বাড়িতে কেউ বাস করেন না। নেই কোনো বকেয়া। তবুও পাবনার চাটমোহর পৌর শহরের একটি বাড়িতে সেপ্টেম্বর মাসে বিদ্যুৎ বিল এসেছে প্রায় ১১ লাখ টাকা! পাবনা পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর এমন ভৌতিক বিলে দিশেহারা ওই পরিবারের সদস্যরা। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর উপজেলাজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এদিকে দায় এড়ানোর জন্য তড়িঘড়ি করে বিল প্রস্তুতকারী নারী কর্মীকে শোকজ করেছে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, পৌর শহরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী অধীর কুমার সরকার প্রায় ৬ মাস আগে মারা যান। চাকরিজনিত কারণে তার সন্তানরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় থাকেন। অধীর কুমার সরকারের স্ত্রী চিকিৎসার জন্য কয়েক মাস আগে ভারতে গিয়েছেন। এমতাবস্থায় কয়েক মাস ধরে বাড়িটি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। তবে কোনো মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ছিল না। রক্ষণাবেক্ষণকারী নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতেন।
এর মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসের বিদ্যুৎ বিল পাঠানো হয় ১০ লাখ ৮২ হাজার ৬১ টাকা। এতে উল্লেখ রয়েছে, বিল দিতে দেরি হলে বিলম্ব মাশুলসহ দিতে হবে ১১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৮৭ টাকা! ওই বিলে বিদ্যুৎ ব্যবহার দেখানো হয় ৯০ হাজার ১৫০ ইউনিট। বিল প্রস্তুতকারী হিসাবে সাক্ষর রয়েছে আসমা নামের এক নারী কর্মী এবং এজিএমের (অর্থ)। বিলটি ১৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রক্ষণাবেক্ষণকারী হাতে পান। বিপুল অঙ্কের বিদ্যুৎ বিলের বিষয়টি জানতে পেরে চমকে ওঠেন অধীর কুমারের সন্তানেরা।
বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণে থাকা ব্যক্তি পল্লি বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার, সহকারী জেনারেল ম্যানেজারকে (অর্থ) জানানোর পর তারা নতুন করে ৮২২ টাকার আরেকটি বিল প্রস্তুত করে পাঠান। তবে রক্ষণাবেক্ষণকারী নতুন বিল নিতে অস্বীকৃতি জানান। পাবনা পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (অর্থ) আবদুল হান্নান যুগান্তরকে জানান, বিল বিতরণের সময়ই ভুল ধরা পড়ে। বিলটি সংশোধন করে ভুল বিলটি বারবার চাওয়ার পরেও দেয়নি। বিল প্রস্তুতকারীকে শোকজ করে তিন কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে। পাবনা পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার আকমল হোসেন যুগান্তরকে বলেন, আমার ৪ লাখ গ্রাহক। এটা নেয়াহেতই ভুল হয়েছে। একজন মিটার রিডারকে দিয়ে বিলটি সংশোধন করে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ওই বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণে থাকা ব্যক্তি নতুন বিল নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং এটা নিয়ে তালগোল পাকাচ্ছে। বিল প্রস্তুতকারীকে শোকজ করা হয়েছে। অবশ্যই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোর্স : যুগান্তর