আজ সকালে রাজধানীর রূপনগরের ‘ত’ ব্লকের বস্তিতে রহস্যজনক অগ্নিকান্ডে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি ঘটনা ঘটে। এই ভয়াবহ অগ্নিদুর্ঘটনার পর আজ বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। তিনি ঘটনার ভয়াবহতায় ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিতে মর্মামত হন এবং ক্ষতিগ্রস্থদের প্রতি সহমর্মীতা জানান। মহানগরী আমীর সিটি কর্পোরেশনসহ কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতায় বিস্ময় প্রকাশ করেন। এ সময় তার সাথে নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, রূপনগর থানা আমীর নাসির উদ্দীন, কাফরুল উত্তর থানা আমীর আব্দুল মতিন খান, জামায়াত নেতা জামাল উদ্দীন ও লিয়াকত আলী প্রমূখ।
মহানগরী আমীর তার সঙ্গীদের নিয়ে ঘটনাস্থল ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং স্থানীয় জনগণসহ দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থদের সাথে কথা বলেন। তিনি এই বিপদে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ভরসা রেখে ও সবরের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে ক্ষতিগ্রস্থদের পরামর্শ এবং জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের যথাসম্ভব সহযোগিতার আশ্বাসও প্রদান করেন। তিনি নগরীতে প্রতিনিয়ত এ ধরনের রহস্যজনক অগ্নিকান্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও পুনরাবৃত্তি রোধে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিশন গঠনের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর মহানগরী আমীর এক বিবৃতিতে বলেন, আমাদের দেশে বিশেষ করে ঢাকা সিটিতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা রহস্যজনকভাবে বেড়েছে। কিন্তু এসব অগ্নিকান্ড নিয়ন্ত্রণে সরকার বা সংশ্লিষ্ট বিভাগের আগাম কোন প্রস্তুতি থাকে না। ফলে অনাকাঙ্খিত অগ্নিকান্ডে প্রতিবছরই জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। গত বছরের আগস্ট মাসেও রূপনগরের চলন্তিকা বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ২ হাজারেরও বেশি ঘর ভষ্মীভূত ও ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছিল। সে ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে আবারও এই ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ আগের ঘটনায় সতর্কতা অবলম্বন করলে এখন এই ধরনের দুঃখজনক ঘটনার পূনরাবৃত্তি ঘটতো না।
তিনি বলেন, দেশে প্রভূত উন্নয়ন হয়েছে বলে সরকার পক্ষ দাবি করলেও আমাদের দেশে অগ্নিনির্বাপন প্রযুক্তি এখনও সেকেলে পর্যায়েই রয়ে গেছে। তাই যেকোন অগ্নিদুর্ঘটনায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। অগ্নিনির্বাপনসহ যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সীমিত ও সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব। কিন্তু এ বিষয়ে সরকারের উদাসীনতা ও নির্লিপ্ততার কারণেই প্রতিবছরই আমাদের দেশে অগ্নিকান্ডে ব্যাপকভাবে জানমালের ক্ষতি হয়ে আসছে। যা কাঙ্খিত নয়। তিনি অগ্নিনির্বাপনে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।
মহানগরী আমীর রূপনগরের ‘ত’ ব্লকের অগ্নিদুর্গতদের যথাযথ ক্ষতিপূরণসহ তাদের পুনর্বাসন এবং ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান এবং স্থানীয় সংগঠনের নেতাকর্মীদের দুর্গত মানুষের দুর্দশা লাঘবে সম্ভব সকল ধরনের সহযোগিতা করার অনুরোধ করেন।