বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, ভারতকে মুসলিম শূণ্য করার জন্যই পরিকল্পিতভাবে রাজধানী নয়াদিল্লিতে মুসলমানদেরকে গণহারে হত্যা করা হচ্ছে। এসব উগ্রবাদী হামলায় এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক নিরাপরাধ মুসলমানের প্রাণহানী ঘটলে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। এমনকি মসজিদগুলোতে উগ্রবাদীরা অগ্নিসংযোগ করছে। ফলে মজলুম মুসলমানদের আহাজারীতে দিল্লির আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। এমতাবস্থায় মুসলিম উম্মাহ নিরব থাকতে পারে না। তিনি অবিলম্বে এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ বন্ধে ভারত সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহবান জানান।
তিনি আজ রাজধানীতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ভারতের নয়াদিল্লি নির্বিচারের মুসলিম হত্যা ও মসজিদে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে এবং অনতিবিলম্বে হামলা ও অগ্নিসংযোগ বন্ধের দাবিতে এক বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি মিরপুর-১ থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে টেকনিক্যালে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম ও মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন, নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দীন মানিক ও মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য জিয়াউল হাসান, আতাউর রহমান সরকার ও আব্দুল হান্নান, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত, ছাত্রনেতা এনামুল হক, নাহিদ ও ডা. মুরাদ হোসেন প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিভিন্ন স্থানে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে গোটা ভারতই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে। ইতোপূর্বে এ আইনটি নিয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় এবং সহিংসতার ঘটনা ঘটে। ভারতের সুপ্রিম কোর্টে আইনটিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রায় ১০০ আবেদন জমা পড়েছে। ঘটনার ভয়াবহতায় জাতিসংঘ, ওআইসি, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, ইউরোপীয় পার্লামেন্টসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু ভারত সরকার আন্তর্জাতিক এই সংস্থাগুলোর আহবানে কোন সাড়া দেয়নি। ফলে সার্বিক পরিস্থিতির আরও অবনতিই ঘটেছে।
তিনি বলেন, শুরু থেকেই জামায়াতে ইসলামী ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনটি প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে এসেছে। আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে ইতোমধ্যেই ভারতের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে এখন পর্যন্ত সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে এবং কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছে। পরিস্থিতির ভয়াবহতায় পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করতে হয়েছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলেছে, পরিস্থিতি আরো জটিল রূপ ধারণ করতে পারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েনেরও দাবি উঠেছে। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে আগামী এক মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। তাই উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় ভারত সরকারকে উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিনি ভারতে মুসলিম হত্যা বন্ধে জাতিসংঘ, কমনওয়েলথ, ওআইসি ও আবরলীগ সহ বিশ্ব সংস্থাগুলোকে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহবান জানান।