বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম বলেছেন, গত ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরের মসজিদে সন্ত্রাসী হামলা ও নামাজরত মুসল্লীদের নির্মমভাবে হত্যা বিশ্ব ইতিহাসের সকল নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতাকে হার মানিয়েছে। এই নারকীয় হত্যাকান্ডে বিশ্ববিবেক হতবাক ও স্তম্ভিত। কিন্তু শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যায়নি যাবেও না বরং শহীদদের রক্ত পিচ্ছিল পথ ধরেই বিশ্বশান্তি, ইসলাম-মানবতার মুক্তি ও বিজয় নিশ্চিত-ইনশা আল্লাহ।
আজ রাজধানীতে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরের মসজিদের সন্ত্রাসবাদী হামলায় অর্ধশতাধিক মুসল্লীকে হত্যার প্রতিবাদে এক শান্তি মিছিল পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন। মিছিলটি রাজধানীর মিরপুর ১ নং থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে আনসার একাডেমির সামনে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলের অন্যান্যের উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম ও মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ডা. ফখরুদ্দীন মানিক ও মোস্তাফিজুর রহমান, মহানগরী শুরা সদস্য মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি সজীব, পশ্চিমের সভাপতি জোবায়ের ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যায় সভাপতি নাহিদ প্রমূখ।
ড. এম আর করিম বলেন, সন্ত্রাসবাদ বিশ্ব শান্তির জন্য প্রধান অন্তরায়। গোটা বিশ্বেই সন্ত্রাসবাদীরা এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এই অপশক্তি মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে পুরো বিশ্ব পরিস্থিতিকেই অশান্ত ও অস্থির করে তুলেছে। তারা এক্ষেত্রে মুসলমানদেরকেই বিশেষভাবে টার্গেট করেছে। নিউজিল্যান্ডের মসজিদের নামাজরত মুসল্লীদের ওপর হামলা তার প্রমাণ। অথচ যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য মুসলমানদের দায়ি করা হয়। যা আন্তঃধর্মীয় সহ অবস্থান, উন্নয়ন, অগ্রগতি ও বিশ্বশান্তির জন্য প্রধান অন্তরায়। তিনি সভ্যতার উৎকর্ষতা ও ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্বের সকল শান্তিপ্রিয় মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। অন্যথায় মানব সভ্যতা অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে।
তিনি বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণে মানব সভ্যতার অভাবনীয় উন্নতি ঘটলেও নানাবিধ মনুষ্যসৃষ্ট প্রতিকূলতার কারণে সভ্যতা এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বিশেষ করে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তণের কুপ্রভাব সভ্যতার জন্য মারাত্মক হুমকী এর সাথে যুক্ত হয়েছে সাথে যুক্ত হয়েছে বৈশ্বিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা। এমনকি সন্ত্রাসবাদ এখন সভ্যতার জন্য মারাত্মক হুমকী হয়ে দেখা দিয়েছে। এমতাবস্থায় বিশ্বকে শান্তির নিড়ে পরিণতি করতে হলে হিংসা ও বিদ্বেষ ভুলে আন্তঃধর্মীয় সম্পর্ক জোরদার, সন্ত্রাস ও বিভেদমুক্ত নতুন বিশ্ব গড়তে হবে। আর তা নিশ্চিত করতে পারে ইসলাম। সন্ত্রাস বা যুদ্ধ নয় বরং ভালবাসার বন্ধনেই আবদ্ধ করতে হবে পুরা বিশ্ব সম্প্রদায়কে।
তাই বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত হযরত মোহাম্মদ (সা) এর সুমহান আদর্শ, ভ্রাতৃত্ব, ভালবাসা, ন্যায়-ইনসাফ গোটা বিশ্বব্যাপী মানবতার কল্যাণে যে ঐতিহাসিক অবদান রেখেছিল তা আবার পূনরুজ্জীবিত করে এই আশান্ত পৃথিবীতে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও মানবতার মুক্তি নিশ্চিত করতে মুসলিম উম্মাহকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি হামলার ঘটনায় নিউজিল্যান্ড সরকারকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ এবং আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি-সহাবস্থান সৃষ্টি ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের আহবান জানান।