বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, স্বাধীনতার প্রায় পাঁচ দশক অতিক্রান্ত হলেও রাজনৈতিক ব্যর্থতার কারণেই তা এখনও পুরোপুরি অর্থবহ হয়ে ওঠেনি। তাই অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হলে যুব নতুন প্রজন্মকে কান্ডারীর ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি মহান স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে আত্মনিয়োগ করতে যুব সমাজের প্রতি আহবান জানান।
তিনি আজ রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর রামপুরা থানা আয়োজিত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্ট ও সামষ্ঠিক ভোজসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মহানগরী উত্তরের মজলিশে শুরা সদস্য ডা. এফ ইউ মানিকের সভাপতিত্বে ও থানা সেক্রেটারি এফ এ ফজলুর পরিচালায় সভায় উপস্থিত ছিলেন মহানগরী মজলিশে শুরা সদস্য ও থানা নায়েবে আমীর এস এইচ ঈমাম, শ্রমিক নেতা প্রফেসর এ হালিম, জামায়াত নেতা এম এ রশিদ, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান শামীম, এ এস ফরহাদ, এস এম মনিরুজ্জামান, মাওলানা এ লতিফ, আবুল হাসনাত পাটোয়ারি, আব্দুল আজিজ ভূঁইয়া, জেড স্বাধীন, এইচ রহমান, মোবাকর হোসেন, আবুল আলা রিয়াদ, মাওলানা দলিল উদ্দিন, জালাল রহমান, মাওলানা জাকির হোসেন, নজরুল ইসলাম ও শফিকুর রহমান করিম প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ, স্বাস্থ্যবান ও সংস্কৃতিমনা জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে হলে সুস্থ্য ধারার ক্রীড়া ও সংস্কৃতি চর্চার কোন বিকল্প নেই। মূলত শরীরচর্চা ও বিনোদন যুব সমাজকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী, মানসিক বিকাশ সাধণ, শৃঙ্খলাবোধে উদ্বুদ্ধকরণ, চরিত্র গঠন, পরস্পরের প্রতি সম্প্রীতির মনোভাব, জাতীয়তা ও ভ্রাতৃত্ববোধে উদ্বুদ্ধকরণ ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সাংস্কৃতিক বিনিময়কে জোরদার ও শক্তিশালী করে তোলে। তাই একবিংশ শতাব্দীতে এসে ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সুস্থ্যধারার আত্মবিনোদন হয়ে উঠেছে মানবজীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও প্রয়োজনীয় আয়তনের খেলার মাঠ নেই। নেই ক্রীড়াবিদদের জন্য আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা ও ক্রীড়া সামগ্রীর সহজলভ্যতা। পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ক্রীড়া সংগঠক ও ভাল মানের ক্রীড়াবিদও সৃষ্টি হচ্ছে না। তাই ক্রীড়াপ্রেমী ও ক্রীড়াবিদদের জন্য প্রয়োজনীয় খেলার মাঠের ব্যবস্থা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ সম্প্রসারণ, ক্রীড়াবিদদের জন্য পৃষ্ঠপোষকতা ও ক্রীড়া সামগ্রীর সহজলভ্যতা নিশ্চিত করার কোন বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, যে দেশ যত উন্নত দেশের শিক্ষাব্যবস্থাও ততই উন্নত। তাই দেশ ও জাতিকে নতুন শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উপযোগি করে গড়ে তুলতে হলে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, সময়োপযোগি পাঠদান পদ্ধতি, মেধাবী ও বিত্তহীন শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক পৃষ্ঠপোষকতা, আধুনিক শিক্ষা অবকাঠামো, সর্বাধুনিক শিক্ষা উপকরণ, ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সার্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নিরবিচ্ছিন্ন শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, যোগ্য ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশে সহায়ক শিক্ষার সম্প্রসারণ, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে আসন বৃদ্ধি, মেধাবীদের বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি এবং শিক্ষার্থীদের প্রণোদনা দেয়া খুবই জরুরি। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এখনও বৈশ্বিক মানের হয়ে ওঠেনি। তাই আগামী দিনের যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য শিক্ষার্থীদের বিশ্ব মানের শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি শিক্ষাক্ষেত্রে বিপ্লব সাধানের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্টদের ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানান।
ভাটারা শাইনিং ষ্পোর্টিং ক্লাব
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে শাইনিং স্পোর্টিং ক্লাবের উদ্যোগে জাতীয় পতাকা বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়। ক্লাবের চেয়ারম্যান আব্দুল কাউয়ুম মজুমদারের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জাতীয় পতাকা বিতরণ করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক আবুল বাশার খান, যুব সংগঠক হারুনুর রশীদ, আবুল কাসেম, জাহাঙ্গীর আলম ও আল আমীন ভূঁইয়া প্রমূখ। উল্লেখ্য, প্রধান অতিথি সকাল ৭ টায় স্থানীয় যুবকদের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দেন এবং জাতীয় পতাকার মর্যাদা রক্ষা করে মহান স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখতে নতুন প্রজন্মকে অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহবান জানান। তিনি যুব সমাজের উদ্দেশ্যে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন এবং পরে তিনি সকলকে সাথে নিয়ে এক বর্ণাঢ্য যু বর্যালীতে অংশ নেন। যা স্থানীয় জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়।
র্যালীপূর্ব বক্তব্যে মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, স্বাধীনতা ও জাতীয় পতাকা সকল মানুষের কাছে শ্রদ্ধা ও সম্মানের। নতুন প্রজন্ম যাতে দেশ দেশাত্ববোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখার জন্য অনুপ্রেরণা গ্রহণ করে সে জন্যই যুব সমাজের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দেয়া হলো। আর এ পতাকার মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব তাদেরই। কোন অপশক্তি যাতে দেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব নিয়ে ষড়যন্ত্র করতে না পারে সে জন্য নতুন প্রজন্মকে দেশ ও জাতির জন্য অতন্ত্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি দেশের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতা রক্ষায় যুব সমাজ সহ সকল শ্রেণির মানুষের ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহবান জানান।
মগবাজারে স্বাধীনতা কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট
মহান স্বাধীনতার ৪৭তম বার্ষিকী ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ন্যাশনাল ইয়ং সোসাইটি ক্লাব, রমনার উদ্যোগে আন্তঃওয়ার্ড ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণী আজ স্থানীয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। ক্লাব সভাপতি, লেখক ও প্রকাশক মু. আতাউর রহমান সরকারের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ইউসুফ আলী মোল্লার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক আব্দুল কাইয়ুম মজুমদার, অফিস সম্পাদক আবু তানজিল, অর্থ সম্পাদক আকতার হোসেন, যুব ও শ্রম বিষয়ক সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, প্রচার সম্পাদক আবু সাঈদ, নির্বাহী সদস্য শামীম হোসাইন, সাবেক ছাত্রনেতা আঃ শাহীদ ও ছাত্রনেতা নজরুল ইসলাম প্রমূখ। পরে প্রধান অতিথির বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।