বিগত প্রায় ১৬ বছরের অপশাসন-দুঃশাসনে আওয়ামী ফ্যাসীবাদীরা রাষ্ট্রের সকল অঙ্গ প্রতিষ্ঠানকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করেছে; তাই রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও গণহত্যাকারীদের বিচারের পরই দেশে কার্যকর নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা-১২ আসনের গণমানুষের নেতা সাইফুল আলম খান মিলন।
তিনি গতকাল রাত ৮টায় মগবাজারস্থ আল ফালাহ মিলনায়তনে হাতিরঝিল অঞ্চল জামায়াত আয়োজিত সদস্য (রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও জোন পরিচালক হেমায়েত হোসাইনের সভাপতিত্বে এবং সহকারি জোন পরিচালক,মহানগরীর প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক আতাউর রহমান সরকারের পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম। উপস্থিত ছিলেন তেজগাঁও দক্ষিণ আমীর ইঞ্জিনিয়ার নোমান আহমেদি, তেজগাঁও উত্তর আমীর হাফেজ আহসান উল্লাহ, হাতিরঝিল পশ্চিম আমীর ইউসুফ আলী মোল্লা, শিল্পাঞ্চল থানা আমীর কলিম উল্লাহ,শেরেবাংলা নগর দক্ষিণ থানা আমীর আবু সাঈদ মণ্ডল ও হাতিরঝিল পূর্ব সেক্রেটারি খন্দকার রুহুল আমিন প্রমূখ।
সাইফুল আলম খান মিলন বলেন, জামায়াত দেশকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য দীর্ঘ পরিসরে আন্দোলন- সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। এ মহতি কাজে আঞ্জাম দেওয়ার জন্য আমরা রাষ্ট্রের সকল সেক্টরে সৎ, যোগ্য, দক্ষ মানুষ তৈরির সর্বাত্মক কর্মসূচি পালন করেছি। এতে আমাদের সাফল্যও এসেছে। আমরা এখন রাষ্ট্র ক্ষমতা হাতে নিয়ে ন্যায়- ইনসাফের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করতে সক্ষম। কিন্তু ফ্যাসীবাদী সরকার আমাদের জনপ্রিয়তায় আতঙ্কিত হয়ে আমাদের নির্বাচনী প্রতীক ও নিবন্ধন অন্যায়ভাবে কেড়ে নিয়েছে। কথিত বিচারের নামে প্রহসন করে আমাদের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করে দেশের পবিত্র জমিনকে রক্তাক্ত ও কলঙ্কিত করেছে। আগস্ট বিপ্লবের পরও আমাদের বর্ষীয়ান নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম কারারুদ্ধ রয়েছেন। তিনি টালবাহানা না করে অবিলম্বে জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে আওয়ামী- বাকশালীদের পতন হলেও প্রশাসনে তাদের প্রতিভূরা এখনো সক্রিয় রয়েছে। এরাই ফ্যাসীবাদী আমলে মেগা প্রজেক্টের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে মেগা চুরির সুযোগ করে দিয়ে জাতীয় অর্থনীতিকে ফোকলা করে ফেলেছে। ছাত্র-জনতার উপর মারনাস্ত্র ব্যবহার করে মানবতাবিরোধী অপরাধের সহযোগি ছিল এসব আমলারাই। আওয়ামী সরকারের আমলে ভারতের সাথে অনেক দেশবিরোধী অসম চুক্তি করা হয়েছে। তাই এসব চুক্তি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. রেজাউল করিম বলেন, স্বাধীনতার ৫ দশক অতিক্রান্ত হলেও আওয়ামী-বাকশালীদের অপরাজনীতির কারণে আমাদের স্বাধীনতা পুরোপুরি কার্যকর ও অর্থবহ হয়ে ওঠেনি। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ফ্যাসীবাদীরা দেশে ব্যাপকভিত্তিক অপশাসন- দুঃশাসন চালিয়েছিলো। হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য সহ দেশকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভয়ারণ্যে পরিণত করা হয়েছিলো। খোদ শেখ মুজিব আত্মস্বীকৃতিতে বলেছিলেন, ‘মানুষ পায় সোনার খনি; আর আমি পেয়েছি চোরের খনি’। কিন্তু তার মেয়ে শেখ হাসিনা দেশকে চোরের খনির পরিবর্তে ডাকাতের খনিতে পরিণত করেছিলো। তিনি আওয়ামী ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান। অন্যথায় ফ্যাসীবাদ আবারো মাথাচাঁড়া দিতে পারে।