কোনোভাবেই স্বস্তি ফিরছে না বাজারে। প্রতি সপ্তাহেই কোনো না কোনো জিনিসের দাম বাড়ছেই। এই সপ্তাহে নতুন করে আবারো ঊর্ধ্বমুখী ডিম, আদা, রসুনসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। গত সপ্তাহে ৪৭ টাকা হালি ফার্মের মুরগির ডিম গতকাল বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা হালি। অন্যদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকার মতো। গত সপ্তাহের ৮০ টাকা কেজি দরের দেশি রসুন এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে। আর ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ২১৫ টাকা কেজি দরে। এছাড়া আমদানি করা আদার দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১৭০ টাকা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছে, আমদানি করা আদা, হলুদ ও রসুন আগের তুলনায় কম আসছে। এজন্য এসব পণ্যের দাম বেড়েছে।
অন্যদিকে মোকামে ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে বেশি দামে ডিম বিক্রি করার কথা জানিয়েছে তারা। আগারগাঁও বিএনপি বাজারের ব্যবসায়ী সাত্তার বলেন, ১০ দিন আগে প্রতিটি ডিম পাইকারি কিনেছি ৯ টাকা ৫০ পয়সা করে। ২০০ ডিম ১৯০০ টাকায় কিনতে হয়েছে। গত বুধবার থেকে ১০ টাকা ৭০ পয়সা প্রতিটি ডিম কিনতে হয়েছে। ২০০ ডিম কিনেছি ২১০০ টাকায়।
এরমধ্যে গাড়িভাড়া তো আছেই। এজন্য ডিমের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। আমাদেরকেও বেশি দামে ডিম কিনতে হচ্ছে। এদিকে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০ টাকা। এছাড়া লেয়ার মুরগি ৩০০ টাকা এবং সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০ টাকা, আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা দরে। মুরগি ক্রেতা সাজিদ হক বলেন, মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। কয়েক মাস আগেও ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি কিনেছি। কিন্তু আগস্টের পর থেকে মুরগির দাম একবার কমে আবার বাড়ে। এভাবে বাড়তে বাড়তে এখন এক কেজি ১৮০ টাকায় কিনতে হয়েছে। যদিও কিছুদিন আগে হঠাৎ করে আরও বেড়ে গিয়েছিল। চালের বাজারে এখনো অস্থিরতা বিরাজ করছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহে চিকন চাল ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৭৩ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৬২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া সরু চাল এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৬৩ টাকা কেজি দরে। আর ৫৬ টাকা কেজি দরের মাঝারি সাইজের চাল এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা কেজি দরে।
খুচরা বাজারে ব্রি-২৮ চালের কেজি ৬০ টাকা, মিনিকেট ৭০-৭৫ টাকা, গুটি স্বর্ণা ৫৫ টাকা, স্বর্ণা ৫০ টাকা, নাজিরশাইল ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে একই আটার দাম ছিল ৫২ টাকা কেজি। অর্থাৎ কেজিতে বেড়েছে ৩ টাকার মতো। এছাড়া ময়দার (প্যাকেট) দাম কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে এই প্যাকেট ময়দার দাম ছিল ৬৩ টাকা কেজি। রাজধানীর তালতলা বাজারে আসা মামুন বলেন, বাজারে সবকিছুর দাম বেড়েছে। এটা নতুন কিছু না। এ কারণে বাধ্য হয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনা কমিয়ে দিয়েছি। তাছাড়া তো আমাদের কিছু করার নাই। বিএনপি বাজার এলাকার ক্রেতা রাশেদ বলেন, চাল, ডিম, মাছ, মুরগি, সবজির বাজারে যেতেই মন চায় না। তারপরও যেতে হয়। ক্ষুধা নিবারণ তো করতে হবে। কোনো পণ্যের দাম কমলে দেখা যায় এই পণ্য ধাপে ধাপে বাড়তে থাকে। আমরা বাজার মূল্য নিয়ে অতিষ্ঠ হয়ে গেছি।
সোর্স : মানব জমিন