বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রটারি ডঃ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, সরকার নিজেদের সীমাহীন ব্যর্থতা ঢাকতে এবং জনগণের দৃষ্টিতে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্যই কথিত যুদ্ধাপরাধকে নতুন করে ইস্যু বানিয়েছে। সে ধারাবাহিকতায় সাতক্ষীরা থেকে দুই বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল খালেক মণ্ডলকে সাজানো মামলা, মিথ্যা ও যোগসাজসী সাক্ষীর মাধ্যমে প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করেছে। কিন্তু আত্মসচেতন জনতা সরকারের সাজানো ও পাতানো রায় কখনোই মেনে নেবে না। তিনি সরকারকে প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে অবিলম্বে আব্দুল খালেকের দণ্ডাদেশ বাতিল করে তিনি সহ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন, এটিএম আজহারুল ইসলাম সহ সকল নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার আহবান জানান। অন্যথায় দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে জনতার নেতাদের জনতাই মুক্ত করে ছাড়বে ইনশাআল্লাহ।
তিনি আজ রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল খালেক মণ্ডলের মৃত্যুদণ্ডাদেশের প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে ন্যায়ভ্রষ্ঠ দণ্ডাদেশ বাতিলের দাবিতে এক বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি বাড্ডা ব্রিজ থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে লিংক রোডে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি ডাঃ ফখরুদ্দীন মানিক, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য জিয়াউল হাসান, জামাল উদ্দীন ও মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য মু. আতাউর রহমান সরকার, মেসবাহ উদ্দীন নাঈম ও এইচ এম আতিকুর রহমান, ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, পশ্চিম সভাপতি সাব্বির আহমেদ ও সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমূখ।
ডঃ রেজাউল করিম বলেন, সরকারের অপশাসন-দুঃশাসনের কারণেই দেশ এখন আন্তর্জাতিকভাবে বন্ধুহীন রাষ্ট্রে পরিণত হতে চলেছে। ব্যাপকভিত্তিক মানবাধিকার লংঘনের কারণে সরকারের এলিট ফোর্স র্যাপিড একশন ব্যাটলিয়নের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এই সরকারের আমলে রাজনৈতিক কারণে শত শত মানুষকে গুম করা হয়েছে। তাদের ফিরে পাওয়ার জন্য স্বজনরা আহাজারী করলেও সরকার সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ করছে না বরং ভিকটিমদের স্বজনদের সাথে সরকারের মন্ত্রীরা হাসি-ঠাট্টায় লিপ্ত হচ্ছে। যা কোন স্বাধীন ও সভ্য সমাজে কাম্য নয়।
তিনি বলেন, সরকার দেশে সুশাসন উপহার দিতে ব্যর্থ হয়েছে। দেশে মূল্যস্ফীতি এখন সকল সময়ের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। এসব অপকর্মের সাথে সরকার সংশ্লিষ্টদের যোগসাজস রয়েছে। মূলত, দ্রব্যমূল্য লাগামহীন বৃদ্ধির দেশে এখন দুর্ভিক্ষাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। চরমে উঠেছে জনদুর্ভোগ। আর সরকার এসব ব্যর্থতার প্রতিবাদের জনগণ যখন রাজপথে নেমে আসতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই গণআন্দোলনকে বিভ্রান্ত করার জন্য সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে সাবেক সংসদ সদস্য মুহাদ্দিস আব্দুল খালেককে যোগসাজসী দণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। তিনি এলাকার জনপ্রিয় ব্যক্তি। তিনি নির্বাচিত ইপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়াও তিনি কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষের দায়িত্বও পালন করেছেন। তিনি যুদ্ধাপরাধী বা কোন অপরাধের সাথে যুক্ত থাকলে জনগণ ভোট দিয়ে তাকে বারবার নির্বাচিত করতেন না। মূলত, সরকারকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই তাকে ন্যায়ভ্রষ্ঠ দণ্ডাদেশ দিয়েছে। তাই জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে এই জুলুমবাজার সরকারের পতনের কোন বিকল্প নেই। তিনি অগণতান্ত্রিক সরকারের পতনের লক্ষ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।