গতকাল শুক্রবার মিসরের শহীদ প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ মুরসি স্মরণে রাজধানীসহ বিভিন্নস্থানে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে।
মিসরের মজলুম জননেতা ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম বৈধ প্রেসিডেন্ট ড. মুহাম্মাদ মুরসিকে অন্যায়ভাবে ক্ষমতাচ্যুত করে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। ৬৭ বছর বয়সী বর্ষীয়ান এই নেতা আদালতের এজলাসে ইন্তিকালে গোটা মুসলিম উম্মাহর ন্যায় বাংলাদেশের জনগণও গভীরভাবে শোকাভিভূত ও মর্মাহত। এটা কোন স্বাভাবিক মৃত্যু নয় বরং তাঁকে পরিকল্পিতভাবে শহীদ করা হয়েছে। এমনকি এই শহীদের লাশ ও ময়না তদন্তের রিপোর্ট পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। এতে স্পষ্টতই প্রমাণিত হয় যে, ড. মুরসির মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না বরং তা ছিল রহস্যজনক হত্যাকাণ্ড তাঁর মৃত্যুর এ ঘটনায় স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। ইসলামী আন্দোলনের অবিসংবাদিত এই নেতা তার উন্নত চরিত্রের মাধ্যমে নিজেকে বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের আইকন বা মডেল হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। তার শাহাদাৎ বিশ্বব্যাপী ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। দেশের বিভিন্নস্থানে মরহুমের শাহাদাত কবুলিয়তের জন্য মহান আল্লাহতায়ালার দরবারে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা এবং শহীদ মুরসির পরিবার, মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতাকর্মী ও মিশরের সাধারণ জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনাও জ্ঞাপন করেন।
মিশরের অত্যন্ত জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট ড. মুরসিকে ২০১৩ সালে জেনারেল আব্দুল ফাত্তাহ আল-সিসি অবৈধভাবে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতাচ্যূত করেন। অন্যায়ভাবে ক্ষমতাচ্যুত করার পর তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করে প্রায় ৬টি বছর অবৈধভাবে কারাগারে আটক রেখে নির্যাতন চালিয়ে শেষ পর্যন্ত তাঁকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়। ড. মুরসিকে গ্রেফতারের পর থেকে অবৈধ সামরিক জালিম সরকার মিশরের জনগণ ও মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা-কর্মীদের উপর হত্যা, জুলুম-নির্যাতনের মহোৎসব চালাচ্ছে। এছাড়া মুসলিম ব্রাদারহুডের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে কারাগারে আটক রেখে নির্যাতন করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণ, চট্টগ্রাম মহানগর, সিলেট মহানগর, বরিশাল মহানগরসহ দেশের বিভিন্নস্থানে জামায়াতের উদ্যোগে মিশরের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট শহীদ ড. মুরসি স্মরণে আলোচনা সভা ও রূহের মাগফিরাত কামনা করে অনুষ্ঠিত হয় দোয়া মাহফিলে।