বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম বলেছেন, সরকার নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে জেলগেট থেকে আবারও গ্রেফতার করে প্রমাণ করেছে তারা গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ্বাসী নয়। মূলত এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার মাধ্যমে ফ্যাসীবাদী সরকার দেশের আইন-আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করেছে। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী অতীতে জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে কোন স্বৈরাচারি শক্তির শেষ রক্ষা হয়নি, আরও কারো হবেও না। তিনি বর্ষীয়ান নায়েবে আমীরকে হয়রানী না কলে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান। অন্যথায় গণআন্দোলনের মাধ্যমে অধ্যাপক মুজিব সহ সকল রাজবন্দীর মুক্তি দিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে।
তিনি রাজধানীতে কেন্দ্র ঘোষিত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসাবে নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে জেলগেট থেকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ও অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত এক শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি ১নং গোলচত্তর থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে চাইনিজের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন, ঢাকা মহানগরীর মজলিশে শুরা সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, জিয়াউল হাসান, আব্দুল্লাহ জোবায়ের, সাইফুল কাদের, মঈন উদ্দিন, আশরাফুল আলম , আনোয়ারুল করিম, শফিউর রহমান, নাসির উদ্দীন ও আব্দুল মতিন খান, শিবিরের ঢাকা মহানগরীর পশ্চিম সভাপতি আব্দুল আলিম এবং সেক্রেটারি জোবায়ের প্রমূখ।
লস্কর তসলিম বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আসতে পারবে না বলেই দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধবংস করে দিয়েছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা না বাড়লেও দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। ক্ষমতাসীন দল ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বেপরোয়া লুটপাট, চাঁদাবাজী ও দুর্নীতিতে রাষ্ট্রের সকল পর্যায়েই স্থবিরতা নেমে এসেছে। এমতাবস্থায় জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহের জন্যই সরকার ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জনপ্রিয় বিরোধী দলীয় শীর্ষনেতাদের সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে জুলুম-নির্যাতন চালানো হচ্ছে। সে ধারাবাহিকতায় বর্ষীয়ান আমীরে জামায়াত মকবুল আহমাদকে গ্রেফতার করে কথিত রিমান্ডের নামে হয়রানী চালিয়ে দীর্ঘদিন কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তিনি সরকারকে বিরাজনীতিকরণের পথ পরিহার করে আমীরে জামায়াত মকবুল আহমাদ সহ আটক সকল রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় সরকারকে একদিন জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার দেশের আর্থিক সেক্টর ধ্বংস করে দিয়েছে। এ সরকারের আমলেই শেয়ারবাজার, হলমার্ক, বেসিক ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, ফারমার্স ব্যাংক, ডেসটিনি, বিসমিল্লাহ গ্রুপ সহ দেশের অর্থনৈতিক সেক্টরে সাগর চুরির ঘটনা ঘটেছে। সর্বোপরি রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে ক্ষমতাসীনরা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। অর্থনৈতিক সেক্টরে এসব বড় ধরনের কেলেঙ্কারীর পরও সরকার অপরাধীদের শাস্তির আওতায় না এনে বরং প্রকারান্তরে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে। ফলে দেশের অর্থভান্ডারে শকুনীর শ্যান দৃষ্টি পড়েছে। সঙ্গত কারণে ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। জনগণের আমানাতের টাকা উঠাতেও হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। মূলত এ সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে জনদুর্ভোগ বাড়বে বৈ কমবে না। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর কল্যাণেই এই ব্যর্থ ও জুলুমবাজ সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে। তিনি সরকার পতনের লক্ষ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।