বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, সরকারের উদাসীনতা ও স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার কারণেই সম্প্রতি ভোলায় ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তাই ভোলার ধর্মপ্রাণ ও প্রতিবাদী মানুষকে হত্যার দায় সরকার ও প্রশাসন কোন ভাবেই এড়াতে পারে না। তিনি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের নির্বিচারে গুলী বর্ষণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং নিহতদের পরিবার-পরিজনদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ভোলার বোরহানউদ্দিনে ফেসবুকে মহান আল্লাহ ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ জনগণ আয়োজিত শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের গুলি বর্ষণে নিহতদের শাহাদাত কবুল এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনায় দোয়া মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ভাটারা থানা আমীর ইঞ্জিনিয়ার কামাল উদ্দীন প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন আরও বলেন, সরকারের নির্লিপ্ততার কারণেই একশ্রেণির দেশবিরোধী ও ধর্মদ্রোহী অতিমাত্রায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা হত্যা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের মাধ্যমে গোটা দেশকেই অস্থির ও অশান্ত করে রেখেছে। সে ধারাবাহিকতায় বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে। বর্তমানে দেশের একশ্রেণির ধর্মদ্রোহীদের ধর্ম ও ধর্মীয় মূল্যবোধকে আঘাত করা রীতিমত ফ্যাসনে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের অনন্য নজীর হলেও একটি মহল পরিকল্পিতভাবে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বিনষ্টের অবচেষ্টায় লিপ্ত। সম্প্রতি ভোলায় শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশের বেপরোয়া গুলিবর্ষণ ও হত্যা সে ষড়যন্ত্রের দিকেই অঙ্গলী নির্দেশ করে। তিনি মহান আল্লাহ ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তিকারীর শাস্তির দাবীতে ‘ভোলার সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদ কর্তৃক’ ঘোষিত ৬ দফার প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেন এবং দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
তিনি বলেন, ভোলার নির্মম হত্যাকান্ডে পুরো জাতিই উদ্বিঘ্ন। সরকার একদিকে সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদের ৬ দফা দাবী মেনে নেয়ার কথা বলছে, অন্যদিকে ৫ হাজার নিরীহ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করে পুরো পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। মূলত সরকার বিষয়টি নিয়ে দ্বৈতনীতি গ্রহণ করেছে। কিন্তু ধর্মদ্রোহীদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সরকার সার্বিক পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না বরং তা তাদের জন্যই বুমেরাং হতে পারে। তিনি ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন ও ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে দায়িদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের আহবান জানান এবং বিক্ষোভের দায়ে আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
আলোচনা শেষে মহানগরী আমীর ভোলায় নিহতদের শাহাদাত কবুল ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনায় দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন।