বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের অবসর গ্রহণের কোন সুযোগ নেই। তাদেরকে আজীবন ইসলামী আদর্শের ওপর প্রতিষ্ঠিত থেকে ন্যায় ইনসাফভিত্তিক ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যেতে হবে। এটিই হচ্ছে কালামে হাকীমে ঘোষিত উত্তম ব্যবসা। যার মধ্যেই নিহিত রয়েছে মানবতার ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি। তিনি দ্বীনের ওপর অবিচল থেকে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নিজেদের যোগ্যতর হিসেবে গড়ে তুলতে সাবেক সদস্য ও সাথীদের প্রতি আহবান জানান।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে জামায়াতের রমনা পশ্চিম থানা আয়োজিত ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সদস্য ও সাথীদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর আতাউর রহমান সরকারের সভাপতিত্বে ও থানা সেক্রেটারি ইউসুফ আলী মোল্লার পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিশে শুরা সদস্য ড. আহসান হাবিব। আরো উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা আকতার হোসেন, আবু সাঈদ, গোলাম মাওলা, ছাত্রনেতা নূর আলম সিদ্দিক ও আতিকুল হাসান প্রমূখ।
ড. এম আর করিম বলেন, ইসলামী আন্দোলনের ওপর জুলুম-নির্যাতন ইতিহাসের ধারাবাহিকতা। যুগে যারাই মানুষকে দ্বীনে হকের দাওয়াত দিয়েছেন তাদের ওপরই নির্মম ও নিষ্ঠুর জুলুম-নির্যাতন নেমে এসেছে। অবিশ্বাসী অপশক্তি নবী-রাসুলদেরকে হত্যা করতেও কুন্ঠিত হয়নি। রাসুল (সা.) সৎকর্ম ও উত্তম চরিত্র মাধুর্য্যরে জন্য তদানীন্তন আরব সমাজে আল-আমীন হিসেবে খ্যাতিলাভ করলেও মানুষের মাঝে তৌহিদের দাওয়াত দেয়ার কারণেই তার ওপর নেমে এসেছিল ইতিহাসের বর্বরতম নির্যাতন। এমনকি শীয়াবে আবি তালিবে তার সাথে তার নিকটজনদেরও দীর্ঘদিন অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। ক্ষুধা নিবারণের জন্য তারা গাছের ছাল ও বাবলা গাছে পাতা খেয়ে হয়েছিল। কিন্তু তারা কোন অবস্থানেই দ্বীনে হক বিচ্যুত হননি। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইসলামী আন্দোনের ওপর নির্মম নিধনযজ্ঞ ইতিহাসের সেই ধারাবাহিকতারই অংশ মাত্র। তাই জান ও মালের সর্বোচ্চ কোরবানীর মাধ্যমে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের ময়দানে টিকে থাকতে হবে। বিজয় আমাদের অবশ্যাম্ভাবী-ইনশা আল্লাহ।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আসতে পারবে না বলেই দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধবংস করে দিয়েছে। তারা জনগণকে সুশাসন উপহার দিতে পারেনি। ক্ষমতাসীন দল ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বেপরোয়া লুটপাট, চাঁদাবাজী ও দুর্নীতিতে রাষ্ট্রের সকল পর্যায়েই স্থবিরতা নেমে এসেছে। এমতাবস্থায় জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহের জন্যই সরকার ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ভারপ্রাপ্ত আমীরে জামায়াত ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান সহ নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এর আগে আমীরে জামায়াত মকবুল আহমাদ সহ শীর্ষনেতাদের গ্রেফতার করে কথিত রিমান্ডের নামে হয়রানী চালিয়ে দীর্ঘদিন কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তিনি বর্ষীয়ান আমীরে জামায়াত মকবুল আহমাদ সহ সকল জাতীয় নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান। অন্যথায় সরকারকে একদিন জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।