাচন পরিচালনাকারী মাঠ প্রশাসনের অনুরক্ততা।
সূত্র মতে, অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন পুরোপুরি বন্ধ ঘোষণা করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোটের দিন সিইসি বলেছেন, কমপক্ষে ৫০টি কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। ওখানে একটি পক্ষ বা একজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী প্রভাবিত করতে পেরেছিলেন। আমাদের দৃষ্টিতে মনে হয়েছে, সুষ্ঠু নির্বাচন গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না। ওইদিন প্রতিদ্বন্ধি অন্য প্রার্থীরা ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মাহমুদ হাসান রিপনের বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখল, জাল ভোট দেয়া, ইভিএমএ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ তুলে ভোট বাতিলের দাবি জানান তারা।
সংশ্লিষ্টরা গাইবান্ধার নির্বাচনকে ২৮ বছর আগে ১৯৯৪ সালের মাগুরার উপনির্বাচনের দৃশ্যের সাথে তুলনা করেছেন। তখন নির্বাচনটি হয়েছিল বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময়ে। নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। এর জের ধরে শুরু হয়েছিল আওয়ামী লীগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন। ওই আন্দোলনের সূত্র ধরেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে ফিরিয়ে এনেছিল বিএনপি সরকার। বিএনপি’র ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ওই নির্বাচনটি দলের জন্য খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। দলের কোনো হেভিওয়েট নেতা প্রার্থী ছিলেন না। কিন্তু এই নির্বাচনের নানা অনিয়ম প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছিল পুরো নির্বাচন ব্যবস্থাকে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকলেও ওই আসনটি আওয়ামী লীগের হাতে ছিল। সর্বশেষ গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ২৮ বছর আগের মাগুরা-২ আসনের উপনির্বাচনের বার্তাই যেন ফিরে এলো। দৃশ্যপটও একই। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে আন্দোলন করছে বিরোধীদলগুলো। ভোটের নতুন পদ্ধতি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ইভিএমের বিরোধিতা করছে বেশির ভাগ দল। কেবল সরকারি দল ও তার কয়েকটি সহযোগী দল ইভিএমের পক্ষে মতামত দিয়ে আসছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপরও আস্থা নেই বেশির ভাগ দলের। এমন পরিস্থিতিতে গাইবান্ধার নির্বাচনটি দেশের রাজনীতিতে নতুন মোড় নিয়ে আসতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। গাইবান্ধা-২ আসনে ক্ষমতাসীন দলের এমপি ছিলেন ডেপুটি স্পিকার এডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া। তার মৃত্যুতে আসনটি ফাঁকা হয়। উপনির্বাচনে দলের প্রার্থী হয়েছিলেন তরুণ নেতা সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন। ফজলে রাব্বী মিয়ার মেয়েও নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু দলীয় সমর্থন পাননি। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিপরীতে আরও চার জন প্রার্থী ছিলেন। তাদের মধ্যে জাতীয় পার্টি সমর্থিত এএইচএম গোলাম শহীদ রঞ্জুর সঙ্গে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর হাড্ডাহাড্ডি প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস ছিল আগে থেকেই। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় তাদের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে ভোট দেবেন- এমন ধারণা ছিল আওয়ামী লীগ শিবিরে। এ কারণে আগে থেকেই নির্বাচন নিয়ে ভিন্ন ছক আঁকা হয়।
জাতীয় নির্বাচনের এক বছর আগে হওয়া এই নির্বাচনটি ছিল নির্বাচন কমিশনের জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ। নেয়া হয়েছিল ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ১৪৫টি কেন্দ্রের প্রতিটিতে লাগানো হয়েছিল ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। পুরো নির্বাচনের ভোট নেয়ার ব্যবস্থা করা হয় ইভিএমে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের শক্ত পরিকল্পনা কিছুতেই কাজে আসেনি নির্বাচনে। সকাল থেকেই আসতে থেকে নানা খবর। ইসি’র কর্মকর্তারা আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে বসেই নিজ চোখে দেখেন অনিয়ম আর বুথ দখলের চিত্র। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে অনিয়মের ধরন। দুপুর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে নির্বাচন কমিশন মনে করে পরিস্থিতি আর তার নিয়ন্ত্রণে নেই। তাই নির্বাচন বন্ধ করে দেয়ার বার্তা পাঠানো হয় স্থানীয় প্রশাসনের কাছে। সিইসি’র এই ঘোষণার আগেই অবশ্য ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ছাড়া অন্য চার প্রার্থী একসঙ্গে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
নানা অনিয়মে ভরা গাইবান্ধার নির্বাচন বন্ধ করার পর আসছে নানা প্রশ্নও। বলা হচ্ছে, একটি মাত্র আসনে নির্বাচন দিয়ে যেখানে দুপুরের মধ্যেই নির্বাচন কমিশনকে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে সেখানে একদিনে তিনশ’ আসনে তারা জাতীয় নির্বাচন করবেন কোন শক্তিতে। সবচেয়ে বড় প্রশ্নটি আসছে ইভিএম নিয়ে। প্রায় সব পক্ষের আপত্তি উপেক্ষা করে আগামী নির্বাচনে অর্ধেক আসনে ইভিএমে নির্বাচন করতে অনড় ইসি। এই অবস্থায় গাইবান্ধার নির্বাচন ইসি’র এই পরিকল্পনার সামনে বড় এক প্রশ্ন হাজির করেছে। কেন্দ্র দখল, জোর করে ভোট আদায়, সিসি ক্যামেরার সংযোগ বন্ধ করে দেয়ার চিত্র নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা নিজেরাই দেখতে পেরেছেন। ইভিএম নিয়ে বিরোধীদের আপত্তির বিষয়টি আরও জোরালো হয়েছে গাইবান্ধার ভোটের এমন চিত্রে। আবার অনেকে বলছেন, আগেও ভোটে এমন চিত্র হয়েছে। তা নির্বাচন কমিশনের চোখের সামনেই হয়েছে। কিন্তু এবারের নির্বাচনটিকে ভিন্নভাবে নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। জাতীয় নির্বাচনের আগে সারা দেশের ডিসি-এসপিদের সঙ্গে ইসির বৈঠকে যে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল এর একটা প্রভাব পড়েছে গাইবান্ধার নির্বাচনে। তবে অনেকে বলছেন, নানা কারণে তলানিতে থাকা ইমেজ উদ্ধারে গাইবান্ধার নির্বাচন বন্ধ করে দেয়া ইসি’র কৌশলও হতে পারে। জানা গেছে, গাইবান্ধার নির্বাচনটি বিরোধী দলগুলোর জন্য একটি ট্রাম্পকার্ড হয়ে উঠেছে। অনেকে বলছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নিরপেক্ষ সরকারের যে দাবি ঘুরপাক খাচ্ছে হালের এই নির্বাচনের সূত্র ধরে ‘৯৬-এর মতো নতুন রাজনৈতিক কোনো সূত্রেরও আবির্ভাব হতে পারে। নতুন মোড় নিতে পারে রাজনীতি।
সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কুমিল্লার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নির্বাচনী আচরণবিধি প্রয়োগে অপারগতা, এ নিয়ে পরবর্তীকালে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রদান এবং সেখানকার নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে একধরনের নাটকীয়তার কারণে কমিশনের ওপর আস্থাহীনতা চরম আকার ধারণ করে। তাদের বিরুদ্ধে সরকারি দলের প্রতি অনুগত হওয়ার গুরুতর অভিযোগ ব্যাপক। এসব অভিযোগ থেকে নিজেদের বাঁচাতে গাইবান্ধা উপনির্বাচন নিয়ে কমিশন যে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ এবং তারা যে ক্ষমতাসীনদের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট নয়, তা প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করতে পারে। তিনি আরও বলেন, গাইবান্ধার উপনির্বাচন কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বয়ে আনল। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী না চাইলে সামান্য একটি উপনির্বাচনেও কমিশনের পক্ষে তার সুষ্ঠু নির্বাচনের সাংবিধানিক ম্যান্ডেট পালন করা সম্ভব নয়, সেটি প্রমাণিত হলো।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ১১টি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, যার মধ্যে চারটি হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে এবং সেগুলোয় ক্ষমতার রদবদল হয়েছে। এগুলো দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের কাছেও গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। অন্য সাতটি নির্বাচন হয়েছে দলীয় সরকারের অধীনে, যার দুটি ছিল একতরফা এবং এগুলো কোনো নির্বাচনই ছিল না। এই সাতটি নির্বাচনই (যার মধ্যে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনও অন্তর্ভুক্ত) ছিল বিতর্কিত ও একতরফা, এমনকি কোনো কোনোটিতে চরম জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছিল। এগুলো নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের কাছেও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। অতীতের এবং গাইবান্ধার উপনির্বাচনের অভিজ্ঞতা বলে, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন সম্ভব নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা সম্পর্কিত আমাদের সংবিধানিক কাঠামোতে পরিবর্তন এনে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে তাদের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচনের সাংবিধানিক ম্যান্ডেট পালন করা সম্ভব হবে না। সংসদে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা কাজে লাগিয়ে ক্ষমতাসীনরা অতি সহজেই সংবিধান সংশোধন করতে পারে।
সাবেক সচিব আবদুল লতিফ ম-ল বলেন, আমাদের সংবিধান জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত করলেও কমিশনের পক্ষে এ নির্বাচন পরিচালনা করে মূলত মাঠ প্রশাসন। ক্ষমতাসীন দলের আদর্শ ও ভাবধারায় বিশ্বাসী প্রশাসন ক্যাডারের উপসচিবরা ডিসি এবং সিনিয়র স্কেলপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ইউএনও পদে নিয়োগ পান। মাঠপর্যায়ে পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদ যেমন এসপি ও ওসি পদে নিয়োগেও তা অনুসরণ করা হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের একটানা একযুগের শাসনামলে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বেসামরিক প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর বড় অংশটি সরকারের আনুকূল্যে অপ্রত্যাশিত সুযোগ-সুবিধা পেয়ে দলটির অনুরক্ত হয়ে পড়েছেন। এমন কর্মকর্তারাই মাঠপর্যায়ে পুলিশ ও প্রশাসনের পদে নিয়োগ পাবেন। তারা ভালো করেই জানেন যে, বর্তমান সরকার পুনরায় ক্ষমতায় এলে সরকারই তাদের রক্ষাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে। তাই নিজেদের স্বার্থেই তারা ক্ষমতাসীন সরকারের পরিবর্তন চাইবেন না। অর্থাৎ তারা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষেই কাজ করবেন। দ্বিতীয়ত, ডিসি, ইউএনও, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, এসপি, ওসি-এসব কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণ অর্থাৎ পদোন্নতি, বদলিসহ তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা সরকারের হাতে থাকায় ক্ষমতাসীন সরকারের পক্ষে নির্বাচনে তাদের দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করা অনেকটা সহজ হবে।
নির্বাচন বিশ্লেষক ড. হারুন রশীদ বলেন, দেশে রাজনৈতিক সংকটের মূলে আছে নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে আস্থাহীনতা। সেটা জাতীয় নির্বাচনই হোক আর স্থানীয় নির্বাচন। নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে কিংবা কার অধীনে হবে-এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারছে না। এ অবস্থায় মনে রাখতে হবে-যখন সংকটের মূলে নির্বাচনব্যবস্থা, তখন নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ করার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও জাতীয় নির্বাচন প্রত্যাশা করে সাধারণ মানুষ।