বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী কোন গতানুগতিক রাজনৈতিক দল নয় বরং জামায়াত একটি গণতান্ত্রিক, আদর্শবাদী ও কল্যাণমুখী রাজনৈতিক দল। মূলত গণমানুষের কল্যাণকামীতা ও ন্যায়-ইনাসাফের ভিত্তিতে কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা জামায়াতে ইসলামীর লক্ষ্য। জামায়াত দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এবং জাতির যেকোন ক্রান্তিকালে জনগণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এবং আর্ত-মানবতার সেবায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গণমানুষের জন্য আমাদের এই কল্যাণকামীতা আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে-ইনশাআল্লাহ। তিনি অগ্নিদুর্গতদের দুর্দশা লাগবে সরকার, বিভিন্ন দাতা সংস্থা, সমাজের বিত্তবান মানুষসহ দলীয় নেতাকর্মীদের এগিয়ে আসার আহবান জানান।
তিনি আজ ৩:৩০ মিনিট রাজধানীর কল্যাণপুর নতুন বাজার বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্র্রস্থদের মধ্যে আর্থিক সহযোগিতা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বিতরণ কালে এসব কথা বলেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মুসা, মহানগরী সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম ও মিরপুর পশ্চিম থানা আমীর আব্দুল্লাহ প্রমুখ।
আমীরে জামায়াত বলেন, জনগণের সকল সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কিন্তু দেশে কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না থাকায় জনগণ রাষ্ট্রের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। মূলত, আইনের শাসনের অনুপস্থিতি এবং গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিচ্যুতির কারণেই রাষ্ট্র তার গণমুখী চরিত্র হারিয়েছে। ফলে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে একশ্রেণি সুবিধাবাদীদের হাতে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে নাগরিক জীবনের ওপর। জাতির যেকোন দুর্যোগ ও ক্রান্তি৯কালীন মহুর্তে রাষ্ট্রের সক্রিয়তা অপরিহার্য হলেও রাষ্ট্র সে দায়িত্ব পালনের দায়িত্বহীনতা ও উদাসীনতার পরিচয় দিচ্ছে। এমতাবস্থায় জামায়াতে ইসলামী একটি আদর্শবাদী ও গণমুখী রাজনৈতিক দল হিসেবে কোন ভাবেই নিষ্ক্রিীয় থাকতে পারে না। আর গণমানুষের প্রতি সে দায়বদ্ধতা থেকে আমরা আমাদের সীমিত সামর্থ নিয়ে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস কেউ উপকৃত হলে আমাদের শ্রমসার্থক হয়েছে বলে মনে করবো। আমীরে জামায়াত দুর্গত মানুষদের নিজেদের মধ্যে সহমর্মীতার মনোভাব সৃষ্টির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
তিনি বলেন, যেকোন দুর্ঘটনা ঘটার পর সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর বেশ তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয় নানা ধরনের। ঘটনার তদন্তে গঠিত হয় লোক দেখানো তদন্ত কমিটি। কিন্তু বাস্তবে তার কোন প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায় না। দুর্গতদের ক্ষতিপূরুণ ও দ্রুতক পূনর্বাসনের কথা বলা হলেও সে প্রতিশ্রুতি প্রতিশ্রুতিই থেকে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সৃষ্টি হয় জনদুর্ভোগের। যা কোন গণতান্ত্রিক ও সভ্যসমাজে মোটেই কাঙ্খিত নয়। তিনি অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের যথাযথ ক্ষতিপূরণসহ সম্ভব স্বল্প সময়ের মধ্যে পূনর্বাসন, আহতদের সুচিকিৎসা সহ অর্থিক সাহায্য এবং ঘটনার পূনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। তিনি দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় মোনাজাত পরিচালনা করেন।