আমদানি করা চীনা আদায় ঝাঁজ তেমন না থাকলেও দামে ঝাঁজ পুরোপুরি। সপ্তাহের ব্যবধানে এই আদা কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়ে এখন ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। দেশি আদার দামও কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। আমদানি করা রসুন কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে এখন ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা।
অবশ্য দেশি রসুন আগের দাম ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজিতে স্থির। মুরগি, ডিম, চাল, মাছ ও সবজির বাজার চড়া।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চীন থেকে আনা আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, গত সপ্তাহে যা ছিল ১২০ টাকা। দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়, যা আগে ছিল ৯০ থেকে ১০০ টাকা। আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১১০ থেকে ১২০ টাকা। দেশি রসুনের দাম বাড়েনি।
ব্রয়লার মুরগি আগের বাড়তি দাম ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগির দাম অবশ্য ৩০০ টাকা কেজিতে নেমে এসেছে। প্রচলিত দেশি মুরগি আগের দাম কেজিপ্রতি ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের দাম কমেনি। প্রতি ডজন ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চালের দাম এখনো চড়া। মোটা চাল ব্রি-২৮ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, চিকন চাল মিনিকেট ৭৫ টাকা ও নাজিরশাইল ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের আদা, পেঁয়াজ, রসুন ও আলুর পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গত কয়েক দিনের ব্যবধানে খুচরা বাজারে আমদানি করা ও দেশি—দুই ধরনের আদার দাম বেড়েছে। আমদানি করা আদা খুচরায় কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত এবং দেশি আদা কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে গেছে। ’
আদা-রসুন-পেঁয়াজের রাজধানীর সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার শ্যামবাজার। এ বাজারের আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই আমদানি করা এসব পণ্যে তাঁরা লোকসান দিয়ে যাচ্ছেন। এ কারণে আদা-রসুনের আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে সরবরাহ কিছুটা কমে যাওয়ায় দাম বাড়ছে।
শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং আদা, রসুন ও পেঁয়াজ আমদানিকারক হাজি মো. মাজেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এসব পণ্যের দাম খুচরা বাজারে যতটুকু বেড়েছে, পাইকারি বাজারে তেমন বাড়েনি। কিছুটা বেড়েছে আদা-রসুনের দাম। তবে পেঁয়াজের দাম বাড়েনি। ’
কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের মেসার্স মা আয়েশা ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী মো. আমজাদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির বাজারে তেমন পরিবর্তন আসেনি। ব্রয়লার আগের দামেই ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি আগের দাম ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। ’
জোয়ারসাহারা বাজারের মেসার্স ভাই ভাই স্টোরের ব্যবসায়ী মো. নজরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সপ্তাহের ব্যবধানে বেশি বেড়েছে আদার দাম। গত সপ্তাহে আমদানি করা আদা বিক্রি করেছি কেজি ১২০ টাকা, দাম বাড়ার কারণে এখন বিক্রি করছি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। দেশি আদার দামও বেড়েছে। গত সপ্তাহে বিক্রি করেছি ৯০ থেকে ১০০ টাকায়, এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ১২০ টাকায়। আমদানি করা রসুনের দাম মানভেদে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। দেশি রসুন ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়। ’
মাছের বাজার
সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দামে পরিবর্তন নেই। আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের রুই ২৬০ থেকে ৩০০ টাকা, আড়াই থেকে তিন কেজি ওজনের রুই ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাশ ১৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বড় কাতল কেজি ৩৫০ টাকা। মাঝারি পাবদা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা কেজি, ৫০০ গ্রাম হলে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা।
সোর্স : কালের কন্ঠ