বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, ‘৫২-র ভাষা আন্দোলন শুধু ভাষার জন্য নয় বরং এই আন্দোলন স্বাধীকার আন্দোলনের জোরালো ভিত্তি রচনা করেছিল। সে পথ ধরেই আমরা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। কিন্তু অতীব পরিতাপের বিষয়টি যে, দীর্ঘকালের পরিক্রমায় আজও আমরা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও বাকস্বাধীনতা ফিরে পাইনি। মহল বিশেষের অহমিকা ও ক্ষমতালিপ্সার কারণেই ভাষা শহীদদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি। তিনি ভাষা আন্দোলনের শহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের যথাযথ রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। মহানগরী আমীর ভাষা দিবসের প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন এবং সকল অংশগ্রহণকারীদের আন্তরিক মোবারকবাদ জানান।
রাজধানীর একটি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের হাতিরঝিল থানা পূর্ব আয়োজিত মাতৃভাষা দিবস প্রতিযোগিতা-২০২২-এর পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। থানা আমীর এ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান আজমীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি খন্দকার রুহুল আমিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডঃ আবু রাফে, প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল হাকিম ও মাকসুদুর রহমান প্রমূখ।
মহানগরী আমীর বলেন, ১৯৪৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল। তমুদ্দন মজলিস এ আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। অধ্যাপক গোলাম আযম ছিলেন এই আন্দোলনের অগ্রসৈনিক। তিনি মাতৃভাষা বাংলার দাবিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কাছে মানপত্র পাঠ করেছিলেন। অধ্যাপক গোলাম আযম ডাকসু’র নির্বাচিত জিএস হলেও রাজনৈতিক সংকীর্ণতার কারণে ডাকসুর নাম ফলক থেকে তার নাম মুছে ফেলা হয়েছে। মূলত, মহল বিশেষের হীন্যমনতার কারণেই ভাষা আন্দোলনের কৃতিত্ব থেকে অধ্যাপক গোলাম আযমকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। কিন্তু এতে তারা সফল হয়নি; হবেও না বরং ইতিহাসই প্রকৃত ভাষা সৈনিকদের মর্যাদা নিশ্চিত করবে।
তিনি বলেন, অন্যায়, অবিচার, অপরাজনীতি ও বৈষম্যের পরিবর্তে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠাই ছিল আমাদের স্বাধীনতার মূল চেতনা। ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে মরণপণ মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করলেও স্বাধীনতার ৫ দশক পরেও স্বাধীনতার সুফলগুলো আমাদের কাছে অধরায় রয়ে গেছে। গণতন্ত্র ও নির্বাচনের নামে দেশ ও জাতির সাথে চলছে নির্মম প্রহসন। নাগরিকদের তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাই গণমানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই। তিনি মহান একুশের চেতনায় শোষণ, বঞ্চনা, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।