বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম বলেছেন, ভারতে একটি আদালতে জনৈক ওয়াসিম রিজভী পবিত্র কুরআনের ২৬টি আয়াত বাতিলের জন্য যে রীট মোকদ্দমা দায়ের করেছে তা ক্ষমাহীন ধৃষ্টতা। আর এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার মাধ্যমে পুরো মুসলিম উম্মাহর বোধ-বিশ্বাস আবেগ-অনুভূতিতে আঘাত দেয়া হয়েছে। তাই এই ঘটনায় কোন ঈমানদার মুসলমান নির্লিপ্ত থাকতে পারে না। মহানগরী সেক্রেটারি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান ও প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার করে মামলাকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি করেন। অন্যথায় বিশ্ব মুসলিম ঘরে বসে থাকবে না।
তিনি আজ রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ভারতের একটি আদালতে পবিত্র কুরআনের ২৬ টি আয়াত বাতিল চেয়ে রীট মামলার প্রতিবাদে ও অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার এবং মামলাকারীর শাস্তির দাবিকে এক বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি মিরপুর-১ থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর সহকারি সেক্রেটারি এম রহমান, এন ইউ মোল্লা ও ডা. এফ ইউ মানিক প্রমূখ।
এম আর করিম বলেন, মহাগ্রন্থ আল কুরআন রাসুল (স.) এর সবচেয়ে বড় মু’জিজা। মূলত এই কিতাব সকল প্রকাশ সন্দেহের উর্দ্ধে। পবিত্র কালামে হাকিমের সুরা বাকারার ২ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন, ‘এটি এমন এক কিতাব; যাতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই’। সুরা হিজরের ১৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই কুরআন আমি নাযিল করেছি। আর অবশ্যই উহার হেফাজতের দায়িত্ব আমারই’। মূলত মহাগ্রন্থ আল কুরআন আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য সর্বশেষ ও পরিপূর্ণ জীবন বিধান। কুরআন সম্পর্কে রিটকারীর বক্তব্য চরম ধৃষ্টতামূলক। সে শুধু আল্লাহর কুরআনকেই আঘাত করেনি বরং রাসূলে কারীম (সা.) ওফাতের পর যে ৪ জন মহান খলীফা মুসলিম মিল্লাতের অভিভাবক ও শাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, তারা সাহাবাগণের মধ্যে অগ্রবর্তী ছিলেন। তারা জীবিত অবস্থায় জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত । তারা সকলের সম্মান, মর্যাদা ও শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন। রিটকারী ৪ জন খলীফার মধ্যে ৩ জনেরই চরিত্র হনন করেছেন। যা শুধু নিন্দনীয় নয় বরং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
তিনি বলেন, মহাগ্রন্থ আল কুরআন মানব রচিত কোন গ্রন্থ নয়; বরং এটি আল্লাহ তায়ালার বাণী সমষ্টি। সৃষ্টি জগতের সামগ্রিক কল্যাণই মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাযিলের উদ্দেশ্য। এ কিতাবের অনন্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর চিরন্তনতা ও অবিকৃত অবস্থা। বিশুদ্ধ ভাষাশৈলী, বাক্যবিন্যাস, চিত্রকল্প, উপমা-উৎপ্রেক্ষা, ভাবব্যঞ্জনা, ছন্দ-মাধুর্য, চমকপ্রদ গ্রন্থনাশৈলী, বাক্যের অনুপম বিন্যাস। পৃথিবীতে এ পর্যন্ত যত আসমানী কিতাব অবর্তীণ হয়েছে তার কোনটিই অবিকৃত থাকেনি কিন্তু আল-কুরআন নাযিলের পর প্রায় সাড়ে চৌদ্দশত বছরের মধ্যে এর কোন সূরা, আয়াত, শব্দ, অক্ষর, নোকতা এমনকি স্বরচিহ্ন বা বিরাম চিহ্নেরও পরিবর্তন হয়নি। কিয়ামত অবধি এর কোনরূপ পরিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন, সংযোজন-বিয়োজন ও বিকৃতির কোন অবকাশ নেই। তাই কুরআনের বিরুদ্ধে যেকোন ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় মুসলিম উম্মাহ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।