বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, সরকার লাগামহীন দুর্নীতি, লুটপাট ও দলীয় লোকদের সুবিধা দেয়ার জন্যই সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে ডিজেল, কেরোসিন ও এলপিজি গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জ্বালানীর দাম কমানো হলেও আমাদের দেশে বারবার মূল্যবৃদ্ধি গণদুর্ভোগ সৃষ্টির অনুসঙ্গ হয়ে দেখা দিয়েছে। তিনি জনস্বার্থ বিবেচনায় অবিলম্বে জ্বালানীর বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় সরকারকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
তিনি আজ রবিবার সকালে রাজধানীর বাড্ডায় সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে ডিজেল, কেরোসিন ও এলপিজি গ্যাসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য
ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম, মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, ঢাকা মহানরীর মজলিসে শূরা সদস্য ডা. শফিউর রহমান, আতাউর রহমান সরকার, মেসবাহ উদ্দীন আহমদ নাঈম ও কুতুব উদ্দীন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী উত্তর সেক্রেটারি জাকির হোসেন, পশ্চিম সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল মামুন ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সেক্রেটারি হুমায়ন কবির প্রমূখ। সমাবেশ শেষে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বাড্ডা ওভারব্রিজের নিচ থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে লিংক রোডে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। মহানগরী আমীর উপস্থিত সকলকে শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছে সমাবেশ সমাপ্ত ঘোষণা করেন।
মহানগরী আমীর বলেন, সরকার নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। ফলে জনজীবন ইতোমধ্যেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় বিনা কারণে ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য লিটার প্রতি ১৫ টাকা বৃদ্ধি করে জ্বালানো আগুনে ঘি দেয়া হয়েছে। এমনকি প্রায় প্রতিমাসেই এলপিজি গ্যাসের দাম বাড়ানো সরকারের রীতিমত ট্রাডিশনে পরিণত হয়েছে। এমনিতেই নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। উপর্যুপরি তেল ও গ্যাসের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে অতিপ্রয়োজনীয় দ্রব্য-সামগ্রী, সেচ, কৃষিপণ্য ও পরিবহন ভাড়াসহ সকল ক্ষেত্রে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। যা সাধারণ মানুষের জন্য ‘মরার উপর খাড়ার ঘাঁ’। তিনি সরকারকে সকল ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের স্বার্থ ও সঙ্গতির কথা বিবেচনায় নিয়ে যেকোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের আহবান জানান।
তিনি বলেন, করোনার নেতিবাচক প্রভাবে এখন সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা প্রান্তিক পর্যায়ে নেমে এসেছে। সম্প্রতি ‘দ্য পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার’ এবং ‘ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের’ এক সমীক্ষায় দেখা গেছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশে ৩ কোটি ২৪ লাখ লোক নতুন করে দরিদ্র হয়েছে। এমতাবস্থায় দেশে জ্বালানির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত খুবই অযৌক্তিক, অনাকাক্সিক্ষত এবং জনস্বার্থবিরোধী। সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই জনগণের প্রতি তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি গণপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।