স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি-পরিবেশ, শিক্ষা ও অবকাঠামো বিশ্বমানে উন্নীত করে ঢাকা মহানগরীকে নাগরিকবান্ধব ও অধিকতর বসবাসযোগ্য করে গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। সম্প্রতি বসবাসযোগ্যতা ও নাগরিক সুবিধা বিবেচনায় বিশ্বের ১৪০টি শহরের অবস্থান বিষয়ক জরিপকারী প্রতিষ্ঠান ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) প্রকাশিত প্রতিবেদনে ঢাকা ১৩৭ স্থানে নেমে আসায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
মহানগরী আমীর বলেন, রূপসী নগরী ঢাকা এখন অতীত গৌরব ও জৌলুস হারিয়েছে। ভৌগোলিকভাবে ঢাকা একটি মেগাসিটি; ঢাকা মহানগরীর জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ১০ লক্ষ। ঢাকা সিটিতে এক হাজারেরও বেশি মসজিদ থাকায় ‘মসজিদের শহর’ হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। এছাড়াও ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান সংস্কৃতি, শিক্ষা ও বাণিজ্যকেন্দ্র। তাই দেশ ও জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে রাজধানী উন্নয়নকে উপেক্ষার করার কোন সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, সংবিধানের ৫(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী। এই শহরে অনেক ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান রয়েছে। জাতীয় সংসদ ভবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, লালবাগ কেল্লা, আহসান মঞ্জিল, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, বায়তুল মোকাররম মসজিদ, তারা মসজিদ, ঢাকেশ্বরী মন্দির ও আর্মেনীয় গির্জা অন্যতম। এসব বিবেচনায় ঢাকা নগরীকে পর্যটনবান্ধব হিসাবে গড়ে তোলার সুযোগ থাকলেও নগরীর দূষণ, যানজট, জলাবদ্ধতা, অপরিকল্পিত নগরায়ন, অপর্যাপ্ত পয়োঃনিষ্কাষণ ও সেকেলে ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে আমাদের সে স্বপ্ন অধরায় রয়ে গেছে। মূলত, নগর উন্নয়নে মাত্রাতিরিক্ত রাজনীতিকরণ, লাগামহীন দুর্নীতি, অপরিকল্পিত নগরায়ন, সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উপর্যুপরি ব্যর্থতার কারণেই ঢাকা নগরী নাগরিকবান্ধব হয়ে ওঠেনি।
তিনি আরও বলেন, গত ৯ জুন বসবাসযোগ্যতার দিক থেকে বিশ্বের ১৪০ শহরের এ তালিকাটি প্রকাশ করে ইকোনোমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। খবরটির দেশের প্রায় সকল মূলধারার গণমাধ্যমেও ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে। তালিকায় ১৩৭তম স্থানে নেমে এসেছে তিলোত্তমা খ্যাত ঢাকা মহানগরী। প্রকাশিত প্রতিবেদনে যে হতাশাব্যঞ্জক চিত্র ফুটে উঠেছে তা বাংলাদেশের রাজধানী হিসাবে ঢাকার সম্মানহানী ঘটেছে। একই সাথে আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের দৈন্যতাও বিশ্ববাসীর কাছে প্রকাশ পেয়েছে। এমতাবস্থায় ঢাকা নগরীর ঐতিহাসিক ও সমসাময়িক গুরুত্ব এবং অতীত গৌরব ফিরিয়ে আনতে নগরীকে নাগরিকবান্ধব ও বসবাসযোগ্য করে গড়ে তোলার আবশ্যকতা দেখা দিয়েছে। তিনি বসবাসযোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য ঢাকার স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি-পরিবেশ, শিক্ষা ও অবকাঠামোসহ নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকার সহ রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান। অন্যথায় রূপসী নগরীর অতীত গৌরব ফিরে আনা সম্ভব হবে না।