বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, ভারতের একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী এখন দেশটিতে ইসলাম, ইসলামী মূল্যবোধ ও ইসলামী স্মারকগুলোকে বিশেষভাবে টার্গেট করেছে। সে ধারাবাহিকতায় ক্ষমতাসীন বিজেপির মুখপাত্র নুপুর শর্মা ও নবীন কুমার জিন্দাল মহানবী (সা.) ও উম্মুল মোমেমিন হযরত আয়েশা (রা.)-কে নিয়ে আপত্তিকর কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। তিনি অবিলম্বে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের জন্য অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করে ভারত সরকারকে মুসলিম উম্মাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার আহবান জানান।
তিনি আজ ৮জুন রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ভারতের ক্ষমতাসীন দলের দুই শীর্ষনেতার মহানবী (সা.) ও হযরত আয়েশা (রা.)-কে নিয়ে আপত্তির মন্তব্যের প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য প্রত্যাহার করে মুসলিম উম্মাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এক বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি মহাখালী রেল গেইট থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে টাংগাইল বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম, মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডাঃ ফখরুদ্দীন মানিক, ঢাকা মহনগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য জিয়াউল হাসান, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, ইয়াছিন আরাফাত ও জামাল উদ্দীন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, পশ্চিম সভাপতি সাব্বির বিন হারুন ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি পারভেজ হোসেন প্রমূখ।
এম আর করিম বলেন, বাবরী মসজিদ বিতর্কে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় উদ্রবাদীরা বিজয়ী হওয়ার পর তারা এখন নতুন করে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। ধর্মান্ধরা জ্ঞানবাপী মসজিদ, আগ্রার তাজমহল ও দিল্লির কুতুব মিনার দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত। সম্প্রতি বিজেপি নেতাদের মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির পর মুসলিম দেশগুলো অতীতের নিরবতা ভঙ্গ করে এবার নড়েচেড়ে বসেছে। কাতার, কুয়েত ও ইরান ভারতের দূতদের তলব করে বিষয়টির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। এছাড়া ওআইসি, সৌদি আরব ও পাকিস্তান এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ হওয়া স্বত্তেও ক্ষমতাসীন সরকার এই দুঃখজনক ঘটনার কোন নিন্দা না করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আবেগ-অনুভূতি এবং বিশ্ব নবী (সা.) ও তার পরিবারের প্রতি চরম অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছে। তিনি গর্হিত মন্তব্যের জন্য সরকারকে জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ এবং অন্যায়ভাবে কারাগারে আটক আল্লামা সাঈদীসহ সকল আলেম-উলামার অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, ভারতের ধর্মান্ধ ও উগ্রবাদীরা মূলত ইসলাম বিরোধীতা ও মুসলিম বিদ্বেষকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানিয়েছে। মূলত, ভারতের রাজনীতিতে উগ্রবাদীদের উত্থান পুরো উপমহাদেশকেই অস্থিতিশীল করে তুলেছে। সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহে প্রমাণ হয় দেশটির উগ্রবাদীরা পরিকিল্পতভাবেই মুসলিম বিদ্বেষ উস্কে দিয়ে আগামীতে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায়। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ আলাদা। কারণ, এই ইস্যুতে পুরো মুসলিম উম্মাহই এখন ঐক্যবদ্ধ। তাই এবারের খেলা তাদের জন্যই বুমেরাং হতে বাধ্য। তিনি ভারতে মুসলিম বিদ্বেষ মোকাবেলায় ওআইসি, আবরলীগসহ বিশ্ব মুসলিমকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।