বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন,‘৫২-র ভাষা আন্দোলন শুধু ভাষার জন্য ছিল না বরং এই আন্দোলন স্বাধিকার আন্দোলনের জোরালো ভিত্তি রচনা করেছিল। সে পথ ধরেই আমরা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলাম। কিন্তু অতীব পরিতাপের বিষয় যে, দীর্ঘকালের পরিক্রমায় আজও আমরা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, বাক-স্বাধীনতার অধিকার ফিরে পাইনি। মহল বিশেষের অহমিকা ও ক্ষমতাকেন্দ্রিক অপরাজনীতির কারণে ভাষা শহীদদের যথার্থভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। তিনি ভাষা আন্দোলনে শহীদদের পরম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
তিনি শুক্রবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর বাড্ডা পশ্চিম থানা আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় ও প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর আ স ফরহাদ হোসাইনের সভাপতিত্বে ও থানা সেক্রেটারি আ ন ম আতিকুর রহমান নুমানীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন রূপগঞ্জ থানা আমীর এ্যাডভোকেট ইসরাফিল ও জামায়াত নেতা লিয়াকত আলীসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, ১৯৪৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল। তমদ্দুন মজলিস এ আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। অধ্যাপক গোলাম আযম ছিলেন এ আন্দোলনের অগ্রসৈনিক। তিনি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কাছে মানপত্রও পাঠ করেছিলেন। অধ্যাপক গোলাম আযম ডাকসুর নির্বাচিত জিএস থাকলেও রাজনৈতিক সংকীর্ণতার কারণে ডাকসুর নামফলক থেকে তার নাম মুছে ফেলা হয়েছে। সরকারের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে কারারুদ্ধ অবস্থায় এই কিংবদন্তী ভাষাসৈনিক মৃত্যুবরণ করেছেন। মহল বিশেষের হীন্যমনতার কারণেই ভাষা আন্দোলনের কৃতিত্ব থেকে অধ্যাপক গোলাম আযমকে বঞ্চিত করা করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। কিন্তু এতে তারা সফল হয়নি; হবেও না বরং ইতিহাসই প্রকৃত ভাষা সৈনিকদের মর্যাদা নিশ্চত করবে।
তিনি বলেন, অন্যায়, অবিচার, অপরাজনীতি ও বৈষম্যের পরিবর্তে ন্যায়-ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় ছিল স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে মরণপণ মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করলেও প্রায় পাঁচ দশক পরেও স্বাধীনতার সুফলগুলো আজও আমাদের কাছে অধরায় রয়ে গেছে। গণতন্ত্র ও নির্বাচনের নামে দেশ ও জাতির সাথে চলছে নির্মম প্রহসন। নাগরিকদেরকে তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাই গণমানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই। তিনি মহান একুশের চেতনায় শোষণ, বঞ্চনা ও দারিদ্রমুক্ত গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।