প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো শহর ঢাকা, অনেক সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক। কিন্তু এই নগরীর ক্রমবিবর্তনের চাহিদার আলোকে নাগরিকসুবিধা বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়নি। মূলত রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যর্থতার কারণেই ঢাকা মহানগরী এখনও অপরিকল্পিত ও জনদুর্ভোগের নগরী। বিশেষ করে ডিএনসিসির নাগরিক সুবিধার মান খুবই অপ্রতুল ও নিম্নমানের। তাই এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ডিএনসিসিতে সময়োপযোগী ও গতিশীল প্রশাসন এবং দক্ষ জনবলের বিষয়টি অনস্বীকার্য। একই সাথে উন্নত বিশ্বের নগর ব্যবস্থাপনার সাথে সঙ্গতি রেখে ডিএনসিসিকে সর্বাধুনিক নগরীতে রূপান্তরিত করাও জরুরি, ডিএনসিসির প্রধান সমস্যা হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। নগরীতে হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, গুম, অপহরণ, গুপ্তহত্যা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বেড়েছে। আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে রাজনৈতিক হানাহানি। সরকার ও নগর প্রশাসন নগরবাসীর স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি দিতে পারছে না।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বিভেদ ও নেতিবাচক রাজনীতি পরিহার করে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। গণপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে রাজনৈতিক দলগুলোর লেজুড়বৃত্তির ঊর্ধ্বে ওঠে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আর রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য ডিএনসিসি প্রশাসনকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মাদকাসক্ত হয়ে যুবসমাজ আজ ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে আছে। বর্তমানে মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতা ও আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকার কারণে খুব সহজেই সমাজের একটি অংশ মাদকদ্রব্য সেবন করছে। এটি নিয়ন্ত্রণে যুগোপযোগী আইন প্রয়োগ এবং বাস্তবায়নই পারে সমাজকে মাদকমুক্ত রাখতে। প্রয়োজনীয় আইন সংশোধন এবং বাস্তবায়নে আলাদা ট্রাইব্যুনাল, ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ নানাবিধ জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে মাদকমুক্ত সুস্থ সমাজগঠনে সর্বস্তরের সচেতন নগরবাসীকে এগিয়ে আসতে হবে। বর্ষা মওসুমে জলাবদ্ধতা ডিএনসিসির সমস্যাগুলোর অন্যতম। নাগরিক পরিষেবার আওতায় বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পানি নিষ্কাশন, টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেটসহ বিভিন্ন সেক্টর বেশ সমস্যাগ্রস্ত। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে এসব নাগরিক পরিষেবার মান ক্রমান্বয়ে নি¤œমুখী। মূলত অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও রাজউকের নকশাবহির্ভূত ইমারত নির্মাণ ও অপ্রতুল ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার কারণেই নগরীর জলাবদ্ধতা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য অপরিকল্পিত ও নকশাবহির্ভূত ইমারত নির্মাণ বন্ধ, নগরায়ণে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
উন্নত বিশ্বে রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরের জনসংখ্যা সহনীয় মাত্রায় রাখার জন্য শহর বা শহরের আশপাশে বড় ধরনের শিল্পকারখানা স্থাপনের অনুমোদন দেয়া হয় না। রাজধানী শহর হয়ে অপর কোনো পার্শ্ববর্তী বা দূরবর্তী শহরে যেতে হলে শহরের ভেতর দিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে বাইপাস ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ডিএনসিসির অন্যতম সমস্যা হলো যানজট। শহরের মধ্যে চলাচলকারী যানবাহনের গতি যাতে শ্লথ না হয়, সে বিষয়টি মাথায় রেখে ইউটার্নের পরিবর্তে ইউলুপ, ওভারপাস ও আন্ডারপাসের ব্যবস্থা করা হয়। বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শহরের কেন্দ্রস্থলের পরিবর্তে প্রান্তে গড়ে তোলা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়, চিকিৎসা ও কারিগরি মহাবিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন ধরনের গণপরিবহনযোগে আসা-যাওয়া করে। কিন্তু আমাদের দেশের নগরব্যবস্থায় এসবের অনুপস্থিতির কারণেই পরিকল্পিত নগর কাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি।
ডিএনসিসিকে যানজট মুক্ত করে একটি বসবাসযোগ্য ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন মহানগরী হিসেবে গড়ে তুলতে হলে এসব সমস্যার গ্রহণযোগ্য সমাধানের পথ বের করতে হবে। সম্প্রতি আমাদের রাজধানী শহরের যানজট নিরসনে একাধিক উড়াল সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। আশা করা হয়েছিল, এগুলো চালু হওয়া পরবর্তীতে শহরটির যানজট সমস্যা সহনীয় মাত্রায় নিয়ে আসবে; কিন্তু পরিকল্পনায় ত্রুটি থাকার কারণে এ উড়াল সেতুগুলো কাক্সিক্ষত প্রতিকার প্রদানে ব্যর্থ হচ্ছে। যানবাহন বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ব্যয়বহুল উড়াল সেতুর পরিবর্তে বিভিন্ন সড়কে ইউলুপ ও শহরের চতুর্মুখী মোড়গুলোতে ওভারপাস ও আন্ডারপাস নির্মাণ করা হলে তা অধিক ফলপ্রসূ হতো। দ্বিতল বা ত্রিতল বিশিষ্ট বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ করেও জানযট অনেকাংশে নিরসন করা সম্ভব। বায়ু ও শব্দ দূষণ ডিএনসিসির অন্যতম মৌলিক সমস্যা। এই সমস্যাগুলো নাগরিক জীবনের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। মূলত মানহীন ও চলাচল অনুপযোগী যানবাহনের তীব্র ধোঁয়া, পরিবেশবান্ধব জ্বালানির অভাব, নগরীর অভ্যন্তরে ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান এবং এসব প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য অপসারণে অব্যবস্থাপনা, সিটি করপোরেশনের উদাসীনতা ও সেবার নিম্নমান থেকেও বায়ুদূষণ হয়ে থাকে। তাই এই বিব্রতকর অবস্থা থেকে নগরবাসীকে রক্ষা করতে হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বায়ুদূষণ রোধে নগরীতে মানহীন যানবাহন প্রত্যাহার, পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিতকরণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তা নেয়া দরকার।
শব্দদূষণও ডিএনসিসির জন্য গুরুতর সমস্যা। আমাদের দেশে রয়েছে শব্দদূষণ নীতিমালা। ২০০৬ সালে প্রণীত এই নীতিমালা অনুযায়ী আবাসিক এলাকায় সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ শব্দসীমা হলো ৫৫ ডেসিবেল এবং রাত ৯টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৫ ডেসিবেল। এর ওপরে শব্দ সৃষ্টি করা দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু ডিএনসিসিতে এই বিধিমালা মানা হচ্ছে না। মূলত ডিএনসিসির উদাসীনতা, দায়িত্বহীনতা ও নীতিমালার যথাযথ প্রয়োগের অভাবেই ঢাকা নগরীসহ ডিএনসিসি এলাকার শব্দদূষণ রোধ করা কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। ডিএনসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খুবই নাজুক। শহরের বিভিন্ন স্থানে বর্জ্য ফেলার নির্ধারিত স্থান থাকলেও এগুলো উন্মুক্ত থাকার কারণে এবং প্রতিদিন ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত বর্জ্য জমা হওয়ায় তা নির্ধারিত স্থান ছাড়িয়ে সড়কের ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়। উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য ফেলার কারণে এর আশপাশের স্থান সব সময় দুর্গন্ধকবলিত থাকে। খোলা ট্রাকে বর্জ্য পরিবহনের সময় অতিরিক্ত বর্জ্য বোঝাইয়ের কারণে ট্রাকটি চলার সময় সড়কের ওপর বর্জ্য ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি পড়ে মানুষের চলাচলে মারাত্মক অস্বস্তির সৃষ্টি করে। আমাদের দেশে জৈব ও অজৈব বর্জ্য পৃথক করার যেমন ব্যবস্থা নেই, অনুরূপভাবে জৈব বর্জ্য দিয়ে বিদ্যুৎ ও সার উৎপাদনের পরিকল্পনা এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে গৃহীত হয়নি এবং সরকারি উদ্যোগের অভাবে কোনো বেসরকারি সংস্থাও এগিয়ে আসেনি।
নানা সমস্যায় জর্জরিত ডিএনসিসির আবাসন সমস্যাও বেশ প্রকট। নিয়ন্ত্রণহীন বাড়িভাড়াও নগর জীবনের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ডিএনসিসির ৬০ শতাংশের বেশি জনগোষ্ঠী অস্থায়ী আবাসনে বসবাস করেন। এমনকি নগরীর ৪০ শতাংশ মানুষের বসবাস অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বস্তিতে। কিছু সংখ্যক মানুষের আবার বস্তিতেও স্থান হয় না বরং তারা খোলা আকাশের নিচে রাস্তাঘাটে মানবেতর জীবন যাপন করেন। বর্ষা মওসুমে এসব ভাগ্যাহত বনি আদম বৈরী প্রাকৃতিক অবস্থার সম্মুখীন হন। আবার শীতকালে তাদেরকে তীব্র শীতের কবলে পড়তে হয়।
সরকারিভাবে অনুমোদিত বাসস্থান ও তার সরবরাহ মোট প্রয়োজনের ১ শতাংশের বেশি নয়। তাই নগরীর আবাসন সমস্যা সমাধানকে অগ্রাধিকার দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি। আর সে লক্ষ্যে শ্রমজীবী ও নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য মানসম্মত এবং স্বল্প ভাড়ার আবাসন প্রকল্প গ্রহণ করা দরকার। এমনকি একান্ত মানবিক কারণে ছিন্নমূল ও ভাসমান লোকদের পুনর্বাসন করাও খুবই জরুরি। সঙ্গত কারণেই নগর উন্নয়ন অধিদফতর ও জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা নিয়ে নগরীর আবাসন সমস্যা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। নিয়ন্ত্রণহীন বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণেও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। জীবিকার তাগিদেই মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে নগরকেন্দ্রিক। উন্নত ও সুন্দর জীবনের জন্য সবার আগে প্রয়োজন নিরাপদ স্বাস্থ্যসম্পন্ন নগর ব্যবস্থাপনা। কিন্তু ডিএনসিসির স্বাস্থ্যসেবার মান খুবই নিম্নমানের। ক্রমবর্ধমান মশার উপদ্রব নগরবাসীর অন্যতম স্বাস্থ্য সমস্যার একটি। কিন্তু জনগণের স্বাস্থ্যসেবার দিকে খেয়াল রেখে কর্তৃপক্ষকে মশকনিধনে কোন কার্যকর ভূমিকা রাখতে দেখা যায়নি। নগরপ্রশাসন বিষয়টি নিয়ে খুবই উদাসীন। তাই নগরীর মশকনিধনে মশকের উৎস সব ড্রেন, নালা ও মশা উৎপাদিত হয় এমন জায়গাগুলোতে নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো খুবই জরুরি।
নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ, স্বাস্থ্যবান ও সংস্কৃতিমনা জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে হলে সুস্থ ধারার ক্রীড়া ও সংস্কৃতি চর্চার কোনো বিকল্প নেই। মূলত শরীরচর্চা ও বিনোদন যুবসমাজকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী, মানসিক বিকাশ সাধন, শৃঙ্খলাবোধে উদ্বুদ্ধকরণ, চরিত্রগঠন, পরস্পরের প্রতি সম্প্রীতির মনোভাব ও ভ্রাতৃত্ববোধে উদ্বুদ্ধকরণ ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সাংস্কৃতিক বিনিময়কে জোরদার ও শক্তিশালী করে তোলে। কিন্তু ডিএনসিসির ক্রীড়া পৃষ্ঠপোষকতা একেবারে দায়সারা গোছের। নগরীর জনসংখ্যার তুলনায় খেলার মাঠও পর্যাপ্ত নয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও প্রয়োজনীয় আয়তনের খেলার মাঠ নেই। নেই ক্রীড়াবিদদের জন্য আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা ও ক্রীড়া সামগ্রীর সহজলভ্যতা। পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ক্রীড়া সংগঠক ও ভালো মানের ক্রীড়াবিদও সৃষ্টি হচ্ছে না।
বেকারত্ব দূরীকরণে বাছাইকৃত যুবকদের বাধ্যতামূলক ভাষা ও কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত করা দরকার। জীবনমুখী শিক্ষাকে উন্নত করে যুবকদের যুব-উন্নয়ন প্রশিক্ষণের আওতায় ব্যবসায় উদ্যোগ গ্রহণের সুযোগ তৈরি করা দরকার। হকার্সদের জন্য আলাদা আলাদা বহুতল বিশিষ্ট হকার্স মার্কেট নির্মাণ করা দরকার। যে দেশ যত উন্নত সে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাও ততই উন্নত। তাই দেশ ও জাতিকে নতুন শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উপযোগী করে গড়ে তুলতে হলে প্রয়োজনীয় সংখ্যক মানসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, সময়োপযোগী পাঠদানপদ্ধতি, মেধাবী ও বিত্তহীন শিক্ষার্থীদের পৃষ্ঠপোষকতা, আধুনিক শিক্ষা অবকাঠামো, সর্বাধুনিক শিক্ষা উপকরণ, ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সার্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, যোগ্য ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশে সহায়ক শিক্ষার সম্প্রসারণ, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে আসন বৃদ্ধি, মেধাবীদের বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি এবং শিক্ষার্থীদের প্রণোদনা দেয়া খুবই জরুরি। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এখনও বৈশ্বিক মানের হয়ে ওঠেনি। বিশেষ করে ডিএনসিসির শিক্ষার মান মোটেই কাক্সিক্ষত নয়। তাই বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় আমরা এখনও অনেকটায় পিছিয়ে। ডিএনসিসির যানজট, আবাসন সমস্যা, পরিবহন ব্যবস্থায় আধুনিকায়ন, সর্বাধুনিক পরিবহন উপকরণ, যানজট সহনীয় পর্যায় রাখা, নগরীর রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, পর্যাপ্ত উড়াল সেতু, আন্ডারপাস, বাইপাসের সুবিধা বৃদ্ধি, শিক্ষা সম্প্রসারণ, শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রণোদনা, বিত্তহীন শিক্ষার্থীদের নগর প্রশাসন কর্তৃক সার্বিক সহায়তা, ছিন্নমূলদের পুনর্বাসন, বায়ু ও শব্দ দূষণমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, ক্রীড়া ও আত্মবিনোদনের ক্ষেত্রে পৃষ্ঠপোষকতা, সুস্থ ধারার সংস্কৃতি চর্চা, নিরাপদ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশবান্ধব জ্বালানি নিশ্চিতকরণ, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, লোডশেডিং সমস্যা নিরসনে সৌরবিদ্যুৎ প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি। নগরবাসীর উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং চিকিৎসাসেবা বিকেন্দ্রীকরণে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে উন্নতমান ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা অত্যাবশ্যক।
উল্লিখিত সকল সমস্যা সমাধান ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি বাস উপযোগী সর্বাধুনিক সুযোগ সুবিধাসম্পন্ন মেগা সিটি গড়ে তোলার লক্ষ্যে আসুন সর্বস্তরের নগরবাসী মিলে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাই।