ইবনে নূরুল হুদা
শুধু আমাদের দেশে নয় বরং বিশে^র প্রায় সকল দেশেই প্রতিনিয়ত যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। আর এমন নিন্দনীয় ঘটনার অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে শিক্ষাঙ্গনগুলো। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের দেশে এ প্রবণতা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও বৃদ্ধি পেয়েছে যৌন নিপীড়নের ঘটনা। যা নারী শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎকে পর্যুদস্ত করে তুলেছে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ২০১১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা বিভাগ বিশ্ববিদ্যালগুলোকে একটি ‘প্রিয় সহকর্মী’ (ডিয়ার কলিগ) চিঠি প্রদান করা হয়, যাতে ক্যাম্পাসে যৌন নিপড়নের ঘটনা হ্রাস করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পদ্ধতির বিষয়ে একাডেমিক প্রতিষ্ঠানকে পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। এতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ^বিদ্যালয়গুলোতে যৌন নির্যাতন বিষয়ক ভয়াবহ অবস্থার প্রমাণ মেলে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোর কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে যৌন নিপীড়ন বিষয়ক গবেষণার ফলাফলে এক জটিল চিত্র ফুটে উঠেছে। ১৯৯৩ সালে কানাডীয় কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি জাতীয় প্রতিনিধিত্বমূলক নমুনার উপর করা এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, ২৮% নারী পূর্ববর্তী বছরে কোন না কোন ধরনের যৌন নিপীড়নের সম্মুখীন হয়েছেন এবং ৪৫% নারী কলেজে প্রবেশের পর থেকে কোন না কোন ধরনের যৌন নিপীড়নের সম্মুখীন হয়েছেন। ১৯৯১ সালে নিউজিল্যান্ডে ৩৪৭ জন স্নাতকের উপর করা এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, ২৫.৩% ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টার অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছে এবং ৫১.৬% কোন না কোন ধরনের যৌন নিপীড়নের সম্মুখীন হয়েছে। ২০১১ সালে যুক্তরাজ্যে শিক্ষার্থীদের উপর করা এক গবেষণায় দেখা গেছে যে ২৫% নারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় এক ধরনের যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন এবং ৭% নারী কলেজছাত্রী হিসেবে ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টার অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন।
বৈশ্বিক যৌন নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের দেশে যৌন নিপীড়নের ব্যাপকতা বেড়েছে। নিরাপদ থাকছে না শিক্ষাঙ্গনও। এমনকি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও যৌন নির্যাতনের ঘটনার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। আর দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ ধরনের ঘটনা অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। এসব নিন্দনীয় ঘটনার সাথে শুধু শিক্ষার্থীরা নয় বরং একশ্রেণির শিক্ষকদেরও জড়িত থাকার জোরালো অভিযোগ রয়েছে। ফলে এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা প্রতিরোধে দেশের ১১৪টি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হলেও ইতিবাচক কোন ফল পাওয়া যাচ্ছে না। কর্তৃপক্ষের অনীহা, উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে কর্মহীন ও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে এসব কমিটি। ফলে ভিকটিমরা কোনভাবেই প্রতিকার পাচ্ছেন না। আর অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়ার কারণেই দেশে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন যৌন হয়রানির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ফলে অনিরাপদ হয়ে পড়েছে নারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যৌন হয়রানির ঘটনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার ঘটনাগুলো দেশের উচ্চ আদালত আমলে নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে জানা গেছে, আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। এরপরও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) এখন পর্যন্ত এতদবিষয়ক কোন কমিটি গঠন করা হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি থাকলেও তা পাঁচ বছর ধরে দৃশ্যত অকার্যকর। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী, খুলনা ও কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটির কার্যকারিতা নেই। জাহাঙ্গীরনগর এবং সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) কমিটি থাকলেও নেই উল্লেখযোগ্য কোন তৎপরতা। অন্যদিকে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ইস্টওয়েস্ট, ইউনির্ভাসিটি অব লিবারেল আর্টস, সেন্টার অব উইমেন্স, বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি নিয়মিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাঠাচ্ছে বলে জানা গেছে। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতির কোন উন্নতি নেই।
ইউজিসির দেয়া তথ্যমতে, দেশের ৫২টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৪২টিতে কমিটি রয়েছে, নেই ১০টিতে। কমিটি নেই বুয়েট, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ইউজিসিকে কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে। দেশের ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৭২টিতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু এসব কমিটি শিক্ষাঙ্গনে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কার্যকর কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না।
ইউজিসির যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেল সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, ২০০৯ সালের ১৪ মে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কয়েকটি দিকনির্দেশনাসহ রায় দেন হাইকোর্ট। ওই রায়ে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে অভিযোগ কেন্দ্র এবং তা পরিচালনার জন্য ন্যূনতম পাঁচ সদস্যের কমিটি থাকার নির্দেশ দেয়া হয়। সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, ‘এ পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি ১০৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ইউএন উইমেনের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেসব অভিযোগ আসবে তারা সেটি খতিয়ে দেখে আমাদের কাছে প্রতিবেদন দেবে। তার ভিত্তিতে ইউজিসি পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে অধিকাংশই এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাঠাচ্ছে না’। ফলে পরিস্থিতির কোন উন্নতি হচ্ছে না বরং বাড়ছে যৌন নিপীড়ন।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ২ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিনারী কমিটি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রসহ চারজনকে আটক করেছে র্যাব। যা দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নির্যাতনের ভয়াবহতাকেই স্মরণ করিয়ে দেয়।
মূলত, দেশের সকল পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখন যৌন নির্যাতনের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। গত ১০ ডিসেম্বর পত্রিকার রিপোর্ট ছিলÑঅবশেষে প্রধান শিক্ষক ও বখাটের দ্বারা একাধিকবার ধর্ষণের শিকার সেই পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সিজারিয়ানের মাধ্যমে ছেলে সন্তানের মা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের ভোজমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। আর এভাবে প্রায় সময় দেখা যায়, পত্রিকায় পাতায় আঁৎকে উঠার মতো শিরোনাম ‘শিশুর কোলে শিশু’। যা আমাদের লাগামহীন অবক্ষয়ের কথায় স্মরণ করিয়ে দেয়।
সম্প্রতি দেশসেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুলের বসুন্ধরা শাখায় শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রী নিপীড়নের ন্যক্কারজনক খবর ছাপা হয়েছে পত্র-পত্রিকায়। জানা গেছে, ওই শিক্ষক ছাত্রী কেলেঙ্কারির অভিযোগে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকেও বহিষ্কৃত হন। আরো জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির বসুন্ধরা শাখার আরো কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধেও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। যা রীতিমত আঁৎকে ওঠার মত।
এখানেই শেষ নয়। ঈশ্বরদীর একটি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওই স্কুলের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করতে গেলে তার চিৎকারে এলাকাবাসী দৌড়ে এসে ছাত্রীটিকে উদ্ধার করে এবং প্রধান শিক্ষককে আটকে রেখে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। জানা যায়, আদালত অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে চার মাসের বিনাশ্রম কারাদ-ে দ-িত করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের একটি বিদ্যালয়ের একজন ইংরেজি শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ তাকেও গ্রেফতার করেছে বলে জানা গেছে।
শিক্ষকের নির্যাতন বা যৌন নির্যাতনের ভয়ে অনেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। সামান্য শাস্তি দেয়ার নামেও অনেক সময় ছাত্রীদের গায়ে শিক্ষকের হাত পড়ছে। গ্রামে স্কুলের বড় বড় ছাত্রীর গায়ে অনেক শিক্ষক হাত দেন। বেশির ভাগ ছাত্রীর সরলতার সুযোগ নিয়েই শিক্ষকরা এসব করে থাকেন।
একশ্রেণির শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের ওপর চড়াও হওয়ার নানা সুযোগ ও কৌশল খুঁজার ঘৃণ্য অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তবে ভালো শিক্ষক যে নেই তা বলা যাবে না। মনোবিজ্ঞানীরা বলেছেন, নির্যাতনের কারণে অনেকে মানসিক ভারসাম্যও হারিয়ে ফেলতে পারে। অকালে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার পেছনে এটিও কারণ বলে জানা গেছে। অনেকে শাস্তির ভয়ে স্কুলে না গিয়ে নানা অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয় অল্প বয়সেও। যা কোনভাবেই কাম্য নয়।
আমাদের দেশের সরকার শিক্ষার হার বাড়ানোর ব্যাপারে বেশি উদ্যোগী। কিন্তু আগে বাড়ানো উচিত শিক্ষার মান। শিক্ষার মান বাড়ানোর প্রশ্ন উঠলে অবশ্য শিক্ষকদের উন্নত মানসিকতার প্রশ্ন এমনিতেই চলে আসে। এ দেশে শিক্ষকদের মেধা বৃদ্ধি, চরিত্র গঠন প্রভৃতি সম্বন্ধে সরকারি নজরদারির খুবই অভাব রয়েছে। দুর্নীতি বা নানা প্রভাব খাটিয়ে অনেকে শিক্ষকতায় ঢুকে বলেও অভিযোগের কথা শোনা যায়। দেশের কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান এতটাই নিচে নেমে গেছে যে, ছাত্রীদের পাশাপাশি শিক্ষিকাকেও যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়। এসব সংক্রান্ত সব খবর মিডিয়ায় আসে না। না হলে শিক্ষাঙ্গনে যৌন সন্ত্রাসের খবর আরো বেশি করে প্রচার হতো।
বিশ্বের অনেক দেশ আছে, যেসব দেশের প্রায় সবাই শিক্ষিত। বিশ্বের এমন কিছু দেশ রয়েছে যেসব দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যেমনÑশিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী তেমনি শিক্ষক-শিক্ষিকা বা পাঠদানকারীরাও শিক্ষার্থীদের খুব আপনজনের মতো। কিন্তু তৃতীয় বিশে^র দেশগুলো এক্ষেত্রে বেশ ব্যতিক্রম। কারণ, এসব দেশে নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তার কোন শেষ নেই। বিশেষ করে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে তা আরও প্রকট। কারণ, মাঝে মধ্যেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ছাত্রী কেলেঙ্কারির খবর প্রকাশ পাচ্ছে গণমাধ্যমে। শিক্ষকদের দেখাদেখি একশ্রেণির ছাত্র বা বখাটেরাও একের পর এক এ ধরনের জঘন্যতম ঘটনা ঘটাচ্ছে। মূলত, মাত্রাতিরিক্ত অবক্ষয়ের কারণেই আমাদের দেশের শিক্ষাঙ্গনে যৌন হয়রানির ঘটনা অশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। ফলে শিক্ষাকার্যক্রমে বড় ধরনের বিপত্তি ঘটছে। নারী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা সব সময় আতঙ্কে থাকছেন।
শিক্ষাঙ্গন অরক্ষিত ও অনিরাপদ হয়ে উঠুক তা কারোরই কাম্য নয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়ালেখার স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসুক এটিই সকলের প্রত্যাশা। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। দেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যৌনসন্ত্রাস এখন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। মূলত, দেশের শিক্ষাঙ্গনে বর্তমানের মতো যৌনসন্ত্রাস আগে কখনো দেখা যায়নি। যা রীতিমত আতঙ্কের। মূলত, শিক্ষার নামে অশিক্ষা ও কুশিক্ষার কারণেই আমাদের দেশের শিক্ষাঙ্গনগুলোতে যৌন নিপীড়নের ঘটনা অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। তাই এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য শিক্ষার সকল পর্যায়ে নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। শিক্ষার্থীদের নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করার জন্য এর কোনই বিকল্প নেই। মূলত ধর্মীয় মূল্যবোধই পারে মানুষকে যৌন সন্ত্রাসসহ যেকোন অপরাধ প্রবণতা থেকে মুক্ত রাখতে। দেশের শিক্ষাঙ্গনগুলোতে যৌন নিপীড়নসহ সার্বিক শৃঙ্খলা ফিরে আসুক এ প্রত্যাশা আপনার-আমার সকলের।
সোর্স: দৈনিক সংগ্রাম