বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী আল্লাহর দেয়া নির্দেশনা এবং রাসূল (সা.) অনুসৃত আদর্শের ভিত্তিতে আর্ত-মানবতার মুক্তির জন্য অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে। আর ইসলাম ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা দেয়। অসহায়-অসচ্ছল মানুষের সেবায় এগিয়ে আসা ইসলামে ইবাদত হিসাবে গণ্য করা হয়। সে দায়বদ্ধতা থেকেই ঈদের আনন্দ ভাগাভাগীর করার জন্য আমরা আপনাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি। এই সামান্য হাদিয়া আপনাদের অভাব মোচনে যৎসামান্য অবদান রাখলেও পরস্পরের মধ্যে সৌহার্দ্র ও সম্প্রীতি জোরদার করবে। তিনি আসন্ন ঈদে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ঈদকে আনন্দঘন করার জন্য সরকার ও সমাজের বিত্তবান মানুষকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের বনানী থানা আয়োজিত পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে গরীব ও অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর মিজানুর রহমান খানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুর রাফির পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি ডাঃ ফখরুদ্দীন মানিক। উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা মাওলানা মোকাররাম হোসাইন, আনোয়ার এলাহী ও মো. সাইফুল ইসলাম প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, প্রত্যেক মুসলমান ভাই ভাই। তাই প্রত্যেকের উচিত বিপদগ্রস্ত ও অভাবের সময় একে অন্যের প্রতি আন্তরিকভাবে সহযোগিতার হাত বাড়ানো। আল্লাহ তায়ালা কালামে পাকে এরশাদ করেছেন, ‘মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই।’ (সূরা হুজরাত, আয়াত : ১০) অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘ইমানদার পুরুষ ও ইমানদার নারী একে অপরের সহায়ক।’ (সূরা তওবা, আয়াত: ৭১)। পবিত্র কালামে হাকীমে আরো বলা হয়েছে, ‘তাদের (বিত্তশালী) ধনসম্পদে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতদের অধিকার রয়েছে।’ (সূরা জারিয়াত, আয়াত : ১৯)। অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি তথা তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে দরিদ্র, এতিম ও বন্দিদের খাদ্য দান করে।’ (সূরা দাহর, আয়াত : ৮)। হাদিসে রাসূল (সা.) এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তার প্রতি দয়া করেন, যে তার বান্দাদের প্রতি দয়া করে।’ (বোখারি, হাদিস : ১৭৩২)। অন্য হাদিসে বলা হয়েছে, ‘তোমরা ক্ষুধার্তকে খাদ্য দাও, অসুস্থ ব্যক্তির খোঁজ-খবর নাও, বস্ত্রহীন লোকদের বস্ত্র দাও এবং বন্দিকে মুক্ত করে দাও।’ (বোখারি, হাদিস : ২৪১৭)। মূলত, জামায়াতে ইসলামী কুরআন-সুন্নাহর আদর্শের ভিত্তিতে কল্যাণমূখী সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য সকলকে জামায়াতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, করোনা মহামারী ও চলমান ভয়াবহ বন্যার কারণে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমলেও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। মূলত, সরকার সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেট ও প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই বাজার পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। ফলে দেশে দুর্ভিক্ষের প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে। সিলেট, সুনামগঞ্জ সহ দেশের উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা হানা দিলেও সরকার দুর্গত মানুষের দুর্দশা লাঘবে কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। মূলত, এই সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন জনদুর্ভোগ বাড়বে বৈ কমবে না। তাই সরকারের অপশাসন-দুঃশাসন থেকে বাঁচতে হলে গণপ্রতিনিধিত্বশীল গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।