রাজধানীর মধ্য বাড্ডার মাটির গলিতে দুই মাস ধরে চলছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ড্রেনেজ লাইনের কাজ। পুরনো পাইপ তুলে বসানো হচ্ছে নতুন পাইপ। নতুন পাইপ বসানো হলেও পুরনো পাইপ সরানো হয়নি। এ কারণে অনেকটা ধ্বংসস্তূপে ছেয়ে আছে অপ্রশস্ত এই গলি।
বিজ্ঞাপন
এতে যান চলাচল বন্ধ আছে, আর স্থানীয় লোকজন ঝুঁকি নিয়ে কোনোভাবে রাস্তা পার হয়। যদিও এমন উন্নয়নকাজের আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে জনভোগান্তি না হওয়ার শর্ত দিয়ে থাকে ডিএনসিসি। কিন্তু এই শর্ত মানেনি ইশিকা কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
মধ্য বাড্ডা এলাকার লিংক রোডের পাশেই মাটির গলিতে গতকাল বুধবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, নতুন পাইপের মুখেও এখনো ঢাকনা বসানো শুরু হয়নি। এলাকাবাসী জানায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অদূরদর্শিতার কারণে তাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রাস্তা যত ছোটই হোক, তারা (ঠিকাদার) যদি সামনের দিক থেকে (গলির শেষ থেকে) কাজ করতে করতে আসত তাহলে পুরনো পাইপ এবং কাজ করার পর বর্জ্যগুলো সহজে সরিয়ে নিতে পারত।
পাশের বাড্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু জাফরা নিদাতকে নিয়ে যাচ্ছিলেন তার মা সানজিদা হক। তিনি বলেন, ‘নতুন পাইপের মুখেও কোনো ঢাকনা দেওয়া হয়নি। বাচ্চা নিয়ে যেতে ভয় করে। কখন পড়ে যায়। ’ গলির মুদি দোকানি মো. সুমন বলেন, ‘বাইরের ক্রেতা তো দূরের কথা, পাশের বাসাবাড়ির লোকজনই দোকানে আসতে পারে না। কয়েক দিন ধরে কাজ বন্ধ হয়ে আছে। ’
ইশিকা কনস্ট্রাকশনের কর্মকর্তা রিপন আহমেদ বলেন, ‘গলির রাস্তাটি একমুখী হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। কাজের বর্জ্যগুলো সরানো যাচ্ছে না। চেষ্টা করতেছি। অনেকেই না বুঝে অভিযোগ করছে। বেঁধে দেওয়া সময়ের আগেই কাজ শেষ করা হবে। যদি এর মধ্যে কাজ শেষ না হয় তাহলে প্রধান প্রকৌশলীর কাছে কথা বলে সময় বাড়িয়ে নেব। ’ উন্নয়নকাজের স্থানে পাহারায় থাকা ইশিকার কর্মচারী বাপন বলেন, ‘রাস্তাটি ছোট হওয়ায় পাইপের ঢাকনার কাজ এখানে করা যাচ্ছে না। অন্য জায়গায় রডের জালি দিয়ে ঢাকনা বানানো হচ্ছে। দু-এক দিনের মধ্যে ঢাকনা বসিয়ে সড়কটি ঢালাই করা হবে। ’
এলাকাটি সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডে। এর কাউন্সিলর মাসুম গনি বলেন, ‘কাজ চলমান থাকায় কিছুটা ভোগান্তি তো হচ্ছেই। আসলে মনে হয়, মাটি ডাবার (বসার) জন্য দেরি করছে। ড্রেন করলে মাটি বসতে একটু সময় লাগে। ’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যেকোনো উন্নয়নকাজের ক্ষেত্রে জনভোগান্তি না হওয়ার বিষয়ে শর্ত দেওয়া থাকে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজের আগেই সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়। যদি ড্রেনেজের বা অন্য কাজ করতে গিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা (রাস্তা) না করা হয় তবে ডিএনসিসির সংশ্লিষ্ট বিভাগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভোগান্তি যাতে না হয় সে বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে। ’
সোর্স : কালের কন্ঠ