বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় মদদে একটি বহুতল ভবনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটাক্ষ করে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে। এর আগে দেশটির একটি ম্যাগাজিনে একই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে বিশ্ব মুসলিমের আবেগ-অনুভূতিতে আঘাত দেয়া হয়েছে। ফলে পুরো মুসলিম উম্মাহই বিক্ষুব্ধ ও প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠেছে। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে ব্যাঙ্গচিত্র প্রত্যাহার ও বিশ্ব মুসলমানদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার জন্য ফ্রান্স সরকারের প্রতি আহবান জানান। অন্যথায় মুসলিম বিশ্ব ফ্রান্সের পণ্য বর্জনসহ দেশটির সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করবে।
তিনি আজ রাজধানীতে ফ্রান্সে রাসুল (সা.) এর ব্যাঙ্গচিত্র প্রদর্শনীর প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে এই অশুভ তৎপরতা বন্ধের দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে এসব কথা বলেন। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল উত্তর বাড্ডা থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বাড্ডা লিঙ্ক রোডে এসে শেষ হয়।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন, নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য মু. আতাউর রহমান সরকার, মেসবাহ উদ্দীন নাঈম, ডা. শফিউর রহমান ও এ্যাডভোকেট ইব্রাহিম খলিল, শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত, ছাত্রনেতা এনামুল হাসান, মাসুদুর রহমান ও মোস্তাফিজুর রহমান প্রমূখ।

সেলিম উদ্দিন বলেন, ফ্রান্সে একজন শিক্ষক বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (স.) এর কার্টুন তৈরি করে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সূত্রপাত করেছিল। যা মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটিয়েছে। এমন ন্যক্কারজনক ঘটনায় ফরাসি প্রেসিডেন্টের প্রত্যক্ষ মদদ দেয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। মূলত ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতা বশতই বাকস্বাধীনতার অপব্যবহার করে হিংসা, বিদ্বেষ ও ঘৃণা ছড়াচ্ছেন। যা জাতিসংঘ সনদের সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন। তিনি ফরাসী প্রেসিডেন্টকে বিশ্বনবী (সা.) এর জীবনী অধ্যয়ন এবং ইসলাম সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান অর্জন করে আগামী দিনে করণীয় নির্ধারণের আহবান জানান। অন্যথায় ইসলাম সম্পর্কে বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য মুসলিম বিশ্ব ফ্রান্সকে বর্জন করবে।
তিনি বলেন, মূলত ইসলামোফোবিয়া পশ্চিমা বিশ্বের রীতিমত মুদ্রাদোষে পরিণত হয়েছে। তারা বিভিন্ন ছলছুতায় ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত আঘাত হানছে। পশ্চিমা বিশ্ব মুসলিমকে প্রান্তিকতার দিকে ঠেলে দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে উগ্রবাদ ও জঙ্গীবাদের অপবাদ দিতে চায়। অথচ তারা নিজেরাই জঙ্গীবাদ ও উগ্রবাদের প্রতিভূ হিসেবে কাজ করছে। এমতাবস্থায় মহানবী (সা.) ও ইসলামের মর্যাদা রক্ষায় মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি ইসলাম বিরোধী বৈশ্বিক যড়যন্ত্র মোকাবেলায় এবং বিশ্বের সকল ধর্মের মর্যাদা রক্ষায় জাতিসংঘ, কমনওয়েলথ, ওআইসি, আরবলীগসহ বিশ্বের শান্তিকামী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। তিনি ফ্রান্সের ইসলামবিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবানও জানান।