রাজধানীর ঢাকার হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ছে। এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গতকাল নতুন করে আরো ১২৫ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ে সারাদেশে আরো ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মশাবাহিত রোগটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ জনে। গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২২ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত সারাদেশে নতুন করে আরো ১২৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। নতুন ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ৯২ জন ঢাকায় এবং ৩৩ জন ঢাকার বাইরে চিকিৎসাধীন।
এ নিয়ে বর্তমানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ১৫১৪ জন ভর্তি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৪৭টি ডেঙ্গু ডেডিকেটেড হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১১৭৪ জন। এছাড়া ৩৪০ জন ঢাকার বাইরে চিকিৎসাধীন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য মতে, চলতি বছরের প্রথম দিন (১ জানুয়ারি) থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ১৩ হাজার জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১১ হাজার ৪৩৬ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৫০ জন।
প্রতিবছর বর্ষাকালে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময়ে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ এ সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
শ্যামলীর বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউটে গিয়ে দেখা যায় ৪৫ জন শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৭ জন ভর্তি হয়েছে। এছাড়া আইসিইউতে আছে ৪ জন। এই মাসে ২ শিশু চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। ডেঙ্গু ওয়ার্ড খালি না থাকায় অতিরিক্ত শিশুদের চিকিৎসা হচ্ছে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত জানুয়ারিতে ২ জন, মার্চে ১ জন, এপ্রিলে ৬ জন, মে মাসে ৯ জন, জুনে ৫১ জন, জুলাইয়ে ১১৫ , আগস্টে ১৪০ এবং সেপ্টেম্বরে এখন পর্যন্ত ১২০ জনের মতো ইতোমধ্যে ভর্তি হয়েছে।
চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় মে মাস থেকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। তারা জানান, এবার রোগীদের বোঝা যাচ্ছে না। কারণ হঠাৎ করেই তাদের পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যায়। বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউটের পরিচালক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রতি মুহূর্তে আমাদের এখানে রোগী ভর্তি হয় এবং ক্রিটিক্যাল রোগীর একটা চাপের জন্য ১৬টি বেড বরাদ্দ করে রেখেছি। একটা টিম করে দেওয়া হয়েছে, টিমের মাধ্যমে চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিচ্ছেন। রাজধানীর অন্যান্য হাসপাতালেও এই অবস্থা। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।
সোর্স : ইনকিলাব