বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম বলেছেন, মিশরের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে সর্বপ্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মাদ মুরসীর আদালত কক্ষে মৃত্যু রহস্যজনক। তার অকাল মৃত্যুতে বিশ্ব ইসলামী আন্দোলন একজন অন্যতম সিপাহসালারকে হারালো। তার মৃত্যুতে মুসলিম উম্মাহর যে ক্ষতি হয়েছে তা সহজেই পুরুণীয় নয়। তিনি ড. মুরসির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে একটি আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটি গঠনের আহবান জানান এবং তার শাহাদাত কবুলিয়াতের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরকারের দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন। মহানগরী সেক্রেটারি মরহুম মুরসির শোকাহত পরিবার-পরিজন, দলীয় নেতাকর্মী ও মিশরের সাধারণ জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনাও জ্ঞাপন করেন।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর মোহাম্মদ থানা পশ্চিম আয়োজিত মিশনের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসীর মৃত্যুতে শোকসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর ডা. শফিউর রহমানের সভাপতিত্বে ও থানা সেক্রেটারি আব্দুল ওয়াজেদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন। উপস্থিত ছিলেন থানা কর্মপরিষদ সদস্য ফজলুল হক, জামায়াত নেতা আবু নাঈম, আলী আহমদ মজুমদার, মশিউর রহমান ও আবুল কালাম আজাদ প্রমূখ।
ড. এম আর করিম বলেন, ড. মুরসির রহস্যজনকভাবে ইন্তেকালে গোটা মুসলিম উম্মাহ গভীরভাবে শোকাভিভুত ও মর্মাহত। মিসরের অত্যন্ত জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট ড. মুরসিকে ২০১৩ সালে সেদেশের সেনা প্রধান জে: আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি অবৈধভাবে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতাচ্যুত করেন। অন্যায়ভাবে ক্ষমতাচ্যুত করার পর তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করে প্রায় ৬টি বছর অবৈধভাবে কারাগারে আটক রেখে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। তিনি কারাগারে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা ও পরিবারের সদস্যদের সাথে যথাযথভাবে সাক্ষাতের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
তিনি বলেন, স্বৈরাচারি সিসি সরকার মিশরের জনগণ ও মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা-কর্মীদের উপর নির্মম ও নিষ্ঠুর গণহত্যা ও জুলুম-নির্যাতন এখন অব্যাহত রেখেছে। সিসি মিশর থেকে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, জনগণের ভোটাধিকার হরণ ও ন্যায়বিচার নির্বাসনে পাঠিয়ে গোটা দেশকে একটি বৃহৎ কারাগারে পরিণত করেছেন। সেখানে কোন শ্রেণির মানুষেরই জানমালের কোন নিরাপত্তা নেই। জে. সিসির সরকারের চরম জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়ে ড: মুরসি আদালতের এজলাসে রহস্যজনকভাবে ইন্তেকাল করেছেন। এ ঘটনা মিশর সরকারের জুলুম-নির্যাতনের জ্বলন্ত উদাহরণ। তাই ইসলামী আদর্শ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় তার এ আত্মত্যাগ মুসলিম উম্মাহ ও সকল মুক্তিকামী জনতা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।