গ্যাসের মূল্য শতকরা ৩২.৮% বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ১ জুলাই প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “গ্যাসের মূল্য শতকরা ৩২.৮% বৃদ্ধির এ অন্যায় সিদ্ধান্তের আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির এ সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অন্যায়, অযৌক্তিক, অবাস্তব ও জনস্বার্থ বিরোধী।
গত ৩০ জুন বিকেলে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গ্যাসের মূল্য ৩২.৮% বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে জানিয়েছে যে, এক চুলা ব্যবহারকারী গ্রাহকদের গ্যাসের মূল্য বাবদ ৭৫০ টাকার পরিবর্তে ১লা জুলাই থেকে ৯২৫ টাকা এবং দুই চুলা ব্যবহারকারীদের ৮শত টাকার পরিবর্তে ৯৭৫ টাকা পরিশোধ করতে হবে। প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম গড়ে ৭টাকা ৩৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯টাকা ৮০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। সিএনজি চালিত। অটোরিক্সায় ব্যবহৃত সিএনজি গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটার ৩৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের দামও বাড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে এ সরকারের আমলে গত ১০ বছরে গ্যাসের মূল্য ৭বার বাড়ল। গত ৫ বছরে গ্যাসের দাম বাড়লো ৩ বার। গ্যাস খাতে কোন লোকসান নেই। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ফলে গত দুই বছরে গ্যাস খাতে বাড়তি আয় হয়েছে ৬ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা। এতে আয় বৃদ্ধির পেয়েছে দিগুণেরও বেশী।
দেশবাসীর প্রশ্ন হলো যেহেতু গ্যাস খাতে লোকসানের পরিবর্তে আয় বেড়েছে তাহলে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হলো কার স্বার্থে? গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সকল অর্থনৈতিক খাত। শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরা গ্যাসের অতিরিক্ত খরচ পোষানোর জন্য তাদের উৎপাদিত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করতে বাধ্য হবে। গ্যাসের মুল্য বৃদ্ধির ফলে শেষ পর্যন্ত সাধারণ জনগণই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ফলে প্রতিবছর গ্রাহকদের অতিরিক্ত খরচ বাড়বে ৮ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। এতে জনগণের দুর্ভোগ বাড়বে, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির এ অন্যায় ও অনৈতিক সিদ্ধান্তের দ্বারা আবারো প্রমাণিত হলো বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকার জনগণের কল্যাণকামী নয়। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করে সরকার তাদের লুটপাটের দায় জনগণের উপর চাপাচ্ছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে শিল্পখাতের বিকাশ রুদ্ধ হবে এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প মুখ থুবড়ে পরবে।
গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির এ জনস্বার্থ বিরোধী সিদ্ধান্ত দেশের জনগণ কিছুতেই মেনে নিবে না। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরা এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেছে।
তাই জনগণের বৃহত্তর স্বার্থের কথা বিবেচনা করে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির এ অন্যায় ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”