বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম বলেছেন, ৭ নভেম্বর স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার অঙ্গীকার গ্রহণের তাৎপর্যপূর্ণ দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে দেশপ্রেমি সিপাহী-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ‘নারায়ে তাকবীর আল্লাহু- আকবার’ ধ্বনিতে রাজপথ মুখরিত করে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আধিপত্যবাদ বিরোধী ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিয়েছিল। তিনি ৭ নভেম্বরের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ফ্যাসীবাদী, বাকশালী ও অগণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসাবে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের রামপুরা থানা আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। থানা নায়েবে সাইয়েদ হাসান ঈমামের সভাপতিত্বে ও থানা সেক্রেটারি ফজলে আহমদ ফজলুর পরিচালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা এস ইসলাম ও মাওলানা সিরাজুল ইসলাম প্রমূখ।
ড. এম আর করিম বলেন, অবাধ গণতন্ত্র, মানবিক মূল্যবোধ, সাম্য ও আইনের শাসনই ছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী সরকার দেশে একদলীয় বাকশালী শাসন কায়েম, বাকস্বাধীনতা হরণ এবং দেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছিল। ফলে অধিকার বঞ্চিত মানুষ সরকারের অপশাসন-দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছিল।
এমতাবস্থায় রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলেও ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। এমনই এক সংকটময় সন্ধিক্ষণে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাসী-জনতার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে একটি সফল ও সার্থক বিপ্লবের মাধ্যেম দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে আধিপত্যবাদী ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করেছিল এদেশের জনগণ। কিন্তু সে ষড়যন্ত্র আজও বন্ধ হয়নি। তাই দেশকে অশুভ ও অগণতান্ত্রিক শক্তির ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করতে হলে মহান সিপাহী-জনতার বিপ্লবের চেতনায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার অপশাসন-দুঃশসনের কারণে গণবিচ্ছিন্ন হয়ে এখন ক্ষমতা হারানোর ভয়ে প্রমাদ গুণতে শুরু করেছে। তারা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় থাকতে পারবে না বলেই জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি বাতিল করে দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধবংস করে দিয়েছে। তারা পাতানো ও ষড়যন্ত্রের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকার জন্য দলদাস লোকদের নির্বাচন কমিশনে বসিয়ে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটিকে দলীয় কার্যালয়ে পরিণত করেছে। সরকার জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্যই সংলাপে রাজী হলেও তাদের হঠকারিতার কারণেই সংলাপ ব্যর্থ হতে চলেছে। তাই সংলাপের মাধ্যমে চলমান রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের সম্ভবনা খুবই কম। এমতাবস্থায় সরকারই জনগণকে আন্দোলনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাই সংলাপ ব্যর্থ হওয়ার দায়ভার সরকারকেই বহন করতে হবে। এমতাবস্থায় এই ব্যর্থ, জুলুমবাজ ও গণবিরোধী সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হলে দুর্বার গণআন্দোলনের কোন বিকল্প নেই। তিনি সরকারকে নির্দলীয় সরকারের দাবি মানতে বাধ্য করতে দলমত, ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।