বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, মানুষের পাশে দাড়ানোর যোগ্যতা, সাহস ও সৌভাগ্য সবার হয় না । আল্লাহ তায়ালা যাকে কবুল করেন তারাই শুধু এই সৌভাগ্য লাভ করে। জনগণের কল্যাণ করা রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান কাজ, কারণ রাষ্ট্রে কে কিভাবে আছে তা রাষ্ট্রের দায়িত্বশীলরা খুব ভালোভাবেই জানে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আজকের রাষ্ট্রের দায়িত্বশীলদের অনেকে সে সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত। রাজনৈতিক দলগুলোর মূল আদর্শ হওয়া উচিত মানুষের কল্যাণে কাজ করা। এদেশে এমন রাজনৈতিক দল নেহায়েতেই কম। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এক্ষেত্রে একেবারেই ব্যতিক্রমী। জামায়াতে ইসলামী একটি মজলুম সংগঠন হওয়ার পরও দেশের বিভিন্ন দূর্যোগে মানুষের পাশে দাড়ানোর জন্য সবার আগে ঝাপিয়ে পড়ে। সীতাকুন্ডের ভয়াবহ অগ্নিকান্ড, সিলেটের বন্যাসহ বিভিন্ন দূর্যোগে জামায়াতে ইসলামী তাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে জনগণের পাশে ছিল। একটি কল্যাণ রাষ্ট্রের দায়িত্ব হল তার নাগরিকদের মধ্যে কারা অসুবিধার মধ্যে আছে তাদের খুজে বের করে তাদের পাশে দাড়ানো। জামায়াতে ইসলামী ঠিক এই কাজটিই স্ব-উদ্যেগে করে যাচ্ছে এবং এমনই একটি কল্যাণ রাষ্ট্র কায়েম করতে চায়।
তিনি রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের রামপুরা উত্তর থানা কতৃক আয়োজিত পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে গরীব ও অসহায় পরিবাবের মাঝে ফুট প্যাকেট বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এসময় থানা আমীর জনাব মুহাম্মদ ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জনাব হাফিজুর রহামানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি ডাঃ ফখরুদ্দীন মানিক। উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য জনাব আবুল আলা রিয়াদ সহ আরো অনেকে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক মুসলমান ভাই ভাই। তাই প্রত্যেকের উচিত বিপদগ্রস্ত ও অভাবের সময় একে অন্যের প্রতি আন্তরিকভাবে সহযোগিতার হাত বাড়ানো। আল্লাহ তায়ালা কালামে পাকে এরশাদ করেছেন, ‘মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই।’ (সূরা হুজরাত, আয়াত : ১০) অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘ইমানদার পুরুষ ও ইমানদার নারী একে অপরের সহায়ক।’ (সূরা তওবা, আয়াত: ৭১)। পবিত্র কালামে হাকীমে আরো বলা হয়েছে, ‘তাদের (বিত্তশালী) ধনসম্পদে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতদের অধিকার রয়েছে।’ (সূরা জারিয়াত, আয়াত : ১৯)। অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি তথা তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে দরিদ্র, এতিম ও বন্দিদের খাদ্য দান করে।’ (সূরা দাহর, আয়াত : ৮)। সুতরাং দেশের এই দূর্যোগময় সময়ে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মাঝে ঈদকে আনন্দঘন করার জন্য সরকার ও সমাজের বিত্তবান মানুষকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, দেশে করোনা মহামারী ও চলমান ভয়াবহ বন্যাসহ বিভিন্ন দূর্যোগের কারণে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমলেও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। মূলত, সরকার সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেট ও প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই বাজার পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। ফলে দেশে দুর্ভিক্ষের প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে। মূলত, এই সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন জনদুর্ভোগ বাড়বে বৈ কমবে না। তাই সরকারের অপশাসন-দুঃশাসন থেকে বাঁচতে হলে গণপ্রতিনিধিত্বশীল গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।