দেশে দুটি ঘাতক ব্যাধি ডেঙ্গু ও কভিড-১৯-এর প্রকোপ বাড়ছে।
ডেঙ্গুতে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ১২৫ জন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত রোগী বাড়ার সঙ্গে শনাক্ত হারও বাড়ছে।
বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫.৩৮ শতাংশ। এ সময় মারা গেছে একজন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে ডেঙ্গু ও করোনার এসব তথ্য জানা যায়। অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম জানায়, গতকাল দুজনের মৃত্যু নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে সারা দেশে এ পর্যন্ত ৫০ জন মারা গেছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৩ জন (এর মধ্যে কক্সবাজারে ১৮ জন) ও বরিশাল বিভাগে চারজন।
সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে মোট ১৩ হাজার রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ভর্তি সর্ব মোট ১০ হাজার ১০৯ জন। ঢাকার বাইরে অন্যান্য বিভাগে দুই হাজার ৮৯১ রোগী ভর্তি। ঢাকার বাইরে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক এক হাজার ৬৮৪ জন রোগী ভর্তি চট্টগ্রামে। ১১ হাজার ৪৩৬ রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।
সেপ্টেম্বরের ২৩ দিনে ২৯ জনের মৃত্যু ও ছয় হাজার ৮১৯ রোগী ভর্তির খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সর্বশেষ ভর্তি ১২৫ রোগীর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৯২ জন ও অন্যান্য বিভাগের ৩৩ জন ছিলেন।
করোনা শনাক্ত ১৫% ছাড়াল
চলতি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে করোনার নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ৫ শতাংশের কাছাকাছি। বর্তমানে তা ১৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এ মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হিসাবে শনাক্ত হচ্ছিল ২০০ থেকে ৩০০ জন। বর্তমানে তা সাত শর কাছাকাছি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনসুারে, গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত চার হাজার ৪০টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নতুন ও পুরনো মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয় চার হাজার ৩১টি। এতে শনাক্তের হার বেড়ে ১৫.৩৮ শতাংশ হয়েছে। আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ছিল ১৪.১৩ শতাংশ।
এই পরিস্থিতি সম্পর্কে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নির্ণয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণের প্রকৃত অবস্থা অজানাই থেকে যাচ্ছে। কারণ উপসর্গ থাকলেও অনেকে পরীক্ষা করাচ্ছে না। এক দিনে কমপক্ষে ১০ হাজার নমুনা পরীক্ষা হলে প্রকৃত অবস্থার কাছাকাছি ধারণা পাওয়া সম্ভব। কিন্তু নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে পাঁচ হাজারের নিচে। এতে শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি হলেও এটি উদ্বেগের কি না, তা বলা যাবে না।
তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো অবস্থা না হলে অনেকেই করোনা পরীক্ষা করাচ্ছে না। অনেকে আক্রান্ত হয়েও বাইরে যত্রতত্র ঘোরাফেরা করছে। এতে সংক্রমণ আরো বাড়বে। তা ছাড়া করোনার যে ধরন এখন পাওয়া যাচ্ছে, সেই ওমিক্রন এমনিতেই দ্রুত সংক্রমণ ঘটায়। ’
ডা. মুশতাক হোসেন আরো বলেন, জীবন-জীবিকার তাগিদেই অনেকে করোনায় আক্রান্ত হয়েও বিষয়টি গোপন রাখছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমণে আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তির বয়স ৫১ থেকে ৬১ বছরের মধ্যে এবং তিনি সিলেট বিভাগের বাসিন্দা। এ সময় ৬২০ জন নতুন করে শনাক্ত হয়েছে। আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছিল ৬৭৮ জন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়েছে ৩৪৫ জন। এখন পর্যন্ত করোনামুক্ত হয়েছে ১৯ লাখ ৬২ হাজার ১৬৪ জন। এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছে ২০ লাখ ২০ হাজার ৭৬৮ জন। আর মারা গেছে ২৯ হাজার ৩৪৭ জন।
সোর্স : কালের কন্ঠ