বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনা গোটা বিশ্বকেই বিপর্যস্ত করে তুলেছে। এই প্রাণঘাতি ভাইরাসে বিশ্বের ১৮৮টি দেশের প্রায় অর্ধকোটি মানুষ অক্রান্ত ও প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। আমাদের দেশে এপর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২৭ হাজার এবং মৃত্যুর সংখ্যাও প্রায় ৪ শ। আর জাতির এই ক্রান্তিকালেই আমাদের মাঝে হাজির হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। তাই এই মহামারী থেকে বাঁচতে আমাদের মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছেই আত্মসমর্পন করতে হবে।
তিনি আজ রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের কাফরুল থানা দক্ষিণ ও উত্তর আয়োজিত স্থানীয় অস্বচ্ছল মানুষের মধ্যে পৃথকভাবে ঈদ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। উভয় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। কাফরুল থানা দক্ষিণ আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন থানা আমীর অধ্যাপক আনোয়ারুল করিম। উপস্থিত ছিলেন থানা বিএনপির সভাপতি আখতার হোসেন জিল্লু, সেক্রেটারি একরাম হোসেন বাবুল ও জামায়াত নেতা ওয়াহিদুর রহমান তপন প্রমূখ। কাফরুল উত্তরে সভাপতিত্ব করেন থানা আমীর আব্দুল মতিন খান। উপস্থিত থানা সেক্রেটারি তারেক রেজা তুহিন, থানা যুবদল সভাপতি শরিফুল ইসলাম মিলন, জামায়াত নেতা কামাল পাশা ও খান হাবীব মোস্তফা প্রমূখ।
আমীরে জামায়াত বলেন, আল্লাহ মানুষকে নানাভাবে পরীক্ষা করেন যাতে তারা সুপথ প্রাপ্ত হতে পারে। মহাগ্রন্থ আল কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেছেন, ‘কঠিন শাস্তির পূর্বে আমি তাদেরকে হালকা শাস্তি আস্বাদন করাবো, যাতে তারা প্রত্যাবর্তন করে’। সুরা সাজদাহ,আয়াত-২১। তাই চলমান করোনা মহামারীতে মোমিনদের হতোদ্যম হওয়ার সুযোগ নেই বরং ইবাদাত, ইস্তিগফার, ধৈর্য ও সহনশীলতার সাথে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে হবে।
তিনি বলেন, জাতির যে কোন ক্রান্তিকালে নাগরিক সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কিন্তু ন্যায়-ইনসাফভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না থাকায় নাগরিকরা রাষ্ট্রের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। চারিদিকে আত্মপীড়িত ও দুর্গত মানুষের আহাজারী শোনা যাচ্ছে। এমতাবস্থায় একটি গণমুখী, কল্যাণকামী ও আদর্শবাদী রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামী গণমানুষের দুর্দশা লাঘবে সীমিত সামর্থ নিয়ে এগিয়ে এসেছে। কিন্তু রাষ্ট্র বা সরকারের কাজ ব্যক্তি বা সাংগঠনিকভাবে করা সম্ভব নয়। তবুও আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রায়াসে যদি কেউ ন্যুনতম উপকৃত হন তাহলে আমাদের শ্রম সার্থক হয়েছে বলে মনে করবো। গণমানুষের জন্য জামায়াতের এই কল্যাণধর্মী কাজ আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে- ইনশাআল্লাহ।
আমীরে জামায়াত বলেন, করোনা সৃষ্ট পরিস্থিতিতে আমরা সাধারণ মানুষের কল্যাণে সারা দেশেই ব্যাপকভিত্তিক ত্রাণ তৎপরতা চালিয়েছি। আমাদের এই কল্যাণমুখী কাজ সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য ও প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে আমরা নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারিনি। তবুও নানাবিধ প্রতিকূলতার মধ্যেও আমরা অসহায় ও বিত্তহীন জনগোষ্ঠীর দুর্দশা লাগবে কাজ করছি এবং এখনো করে যাচ্ছি। তিনি জাতির এই ক্রান্তিকালে অধঃস্তন সংগঠনের সকল জনশক্তি এবং সমাজের বিত্তবান মানুষকে সাদাকাহ, ফিতরা ও নিজস্ব সঞ্চিত অর্থে দুর্গত মানুষের পাশে দাড়ানোর আহবান জানান এবং ইতিপূর্বে যারা জামায়াতের আহবানে সারা দিয়ে দুর্গত মানুষের পাশে এসে দাড়িয়েছেন তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।