বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেছেন, দেশে ভয়াবহ অবস্থা চলছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক স্বীকার করেছেন যে, ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা মোহাম্মদ নাসিমের ‘কথা কম কাজ বেশি ’ মন্তব্যের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে সরকার কাজের চেয়ে কথা বলছে বেশি। ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়ায় অসংখ্য মানুষের প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে। এদের মধ্যে একজন সিভিল সার্জন, এস আই, এআইজিপির স্ত্রী সহ রাষ্ট্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিগণও রয়েছেন। তাই এই অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে দলমত নির্বিশেষে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। তিনি ডেঙ্গু দুর্গতদের কল্যাণে সম্ভব সবকিছুর করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান।
তিনি আজ রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ডেঙ্গু বিষয়ক গণসচেতনতামূলক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিমের পরিচালনায় কর্মসূচিতে জামায়াত নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম ও মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ঢাকা মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন, ডা. ফখরুদ্দীন মানিক ও মোস্তাফিজুর রহমান এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিশে শুরা সদস্য এ্যাড. ইব্রাহিম খলিল প্রমূখ। প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, ডেঙ্গু কোন জটিল রোগ নয়। এই ভাইরাসজনিত জ্বর শুধু আমাদের দেশে নয় বরং বিশ্বের বিভন্ন দেশেই সংক্রমিত হয়। প্রতিদেশী দেশ ভারতের কোলকাতায়ও সম্প্রতি এই জ্বরের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু সেদেশের সরকার ও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে উঠেনি। কিন্তু আমাদের দেশের সরকার ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাই উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল রাজনৈতিক দলের মতামত নিয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিনি দলমত, ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষ দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান।
তিনি বলেন, কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী জনগণের ওপর ভারত সরকার নির্মম ও নিষ্ঠুর নির্যাতন চালাচ্ছে। জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ি কাশ্মীরি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের প্রশ্নে গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত থাকলে ভারত সরকার দীর্ঘদিন যাবৎ সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে যে যৌক্তিক দাবি উপেক্ষা করে আসছে। তারা আজাদী পাগল জনতাকে দমনের জন্য বলপ্রয়োগের পথ বেছে নিয়েছে এবং ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা অনুযায়ি কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে নিয়ে ভারত সরকার কাশ্মীরি জনগণের সাথে ন্যায়সঙ্গত অধিকার হরণ করেছে। তিনি কাশ্মীরি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের প্রশ্নে গণভোটের দাবি মেনে নিতে ভারত সরকারের প্রতি আহবান জানান এবং কাশ্মীরি জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন ।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গতানুগতিক কোন রাজনৈতিক দল নয় বরং দেশ ও জাতির জন্য নিবেদিত একটি কল্যাণকামী রাজনৈতিক দল। জামায়াত যেকোন দুর্যোগকালীন মহুর্তে দুর্গত ও বিপদাপন্ন মানুষের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে গেছে। এই ভয়াবহ ডেঙ্গু পরিস্থিতে আমরা দুর্গত মানুষের কল্যাণ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আজকের মানববন্ধনে বিপুল উপস্থিতি প্রমাণ করে জামায়াত কোনভাবেই হীনবল ও দুর্বল হয়ে যায় নি বরং জামায়াত জাতির যেকোন প্রয়োজনে জনগণের পাশে দাঁড়াতে সক্ষম। তিনি জামায়াতকে প্রতিপক্ষ না ভেবে দেশ, জাতি ও বিপন্ন মানুষের কল্যাণে কাজে বাধা না দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।