ন্যায়-ইনসাফেরভিত্তিতে দেশকে ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্রে পরিণত করে গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জামায়াতে ইসলামী সবসময়ই আপোষহীন থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের মোহাম্মদপুুর থানা পশ্চিম আয়োজিত অগ্রসর কর্মীদের শিক্ষা শিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর ডা. শফিউর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাসুদুজ্জামানের পরিচালনায় শিক্ষা শিবিরে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম, সহকারি সেক্রেটারি এবাদত হোসেন, কর্মপরিষদ সদস্য রবিউল ইসলাম রুবেল, এ্যাডভোকেট তাইয়্যেবুর রহমান, আলী আহমেদ মজুমদার ও আবুল কালাম আজাদ প্রমূখ।
ড. এম আর করিম বলেন, আল্লাহ তায়ালা জান্নাতের বিনিময়ে মুমিনের জানমাল ক্রয় করে নিয়েছেন। এক্ষেত্রে আল্লাহর সাথে আমরা চুক্তিবদ্ধ। আর এই চুক্তির শর্তাবলী যথাযথাভাবে পালনের মধ্যেই রয়েছে মানুষের ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি। তাই জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালার বিধান ও রাসূল (সা.)এর আদর্শ যথাযথভাবে অনুসরণ করার কোন বিকল্প নেই। মূলত, সমাজ-রাষ্ট্রে সে পরিবেশ সৃষ্টিই হচ্ছে জামায়াতের রাজনীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। তিনি ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্দোলনে ময়দানে সর্বশক্তি নিয়োগের জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, মানুষের দুনিয়াবি জীবন খুবই ক্ষণস্থায়ী; চিরস্থায়ী আখেরাতের জীবন। হাদিসে রাসূল (সা.)এ দুনিয়াকে আখেরাতের শষ্যক্ষেত্রের সাথে তুলনা করা হয়েছে। মূলত, দুনিয়ার জিন্দিগী হচ্ছে আখেরাতের পাথেয় সংগ্রহের স্থান। দুনিয়ায় ভাল কাজ করলে যেমন আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আখেরাতে পুরস্কৃত করবেন, ঠিক তেমনিভাবে মন্দকাজের জন্য শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। মূলত, রুকনিয়াত হচ্ছে সংগঠনের সর্বোচ্চ স্তর। তাই দ্বীনকে বিজয়ী করতে সকল কর্মীদের শপথের আওতায় এসে অকুতোভয় সৈনিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। ময়দানে নামতে হবে ধৈর্য্য ও সাহসিকতার সাথে। একই সাথে সরকারের জুলুম-নির্যাতন থেকে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে সর্বাচ্চ ত্যাগ ও কুরবানীর নজরানা পেশ করতে হবে। তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে সকলকে নতুন করে শপথ গ্রহণের আহবান জানান।
মহানগরী সেক্রেটারি বলেন, সরকার দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা বারবার পাতানো ও ষড়ন্ত্রের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে জনগণকে অপশাসন-দুঃশাসন ছাড়া কিছুই দিতে পারে নি। সরকার আগামীতে একই কায়দায় এবং ইভিএম যন্ত্রের মাধ্যমে ডিজিটাল কারচুপী করে কথিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চায়। কিন্তু সচেতন জনতা সরকারের সে ষড়যন্ত্র কখনোই সফল হতে দেবে না। তিনি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য অবিলম্বে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে সরকারকে জনমত যাচাইয়ের আহবান জানান। অন্যথায় দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে জনগণই গণদাবি আদায় করবে-ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, আসন্ন সরকার পতনের আন্দোলন কেন্দ্র করে কেউ কেউ জাতীয় ঐক্য বিনষ্টের জন্য নানাবিধ বিভ্রন্তিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছেন। তারা জামায়াতের স্বার্থে ফ্যাসীবাদী সরকারের সখ্যতার কল্পকাহিনী প্রচার করছে। কিন্তু একথা কারোই অজানা নয় যে, বর্তমান সরকারের আমলে জামায়াতই সবচেয়ে বেশি নিগ্রহের শিকার হয়েছে। এমনকি সরকার সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে জামায়াতের শীর্ষনেতাদের একের পর এক হত্যা করে দেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করেছে। তাই আসন্ন আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করতে কোন অপপ্রচার বা ষড়যন্ত্রই সফল হবে না বরং জামায়াতে ইসলামী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ও জনতার মুক্তির সকল আন্দোলনেই প্রথম কাতারে থাকবে-ইনশাআল্লাহ। তিনি ভেদাভেদ ভুলে সকলকে রাজপথে একদফার আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।