বাজারে এমন কোনো পণ্য পাওয়া যাবে না যার দাম বাড়েনি। সপ্তাহ, মাস বা বছরের ব্যবধানে প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়েছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দ্রব্যমূল্য তালিকায়ও দাম বৃদ্ধির এ চিত্র উঠে এসেছে।
সংস্থাটির তথ্য মতে, বছরের ব্যবধানে পণ্যের দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ৫১ শতাংশ পর্যন্ত।
টিসিবি প্রতিদিন রাজধানীর কাওরানবাজার ও মালিবাগ কাঁচাবাজারসহ মোট ১৩টি খুচরা বাজারের ২৮ ধরনের পণ্য নিয়ে দামের তালিকা তৈরি করে। সেই তালিকা অনুযায়ী, বছরের ব্যবধানে প্রতি কেজি চাল সর্বোচ্চ ১১ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
কেজিপ্রতি আটা ৫০ ও ময়দা ৫১ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বছরের ব্যবধানে সয়াবিন ও পামতেলের দাম ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মসুর ও অ্যাঙ্করের ডালের দাম ৪৪ শতাংশ বেড়েছে। বছরের ব্যবধানে আলু ১৭ শতাংশ, শুকনা মরিচ ৪৪ শতাংশ, হলুদ ৩৪ শতাংশ, দারুচিনি ও লবঙ্গ ১০ শতাংশ দাম বেড়েছে।
এ ছাড়া কেজিপ্রতি ধনের দাম বেড়েছে ১৩ শতাংশ। পাশাপাশি প্রতি কেজি গরুর মাংস ১৬ শতাংশ, খাসির মাংস ১১ শতাংশ ও ব্রয়লার মুরগি ১৩ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি গুঁড়া দুধ সর্বোচ্চ ২৪ শতাংশ দাম বেড়েছে। এ ছাড়া বছরের ব্যবধানে প্রতি কেজি চিনি ১৭ শতাংশ, খেজুর ১০ শতাংশ ও ফার্মের ডিম প্রতি হালি ৩০ শতাংশ দাম বেড়েছে।
জানতে চাইলে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, দেশে বিভিন্ন কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তার অন্যতম কারণ। কিন্তু দেশে অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের জন্যও পণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে।
সব মিলিয়ে দ্রব্যমূল্য ক্রেতার নাগালে রাখতে যা যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার তা সরকারকে এখনই নিতে হবে। তা না হলে সামনে আরও সমস্যা হতে পারে। পাশাপাশি তদারকি জোরদার করতে হবে। যাতে অতি মুনাফালোভি ব্যবসায়ীরা ক্রেতার পকেট কাটতে না পারে।
টিসিবির মূল্য তালিকা বলছে, বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি সরু চাল বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকা, যা গত বছর একই সময় ৬৫ টাকা ছিল। প্রতি কেজি প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ৫৪ টাকা, যা আগে ৩৬ টাকা ছিল।
প্রতি কেজি প্যাকেট ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, যা গত বছর একই সময় ৪৫ টাকা ছিল। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ১৫০ টাকা ছিল। সরু মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা, যা গত বছর একই সময় ১১০ টাকা ছিল।
দেশি শুকনা মরিচ ৩০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ২১০ টাকা ছিল। দেশি হলুদ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা, যা এক বছর আগে ছিল ১৮০ টাকা। দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, যা আগে ৮০ টাকা ছিল।
বছরের ব্যবধানে কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৮০ ও খাসির মাংস এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ১৫ টাকা, বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।
গুঁড়া দুধের মধ্যে মার্কস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭২০ টাকা, যা আগে ছিল ৯৫০ টাকা। প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮২ টাকা, যা গত বছর একই সময় ৭০ টাকা ছিল। প্রতি হালি (চার পিস) ফার্মের ডিম ৪২ টাকা, যা আগে ৩৩ টাকা ছিল।
সোর্স : যুগান্তর