বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। সে ধারাবাহিকতার নির্মম ভিকটিম বানানো হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে। সরকার সাজানো বাদী, মিথ্যা সাক্ষী ও দলীয় প্রসিকিউশনের মাধ্যমে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগে এটিএম আজহারুল ইসলামকে অনায্য দণ্ডে দণ্ডিত করেছে। তিনি এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহবান জানান এবং তার আশুমুক্তি ও সুস্বাস্থ্য কামনায় মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত কারাবন্দী সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের আশু মুক্তি ও সুস্বাস্থ্য কামনায় এক দোয়া মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য এম এন মোল্লা ও বানানী থানা আমীর সাইফুল ইসলাম প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, মূলত এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে সরাসরি অপরাধে সম্পৃক্ত থাকার কোনও অভিযোগ নেই। সে সময় তিনি ১৮ বছরের কিশোর ও কলেজছাত্র ছিলেন মাত্র। সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবেই তাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা মামলা দায়ের করে। একজন সাক্ষী আদালতে বলেছেন যে, তিনি ৭ কিলোমিটার দূর থেকে ঘটনা দেখেছেন। অপর একজন সাক্ষী বলেছেন তিনি ৩ কিলোমিটার দূর থেকে ঘটনা দেখেছেন । তাদের এ বক্তব্যই প্রমাণ করে তারা সম্পূর্ণ মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন। আরেকজন সাক্ষী নিজেকে আজহারের ক্লাসমেট দাবী করে আদালতে সাক্ষ্য দিলেও আদালতে উপস্থাপিত ডকুমেন্ট অনুযায়ী আজহারুল ইসলাম ১৯৬৮ সালে কারমাইকেল কলেজ ত্যাগ করেন। আর কথিত সাক্ষী ১৯৭০ সালে কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হন। অতএব আজহারুল ইসলামকে ঐ সাক্ষী তার ক্লাসমেট হওয়ার যে দাবী করেছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা। তাই এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চত হয়নি।
তিনি বলেন, সরকার নিজেদের সীমাহীন ব্যর্থতা ঢাকতেই রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সারাদেশে হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, গুম, অপহরণ ও গুপ্তহত্যা চালিয়ে দেশকে আতঙ্কের জনপদে পরিণত করেছে। তারা কথিত যুদ্ধপরাধকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনের হাতিয়ার বানিয়েছে। সরকার ইতোপূর্বে সাবেক আমীরে জামায়াত ও প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সাবেক সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লা এবং সাবেক কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীকে সরকার ষড়যন্ত্রমূলকভাবে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে বহির্বিশে^ দেশ ও জাতিকে কলঙ্কিত করেছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারের গুম ও অপহরণের ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক অপরাাধ ট্রাইব্যুনালের ডিফেন্স আইনজীবী ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য শহীদ মীর কাসেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার মীর আহমদ বিন কাসেম আরমান ও সাবেক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এবং সাবেক আমীরে জামায়াত অধ্যাপক গোলাম আযমের ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমীকে অপহরণ করে দীর্ঘদিন পর্যন্ত গুম করে রাখা হয়েছে। এবার সরকারের জিঘাংসা ও প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন এটিএম আজহারুল ইসলাম। মূলত এই ফ্যাসীবাদী ও বাকশালী সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্যই গণবিরোধীতায় লিপ্ত হয়েছে। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এই জুলুমবাজ সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে।