প্রিয় ভাই ও বোনেরা
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
আশা করি বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহ তায়ালার অফুরন্ত মেহেরবানীতে সুস্থ থেকে দ্বীনি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের (কভিড-১৯) উদ্বেগজনক বিস্তৃতি ও তা থেকে নিরাপদ থাকার জন্য কার্যত লকডাউনের মতো কঠিন অবস্থার প্রেক্ষাপটে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ রামাদানুল মুবারক আবারও আমাদের সামনে উপস্থিত। রামাদান মাসের সিয়াম মুসলমানদের উপর অন্যতম মৌলিক ফরজ ইবাদত। আত্মসংযম, আত্মশুদ্ধি ও আত্মউন্নয়নের আল্লাহ প্রদত্ত ধারাবাহিক মুজাহাদার মাস হলো রামাদান মাস।
সিয়ামের বিধান প্রত্যেক নবী-রাসূলের উম্মতের উপর বিধিবদ্ধ ছিল। কিন্তু শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সময়ে রামাদানের বিধানকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পরিপূর্ণ রূপ দিয়েছেন এবং কিয়ামত পর্যন্ত সবার জন্য মাসব্যাপী সিয়াম পালনের এক অতুলনীয় নিয়ম বিধিবদ্ধ করে দিয়েছেন। ফলে সত্যিকার সিয়াম পালনকারীর উপর এর প্রভাব, এর কল্যাণ এবং সাফল্য আংশিক নয় বরং পরিপূর্ণ ও সীমাহীন।
মানবসমাজেও সিয়ামের গুরুত্ব অপরিসীম। তাকওয়ার সমাজ, শান্তিময় সমাজ ও সর্বস্তরে জবাবদিহিতার সমাজ বিনির্মাণে সিয়ামের আধ্যাত্মিক ও নৈতিক শক্তি সকল বস্তুগত শক্তিকে হার মানিয়ে দিয়েছে। পবিত্র মাহে রামাদানে মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা মুসলমানদের জন্য এক বিরল সৌভাগ্যের বিষয়। এ সময়ে সকল কল্যাণের দরজা খুলে দেওয়া হয় এবং অকল্যাণের পথসমূহ সংকুচিত করা হয়। গোটা সৃষ্টিকূলে আল্লাহ তায়ালার আনুগত্যের অনুকূল ভাবধারা ছড়িয়ে দেয়া হয়। সিয়াম সাধনার মাধ্যমে একজন সিয়াম পালনকারী বান্দা নিজেকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ধারাবাহিকভাবে সকল প্রকার পানাহার, যৌন চাহিদা পূরণ, অশ্লীল ও অন্যায় কর্ম থেকে বিরত রেখে নিবিষ্ট চিত্তে আত্ম-নিয়ন্ত্রণ ও আত্ম-উন্নয়নের ধাপগুলো অতিক্রম করে মহান আল্লাহর সান্নিধ্য লাভে সক্ষম হন। এ এক অনুপম আধ্যাত্মিক বৈশিষ্ট্য অর্জনের মহা সুযোগ।
রামাদান মানুষকে ধৈর্য ও সহনশীলতার দীক্ষা দেয়। পারস্পরিক অধিকার আদায়, তথা মুয়ামালাতী জিন্দেগীর কুরআনি লেবাসে ব্যক্তিকে সুসজ্জিত করে। অনাহার-ক্লিষ্টদের প্রতি সহানুভূতিপরায়ণ করে তোলে। সর্বোপরি দেহ ও আত্মাকে কুপ্রবৃত্তি, স্বার্থান্ধতা ও পাশবিকতা থেকে পরিশুদ্ধ করে উচ্চ মর্যাদায় উন্নীত করে দেয় এ রামাদান। সেই সাথে এ রামাদানের মাসকে মহিমান্বিত তথা বিশেষ ফযিলতপূর্ণ মাস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। কারণ এ মাসেই মহাগ্রন্থ আল-কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে কুফর, শিরক, অন্যায় ও পাপাচার থেকে মুক্ত করে মানুষের হিদায়াত তথা সঠিক দিক-নির্দেশনা স্বরূপ।
আবার এ মাসেই রয়েছে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম একটি অতি মহিমান্বিত রজনী বা ‘লাইলাতুল ক্বদর’। মহান প্রভুর নৈকট্য লাভের স্পেশাল রজনী, যা রামাদানের শেষ দশ দিনের বিজোড় রাতগুলোতে তালাশ করতে হয়। ইসলামের বিজয়ের এ মাসে ইসলামের সোনালি অতীতকে স্মরণে এনে পুনরায় আধ্যাত্মিক, নৈতিক, আমলী ও জ্ঞানের শক্তিতে বলিয়ান হয়ে দ্বীন কায়েমের প্রেরণায় উজ্জীবিত হতে হবে।
সংগ্রামী ভাই ও বোনেরা,
সারা দুনিয়ায় ইসলামী আন্দোলন আজ চরম অগ্নি পরীক্ষার অধ্যায় অতিক্রম করছে। সে ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলনও অব্যাহতভাবে পরীক্ষার দিনগুলো অতিক্রম করে চলছে।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, “তোমরা কী মনে করেছো, তোমরা এমনিতেই জান্নাতে চলে যাবে? অথচ আল্লাহ এখনো দেখে নেননি যে, তোমাদের মধ্যে এমন কারা আছে যারা তাঁর পথে জিহাদ করতে পারে এবং তাঁরই খাতিরে সবর করতে পারে।” (সূরা: আলে ইমরান-১৪২)।
আল্লাহ তা’য়ালা আরও বলেন, “আল্লাহ মুমিনদেরকে কিছুতেই এমন অবস্থায় থাকতে দেবেন না, যে অবস্থায় তোমরা এখন আছো। তিনি (বিপদ-মুসীবত দিয়ে, পরীক্ষার মাধ্যমে) পবিত্র লোকদেরকে অপবিত্র লোকদের থেকে আলাদা করবেনই।” (সূরা আলে ইমরান-১৭৯)
ইকামতে দ্বীনের জন্য সামনে অগ্রসর হলে যে সব পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে, বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলন সে পরীক্ষার সম্মুখীন। এ পরীক্ষায় দেখা যাবে, যে সব লোক আল্লাহর সাথে গভীর সম্পর্ক রাখে না, তারা নিজেরাই নিজেদের দুর্বলতার শিকার হয়ে ছিটকে পড়বে। আর যারা বাস্তবিকই আল্লাহর সাথে গভীর সম্পর্ক রাখেন, তারা কেবল একটি পরীক্ষাতেই কামিয়াব হবেন না, বরঞ্চ প্রতিটি পরীক্ষাই তাদের মধ্যে সৃষ্টি করবে নবতর উদ্দীপনা। এ সব পরীক্ষা তাদের অনেক দোষ-ক্রটি নির্মূল করে দেবে। আর এভাবে আগুনে পুড়িয়ে পুড়িয়েই অবশেষে তারা খাটি সোনায় পরিণত হবে।
মহান আলাহ তায়ালা বলেন, “তোমরা মন ভাঙ্গা হয়ো না, চিন্তা করো না যদি তোমরা মুমিন হও। তাহলে তোমরাই বিজয়ী হবে।” (সূরা আলে ইমরান-১৩৯)।
দুশ্চিন্তা, হতাশা ও ভয়-ভীতি এমন এক ব্যাধি যাকে কোনো সময়েই প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। অতীত অথবা বর্তমান কোনো অবস্থার জন্য বিমর্ষ-বিষন্ন হলে তা মানুষের মনকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেয়। আর ক্বলবের মধ্যে এ পথেই কালিমা পড়তে শুরু করে এবং ক্বলব মরে যায়। আর একবার মন ভাঙ্গা হয়ে গেলে, মন থেকে ইখলাস বিদায় নিলে, সে মন দিয়ে স্বতঃস্ফুর্ত কাজ ও কাজের আশাব্যঞ্জক ফলাফল পাওয়া যায় না। তা স্বয়ং দেহের উপরও আঘাত হানে। এ জন্যে আল্লাহর পথের মুজাহিদদেরকে এ থেকে পুত-পবিত্র থাকতে হবে। আমাদের জীবন-লক্ষ্যের কথা স্মরণে রেখে চলতে হবে। একান্তভাবে তাঁর উপরই ভরসা করতে হবে।
সাফল্য আসতে একটু বিলম্ব দেখে অধৈর্য ও অস্থির হওয়া যাবে না। যা হয়ে গিয়েছে (ত্রুটি-বিচ্যুতি) তার জন্যে দুঃখ ও শোক প্রকাশে সময় ও শক্তি নষ্ট না করে ভুল-ত্রুটির জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা চেয়ে, মন-মেজাজ ঠিক রেখে দৃঢ়তার সাথে উচ্চস্তরের নৈতিক গুণাবলী অর্জনের সাধনায় নিয়োজিত থেকে পূর্ণ সতর্কতা সহকারে মানুষের পারিবারিক, সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধের ধস ঠেকাতে তথা ভবিষ্যৎ সংশোধনের চিন্তা ও সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণ করে সকলকে নিয়ে ব্যাপকভাবে কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে। বিশেষ করে বর্তমান দুনিয়া জুড়ে করোনা ভাইরাস নামক মহামারির তাণ্ডব জনজীবনকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। এটা আসলে মানুষের হাতের কামাই।
মানুষ আল্লাহর পথ বাদ দিয়ে নৈতিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করে পাপাচারের পথকে উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এ অবস্থায় ইসলামের সুমহান আদর্শকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরে ধৈর্য ও সহনশীলতার সাথে এগিয়ে যেতে হবে। এ পথই আযাব ও গযব থেকে বাঁচার পথ, সাফল্যের পথ, বিজয়ের পথ, পবিত্র জান্নাতের পথ। গভীরভাবে অনুধাবন করলে দেখা যায় মাহে রামাদান আমাদের জন্য প্রকৃত অর্থে সে দীক্ষারই বার্তা নিয়ে এসেছে।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে যথাযথ কাজে সময় অতিবাহিত করা ও আসন্ন রামাদান মাসে দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিকের করণীয় সম্পর্কে সকলকে নিষ্ঠাপূর্ণ প্রচেষ্টায় আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
ক) অধ্যয়নমূলক :
১. আল-কুরআন – তাফহীমুল কোরআন ১৮ ও ১৯ খণ্ড অধ্যয়ন
২. সূরা আল বাকারা : ১৮৩-১৮৫ নং আয়াত অধ্যয়ন। পুরো কুরআন অন্তত একবার অর্থসহ তিলাওয়াত করার চেষ্টা করা।
৩. আল-হাদীস – তাহারাত, সালাত, সিয়াম ও চরিত্র গঠন সংক্রান্ত অধ্যায়।
৪. সাহিত্য – ১। নামাজ-রোজার হাকীকত ২। যাকাতের হাকিকত ৩। হিদায়াত ৪। আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায় ৫। ইসলামী আন্দোলনঃ সাফল্যের শর্তাবলী ৬। কুরআন রমযান তাকওয়া ৭। ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি ৮। ইসলাম পরিচিতি ৯। সফল জীবনের পরিচয় ১০। ইনফাক ফি সাবিলিল্লাহ।
৫. তা’লিমুল কুরআন- সহীহ তিলাওয়াত শিক্ষার ব্যবস্থাকে পারিবারিকভাবে, মসজিদভিত্তিক, পাড়া ও মহল্লা কেন্দ্রিক ব্যাপক রূপ দেয়ার চেষ্টা করা।
৬. মৌলিক বিষয়ে বাছাই করা আয়াত ও হাদীস মুখস্ত করা।
খ) অনুশীলনীমূলক :
১. করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে যথাযথ উপায় অবলম্বন করা।
২. মাহে রামাদানে পরিবার-পরিজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে নিয়ে ভাবগম্ভীর পরিবেশে যথাযথভাবে সিয়াম পালন করা।
৩. জামায়াতের সাথে ফরয সালাত ও তারাবীহ আদায় করা।
৪. কিয়ামুল লাইল বা সালাতুত তাহাজ্জুদ আদায়ের মাধ্যমে তিলাওয়াতে কুরআনের দুর্লভ সুযোগ কাজে লাগানো।
৫. আল্লাহর গযব থেকে রক্ষা ও তার সাহায্য লাভে কাতর কণ্ঠে দোয়া করা।
৬. নেতৃবৃন্দসহ সকল মজলুম মানুষের মুক্তির জন্য এ সময়ে বেশি বেশি আল্লাহর দরবারে ধর্ণা দেওয়া।
৭. সদস্য (রুকন), কর্মী, সহযোগী বৃদ্ধির কাজ এ মাসে অন্য মাসের তুলনায় ব্যক্তিকে অধিক সাওয়াবের অধিকারী করবে, তাই জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার উপায় এবং অধিক পুরস্কার লাভের আশায় এ ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনে যত্নশীল হওয়া।
৮. পারিবারিকভাবে বা পারিবারিক ইউনিটের উদ্যোগে পাড়া-প্রতিবেশী ও বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে ইফতারির আয়োজন করা (পরিস্থিতির আলোকে)।
৯. পরিস্থিতির আলোকে সাংগঠনিকভাবে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা।
১০. বেশি বেশি দান-সাদাকাহ করা। এ ক্ষেত্রে মজলুম ভাই-বোন, করোনা ভাইরাসের কারণে দুর্দশাগ্রস্ত মানুষ ও নিকট আত্মীয়দের প্রতি খেয়াল রাখা।
১১. হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি, জিঘাংসা ও নৈরাজ্যের বিষ ছড়ানোর মোকাবিলায় ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব, সম্প্রীতি ও সৌহার্দের স্বর্গীয় আবহ তৈরিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করা।
সম্মানিত ভাই ও বোনেরা,
আপনারা নিশ্চয়ই ভাল করে জানেন যে, যাকাত ইসলামের অর্থনৈতিক ইবাদত এবং তা মহান আল্লাহ নির্ধারিত গুরুত্বপূর্ণ ফরয ইবাদত। রামাদান মাসেই সাধারণত সাহেবে নিছাবগন যাকাত দিয়ে থাকেন। পবিত্র কুরআন নির্দেশিত খাতেই জামায়াতে ইসলামী যাকাতের অর্থ ব্যয় করে থাকে। জামায়াতের তৃতীয় দফার কাজকে গতিশীল ও জোরদার করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ও জেলা/মহানগরী পর্যায়ে একটি ফান্ড গঠন করা আছে। এ ফান্ডে যারা যাকাত দিতে ইচ্ছুক অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তাদের সাথে আগে থেকেই যোগাযোগ করার সক্রিয় উদ্যোগ নিতে হবে।
সাহেবে নিছাব সদস্যগণ (রুকনগণ) তাঁদের ব্যক্তিগত যাকাতের ৫০% সংশ্লিষ্ট জেলা/মহানগরী সংগঠনের যাকাত ফাণ্ডে জমা দেবেন। সংগৃহীত যাকাতের সমুদয় অর্থ স্থানীয়ভাবে গরীব ও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের কল্যাণ ও পুনর্বাসনকে অগ্রাধিকার দিয়ে পবিত্র কুরআন নির্ধারিত খাতে পরিকল্পিতভাবে ব্যয় করতে হবে। আত্মগঠন তথা সবর ও ইস্তিকামাতের নিয়তে চরিত্র গঠনের সাধনায় মানোন্নয়নের অবলম্বন হিসেবে বর্তমানে বাসা-বাড়িতে অবস্থানরতদের সময় কাজে লাগানো এবং রামাদানকে যথাযথ গুরুত্ব সহকারে পালনের জন্য এখন থেকে কাজ শুরু করতে হবে। উল্লেখিত সিলেবাসের কতটুকু রামাদানের পূর্বে, কতটুকু রামাদানে এবং কতটুকু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবার পূর্ব পর্যন্ত সময় অধ্যয়ন করতে হবে, তা ঠিক করে নিতে হবে। সার্কুলার পাওয়ার পর থেকেই সার্কুলারে বর্ণিত পরামর্শগুলো পরিপূর্ণ বাস্তবায়নে আত্মনিয়োগ করার একান্ত অনুরোধ করছি।
আল্লাহ আমাদেরকে ঈমান নিঃসৃত সকল গুণাবলী অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমীন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার
সেক্রেটারি জেনারেল
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
বি. দ্র.: নিজে পড়ুন এবং অন্য জনশক্তির কাছে পৌঁছিয়ে দিন। নির্দেশিকার আলোকে যথাযথভাবে আমল করুন।