আরব বিশ্বের কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর শিখণ্ডি এবং সাম্রাজ্যবাদী চক্রের ক্রীড়নক হিসাবে প্রেসিডেন্ট নাসের যখন মিশরের মুক্তিকামী জনগণের উপর অত্যাচারের ষ্টীম রোলার চালিয়ে সন্ত্রাস ও বর্বরতায় জঘন্যতম দৃষ্টান্ত স্থাপন করছিল। তখন যে সব মর্দে-মুমিন ন্যায় ও সত্যের পক্ষে এবং বাতিলের বিরুদ্ধে আওয়াজ বুলন্দ করেন, জয়নব গাজালী তাঁদের অন্যতম। জয়নব গাজালীর নেতৃত্বে পরিচালিত প্রচণ্ড গণ-আন্দোলনের সম্মুখে প্রেসিডেন্ট নাসের বেসামাল হয়ে পড়েন। ওদিকে সোভিয়েত সরকার মিশরের এই অভূতপূর্ব আন্দোলনকে অবিলম্বে নস্যাৎ করার জন্য প্রেসিডেন্ট নাসেরের উপর চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু নাসের মিসরীয় জনগণের ধূমায়ীত আক্রোশ এবং আন্দোলনের মূল শক্তি সম্বন্ধে অবহিত ছিলেন। তাই প্রথমে তিনি ষড়যন্ত্রের ফাঁদ; পাতেন। তিনি জয়নব আল-গাজালীকে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীপদ ও ক্ষমতার অংশ গ্রহণের প্রস্তাব করেন। কিন্তু জয়নব আল-গাজালী এসব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে জনগণের দাবী মোতাবেক দেশে অবিলম্বে ইসলামী সমাজ-ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবী জানান।
নাসের যখন কোন ক্রমেই ইসলামী বিপ্লবের এই মহান নেত্রীকে ষড়যন্ত্রের ফাঁদে আনতে ব্যর্থ হন তখন তাঁকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্ত কার্যকরী করার জন্য সড়ক দুর্ঘটনায় নাটকীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়। কিন্তু আল্লাহ্র রহমতে তিনি নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকেও রক্ষা পান। অবশেষে উপায়ান্তর না দেখে প্রেসিডেন্ট নাসের সভানেত্রী জয়নব গাজালীকে লৌহকারার অন্তরালে নিক্ষেপ করে স্বস্তির নিশ্বাস নেন। সেই কারা জীবনের বিভিন্ন লোমহর্ষক ঘটনার ইতিবৃত্তই হচ্ছে তাঁর এই আত্মকথামূলক রচনা।