ই-জিপি সিস্টেম পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। মেয়াদ বৃদ্ধির কারণে তাদের পেছনে ১৫ মাসে ব্যয় হবে ৫১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। বর্তমানে প্রকল্পটিতে মূল পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান জিএসএস ইনফোটেক লিমিটেড। এর সাথে যৌথভাবে উপপরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড (আইটি বিভাগ) ও দোহাটেক নিউ মিডিয়া। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির আগামী বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে। বৈঠকটি কাল বুধবার অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিশ^ব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর ই-জিপি সিস্টেমের উন্নয়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে প্রকল্পটি সরাসরি (একক উৎসভিত্তিক) ক্রয় পদ্ধতিতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুনঃনিয়োগে প্রতিষ্ঠান তিনটির মেয়াদ এক বছর তিন মাস (অক্টোবর ২০২২ থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত) বাড়ানো হবে। উল্লেখ্য, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান তিনটির চলমান মেয়াদ চলতি সেপ্টেম্বরে শেষ হচ্ছে। বর্ধিত ১৫ মাসের পরামর্শক সেবার জন্য ট্যাক্স ও ভ্যাটসহ মোট ব্যয় হবে ৫১ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এই মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ডিজিটাইজিং ইমপ্লিমেনটেশন মনিটরিং অ্যান্ড পাবলিক প্রকিউরমেন্ট (ডিআইএমএপিপি) প্রকল্পের আওতায় তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর ই-জিপি সিস্টেমের উন্নয়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের ০১ জুলাই থেকে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে এবং ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। মোট প্রকল্প ব্যয় ৮৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নের পরিমাণ ৮৪ কোটি টাকা এবং বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের পরিমাণ ৭৯৮ কোটি টাকা।
প্রকল্পটিতে চারটি প্রধান কম্পোনেন্ট রয়েছে। এর মধ্যে দ্বিতীয় কম্পোনেন্ট এনহ্যান্সিং ডিজিটাইজেশন অব পাবলিক প্রকিউরমেন্টের বাংলাদেশ : ই-জিপি সিস্টেম এনহ্যান্সমেন্ট, অপারেশন অ্যান্ড মেইন্টেন্যান্স (ইওএম) কার্যক্রম বাস্তবায়নে ২০২০ সালের ৫ মার্চ দেশীয় দুই উপ-পরামর্শক প্রতিষ্ঠানসহ মূল পরামর্শক হিসেবে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান জিএসএস ইনফোটেক লিমিটেডকে নিয়োগ দেয়া হয়। চলতি সেপ্টেম্বরেই এর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ই-জিপি সিস্টেমের উন্নয়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ অব্যাহত রাখতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, আগের ধারাবাহিকতা ও বাস্তব প্রয়োজন বিবেচনায় নিয়োগকৃত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
জানা যায়, ‘কনসাল্টিং সার্ভিস ফর বাংলাদেশ : ই-জিপি সিস্টেম এনহ্যান্সমেন্ট, অপারেশন অ্যান্ড মেইন্টেন্যান্সের (ইওএম) প্যাকেজ নং সিপিটিইউ/ এএফ এস-০২’ শীর্ষক প্যাকেজের জন্য সংশোধিত টিএপিপিতে সরাসরি (একক উৎসভিত্তিক) ক্রয় পদ্ধতিতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের সংস্থান রয়েছে। চলমান ই-জিপি সিস্টেমের উন্নয়ন, পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা (ইওএম) চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর, এর ধারাবাহিকতা রক্ষা, সিস্টেমের অধিকতর উন্নয়ন অব্যাহত রাখার স্বার্থে এবং টিএপিপি-এর সার্বিক ক্রয় পরিকল্পনা ও অনুমোদিত বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা অনুযায়ী একক উৎসভিত্তিক ক্রয় পদ্ধতি অনুসারে চলমান পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে পুনঃনিয়োগের বিষয়টি ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান কর্তৃক অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ই-জিপি ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা এবং হেল্পডেস্কের কাজগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর ও নিরবচ্ছিন্নভাবে (২৪/৭) পরিচালনা করতে হয়। প্রস্তাবটি ক্রয় কমিটিতে অনুমোদনের পর আগামী ১ অক্টোবর থেকে চুক্তির কার্যকারিতা শুরু হবে এবং জিপির অধিকতর উপযোগীকরণ, পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা সার্বক্ষণিক এবং কোনো রকম বিচ্যুতি ছাড়াই অব্যাহত থাকবে।
নতুন পরামর্শক চুক্তির আওতায় যেসব কাজ পরিচালনা করা হবে সেগুলো হচ্ছে- ইজিপি সিস্টেম পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি এগ্রিড বিজনেস প্রসেস অনুযায়ী বিদ্যমান মডিউলস/ফাংশনসের উন্নয়ন ক্রয় কাজে ই-জিপি প্রক্রিয়ায় নতুন মডিউল ডেভেলপমেন্টের উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্রগুলো হচ্ছে- ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি, ইলেকট্রনিক ক্যাটালগ, সমন্বিত বিডার্স প্রোফাইল, বিজনেস ইন্টিলিজেন্ট টুল, ইন্টেগ্রেটিং উইথ আদার ন্যাশনাল সিস্টেম যেমন- এনআইডি, ভ্যাট, টিন, আইবাস++ সিস্টেম ইত্যাদি। বিজনেস রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম, ওপেন কন্ট্রাকটিং ডাটা স্ট্যান্ডার্ড। সকল পর্যায়ে ই-জিপি সিস্টেম ব্যবহারকারীদের সার্বক্ষণিক কারিগরি সহায়তার লক্ষ্যে ২৪/৭ হেল্পডেস্ক পরিচালনা। ই-জিপি সিস্টেমকে মনোলিথিক অ্যাপ্লিকেশন থেকে মাইক্রো সার্ভিসেস আর্কিটেকচারে রূপান্তরকরণ ইত্যাদি।
সোর্স : নয়া দিগন্ত