বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি গণমুখী ও আদর্শবাদী ইসলামী রাজনৈতিক দল বলে মন্তব্য করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, গণমানুষের কল্যাণ ও ন্যায়-ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠাই জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দর্শন। শুক্রবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে দলটির ঢাকা মহানগরী উত্তরের শাহআলী থানা আয়োজিত ইউনিট দায়িত্বশীল সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনা পরিস্থিতিতে জামায়াত দুর্গত মানুষের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সম্মানিত আমীরে জামায়াতের নির্দেশনায় করোনা আক্রান্তদের যথাযথ চিকিৎসা ও সার্বিক সহযোগিতায় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন আন্দোলনে সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা।
শাহ আলী থানা আমীর ডা. মঈন উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও থানা কর্মপরিষদ আনোয়ার হোসাইনের পরিচালনায় সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা আব্দুল লতিফ ও ওয়ালীউল্লাহ সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
ড. রেজাউল করিম বলেন, দেশে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই জামায়াতে ইসলামী সারাদেশেই ব্যাপক ত্রাণ ও সাহায্য তৎপরতা চালিয়ে আসছে। ঢাকা মহানগরী উত্তরও করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা, খাদ্যসহ বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। সে তৎপরতার অংশ হিসেবেই লক্ষাধিক পরিবারের মধ্যে প্রায় ১১ কোটি টাকার ত্রাণ, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ফুড প্যাকেট, পবিত্র ঈদুল আযহায় ৮০ হাজার কেজি গোস্ত প্রান্তিক জনগোষ্ঠির মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। সর্বপরি জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা করোনা আক্রান্তদের ও পরিস্থিতির শিকার মানুষের কল্যাণে নিরবে-নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই তৎপরতা অব্যাহত থাকবে-ইনশা আল্লাহ। তিনি আর্ত-মানবতার কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, সরকারের অবৈধ ক্ষমতালিপ্সার কারণেই দেশে ভয়াবহ রাজনৈতিক শুণ্যতার সৃষ্টি হয়েছে। তারা দেশে অঘোষিতভাবে বিরোধী দলীয় রাজনীতির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। গণতন্ত্রহীনতা ও নৈরাজ্য জাতির ঘাড়ে জগদ্দল পাথরের মত চেপে পড়েছে। ফলে অপরাজনীতি, হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, অপহরণ, দুর্নীতি, অনিয়ম, লুটপাট, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি ও আত্মপ্রীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে। সুশাসন প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের বিচ্যুতি ঘটেছে। আইনের অপপ্রয়োগের কারণেই সাধারণ মানুষ এখন অধিকারহারা। এমতাবস্থায় কোন আত্মসচেতন মানুষের পক্ষে নিরব থাকা সম্ভব নয়।
তিনি আরো বলেন, দেশের স্বাস্থ্যখাতে চলছে ভয়াবহ নৈরাজ্য। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন কার্যালয়ে কিছু সংখ্যক অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে দুর্নীতির শক্তিশালী বলয় গড়ে ওঠেছে। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ঔষধ, জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে ‘সিন্ডিকেট’ গঠন করে স্বাস্থ্য খাতে জনসাধারণের জন্য বরাদ্দ সরকারি অর্থের বড় একটি অংশ লোপাট করা হচ্ছে। এমনকি করোনা পরীক্ষা না করেই ভূয়া রিপোর্টের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। যা আমাদের জনস্বাস্থ্যকে মারাত্মক হুমকীর মুখে ঠেলে দিয়েছে এবং দেশে-বিদেশে দেশের ভাবমর্যাদা মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে। মূলত গণতন্ত্রহীনতার কারণেই দেশে সকল ক্ষেত্রেই অশুভ শক্তি মাথাচাঁরা দিয়ে উঠেছে। তাই এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে হলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং ইসলামী মূল্যবোধ লালনের কোন বিকল্প নেই।
তিনি হারানো গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সকল রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান।