গত ১০ ডিসেম্বর দুপুর ২ টায় মিরপুরের নিজ বাসা থেকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১২, ১৩ ও ১৪ নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত মহিলা কাউন্সিলর মাসুদা আক্তার ও স্থানীয় নির্বাচনী কর্মী কামরুন্নাহারকে পুলিশ কর্তৃক সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আটকের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং গ্রেফতারকৃতাদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম।
এক বিবৃতিতে মহানগরী উত্তর নেতৃদ্বয় বলেন, সরকার ৫ জানুয়ারির তামাশার নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি করতেই সারাদেশেই বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের উপর দলন-পীড়ন অব্যাহত রেখেছে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা, মনোনয়ন পত্র জমা, বাছাই এবং প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বাচনী ময়দান উৎসবমূখর হওয়ার কথা। কিন্তু ফ্যাসীবাদী সরকারের অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারি আচরণের কারণেই বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কয়েক দিন আগে ঢাকা-১৫ নির্বাচনী এলাকা থেকে কোন মামলা ও পরওয়ানা ছাড়াই ৬ জন নারী নির্বাচনী কর্মীকে সম্পূর্ণ অন্যায় ও অযৌক্তিকভাবে গ্রেফতার করা হয়। নির্বাচনের দিনক্ষণ এগিয়ে আসার প্রেক্ষাপটে সারাদেশে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অভিযান জোরদার করা হয়েছে। বাদ যাচ্ছেন না প্রার্থী সহ নারী জনপ্রতিনিধিরাও। একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যেখানে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড জরুরি সেখানে সরকারের নির্দেশে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিকল্পিতভবে নির্বাচনী ময়দান অসমতল করে তুলছে। মূলত ক্ষমতাসীনরা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে আবারও ক্ষমতা জবর দখল করার গভীর চক্রান্তে লিপ্ত।
তারা বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে একতরফা করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গণগ্রেফতার ও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের নানাভাবে হয়রানী অব্যাহত রেখেছে। বিরোধী দলকে প্রচার-প্রচারণার ন্যুনতম সুযোগও দেয়া হচ্ছে না। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির সহ ২০ দলীয় জোটের শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে হালিমা নামীয়া একজন সহ ৮ মহিলা নির্বাচনী কর্মীও আছেন । সম্প্রতি ঢাকা জর্জকোর্ট চত্তর থেকে মিরপুর থানা বিএনপি’র সভাপতি আবুল হোসেন আব্দুল, সাধারণ সম্পাদক ওয়াইজ উদ্দীন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মুকুল সহ ২০ দলীয় জোটের স্থানীয় নেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ শেরেবাংলা নগর এলাকায় ধানের শীষ প্রতীকের পোষ্টার লাগানোর সময় স্থানীয় সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা ২ জনকে আটক করে মারধর করার পর পুলিশে সোপর্দ করেছে। শেওড়া পাড়ায় ২০ দলীয় জোট মনোনীত প্রার্থীর নির্বাচনী কর্মী শামসুর রহমানকে না পেয়ে পুলিশ তার বাড়ীতে তান্ডব চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। এসব বিষয়ে স্থানীয় নির্বাচনী অফিসে অভিযোগ করলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি সরকারের প্রতিহিংসা থেকে বাদ যাননি নারী জনপ্রতিনিধিও। সরকারের বিরোধী দল নিগ্রহের ধারাবাহিকতায় গত ১০ ডিসেম্বর মিরপুরের আহমদ নগরের নিজ বাসা থেকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১২, ১৩ ও ১৪ নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত মহিলা কাউন্সিলর মাসুদা আক্তার ও স্থানীয় নির্বাচনী কর্মী কামরুন্নাহারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা উভয়েই ঢাকা-১৫ আসনে ২০ দলীয় জোট মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ডা. শফিকুর রহমানের নির্বাচনী কর্মী। যা শুধু নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের জন্য প্রতিবন্ধকই নয় বরং মানবাধিকার, আইন ও সাংবিধানিক শাসনের মারাত্মক লঙ্ঘন।
তারা আরো বলেন, সরকার গণবিচ্ছিন্ন হয়ে এখন পেশি শক্তির জোরে ক্ষমতা দখলে রাখার অপচেষ্টায় লিপ্ত। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর দায়িত্ব হলেও সরকার বিরোধী দল দমনের জন্য পুলিশ বাহিনীকে জনগণের বিপক্ষে লেলিয়ে দিয়েছে। যা অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। মহানগরী নেতৃদ্বয় নির্বাচিত মহিলা কাউন্সিল মাসুদা আক্তার ও স্থানীয় নির্বাচনী কর্মী কামরুন্নাহারকে সম্পূর্ণ অন্যায় ও বেআইনীভাবে গ্রেফতারে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।