বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, মি’রাজের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা রাসুল (সা.)কে ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের একটি রূপরেখা দিয়েছিলেন। সূরা বনি ইসরাঈলের ২২ থেকে ২৮ নং আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের একটি পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা তুলে ধরেছেন। সেই মহিমান্বিত রজনীতেই তিনি আমাদের জন্য ৫ ওয়াক্ত নামাজের বিধানকে ফরজ করে করেছেন । তিনি সকলকে মি‘রাজের শিক্ষা ও নির্দেশনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তা বাস্তব জীবনে প্রতিফলন ঘটাতে সকলের প্রতি আহবান জানান।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের উত্তরা জোন আয়োজিত পবিত্র শবে মি’রাজ উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ইবনে কারীম আহমদ মিঠুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য বেলায়েত হোসাইন সুজা, ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিশে শুরা সদস্য মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, মেসবাহ উদ্দীন নাঈম, এ্যাডভোকেট ইব্রাহিম খলিল, মনিরুল হক ও শাহজাহান প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, দেশ ও জাতির সার্বিক শান্তি-সমৃদ্ধি, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে ন্যায়-ইনসাফ ভিত্তিক ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই। আমরা সেই মহান লক্ষ্যকে সামনে রেখে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু মহল বিশেষ ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে এবং ইসলামী মূল্যবোধের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত বিষোদগার করে যাচ্ছে। অতীতে কাফির-মুশরিকরা যেমন পবিত্র মিরাজের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মিথ্যাচার চালিয়েছিলো আজও ইসলাম বিরোধী শক্তি ইসলাম ও ইসলামী শক্তির বিরুদ্ধে নানামুখী অপপ্রচার ও মিথ্যাচারের পথ বেছে নিয়েছে। সে ধারাবাহিকতায় ইসলামী সংগঠন ও ইসলামী ব্যক্তিত্বদের বিরুদ্ধে চালানো হচ্ছে ইতিহাসের নির্মমতম জুলুম-নির্যাতন। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী অতীতে যারাই ইসলাম ও ইসলামী শক্তিকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করেছে সময়ের ব্যবধানে তারাই পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। তাই সকল বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করেই ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, মূলত পবিত্র মিরাজের রাতেই ইসলামকে সর্বজনীন ও বিশ্বজনীন রূপ দেয়ার জন্য রাসুল (সা.) আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ১৪ দফা দিক নির্দেশনা পেয়েছিলেন। সে জন্যই রাতটি প্রত্যেক মুসলমানের কাছে মহিমান্বিত ও বকরতপূর্ণ। রাসূল (সা.) এর সকল মুুযিযার মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুযিযা হলো পবিত্র মিরাজ। মূলত পবিত্র মি’রাজের রাতে দিকনির্দেশনাগুলো হচ্ছে প্রথমত, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। দ্বিতীয়ত, শিরকের গোনাহ ব্যতিত সকল গোনাহ মার্জনার প্রতিশ্রুতি। তৃতীয়ত, সূরা আল-বাকারার শেষাংশ। চতুর্থত, সূরা বনি ইসরাইলের ১৪ দফা নির্দেশনা। ১. একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করা, তাঁর সঙ্গে কারও শরিক না করা ২. পিতা-মাতার সঙ্গে সদাচরণ করা, ৩. আত্মীয়স্বজন, এতিম ও মুসাফিরের হক আদায় করা ৪. অপচয় না করা ৫. অভাবগ্রস্থ ও সায়েলদেরকে বঞ্চিত না করা ৬. হাত গুটিয়ে না রেখে সব সময় কিছু দান করা ৭. অন্যায়ভাবে কোনো মানুষকে হত্যা না করা। ৮. দারিদ্রের ভয়ে সন্তান হত্যা না করা ৯. ব্যভিচারের নিকটবর্তী না হওয়া ১০. এতিমের সম্পদের ধারেকাছে না যাওয়া ১১. যে বিষয়ে জ্ঞান নেই, তা অনুসন্ধান করা ১২. সঠিক ওজন নিশ্চিত করা ১৩. প্রতিশ্রুতি পালন করা ১৪. পৃথিবীতে দম্ভভরে চলাফেরা না করা। তাই দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য পবিত্র মিরাতের দিক নির্দেশনা অনুয়ারি জীবন গড়ার কোনই বিকল্প নেই।